০২ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফারাক্কায় তাপবিদ্যুৎ প্রকপ্লে কারা ক্ষতিপূরণ পেয়েছে?  আদানি গোষ্ঠীর হলফনামা তলব প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের 

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 37

পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের অধিকাংশ এজলাসে একপ্রকার শুনানি হয়নি বললেই চলে। সৌজন্যে ডিএ নিয়ে আদালত কর্মীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন কর্মসূচি। তবুও প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বেশ কয়েক টি মামলার শুনানি চলে। যার মধ্যে মুর্শিদাবাদের আদানি গোষ্ঠীর তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে মামলার শুনানি হয় এদিন। মুর্শিদাবাদে আদানিদের বিদ্যুৎ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ইতিমধ্যেই মেটানো হয়েছে কি না?  তা জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট।

আদানি গোষ্ঠীরদের সে বিষয়ে রিপোর্ট আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে। মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় আদানিদের বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্পে  ক্ষতিগ্রস্ত আন্দোলনকারী কৃষকদের মধ্যে কাদের কাদের টাকা ইতিমধ্যেই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে? সেই ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করলেন কলকাতা হাইকোর্টের  প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ।

আরও পড়ুন: Closed Pak airspace বন্ধ পাক আকাশসীমা, বিপুল ক্ষতির মুখে এয়ার ইন্ডিয়া।

ডিভিশন বেঞ্চে আদানিদের আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে এই ব্যাপারে। এদিন মামলাকারীর আইনজীবী এজলাসে  জানান,  এই প্রকল্পের ফলে প্রচুর আম লিচু গাছ কাটা পড়েছে। তাতে প্রত্যেক বছর যে ফল হয় তার উপর জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে হয় ওখানকার এলাকাবাসীকে। সেখানে গাছ কেটে গাছের উপর দিয়ে হাইটেনশন তার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে।প্রতিবেশী দেশের সরকার এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে। ভারতের নাগরিকরা এর সুবিধা পাবে না।

আরও পড়ুন: নিহতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ মণিপুর সরকারের

ওই আইনজীবী আরও বলেন,  এই জায়গা বনদফতরের নয়,  যে বন সংরক্ষণ আইনের আওতায় পড়বে। ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে না পর্যাপ্ত পরিমাণে। বিদ্যুৎ দফতরের নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। এর আগে যশোর রোড সম্প্রসারণের সময় এই রকম গাছ কাটতে হয়। তাতে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: জাতীয় আইনী পরিষেবা কেন্দ্রের প্রকল্প অনুযায়ী নির্যাতিতা কে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল, বনাঞ্চলের বাইরে এই ধরনের গাছের আলাদা মুল্য রয়েছে। পরিবেশ রক্ষা করে গাছ। একইসঙ্গে মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে যুক্ত।” এরপর কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জানতে চান মামলাকারীর আইনজীবীর কাছে   কত পরিমাণ গাছ আনুমানিক কাটা হয়েছে। সে ব্যাপারে কোনও পরিসংখ্যান আছে কি না। মামলাকারীরা অবশ্য তা জানাতে পারেননি।

আদানিদের তরফে আইনজীবী জানান, “২০০৩  সালের ইন্ডিয়ান টেলিগ্রাম এক্টের ১৬৪ ধারা অনুয়ায়ীই কাজ হচ্ছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের চুক্তি অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। বেশিরভাগ মামলাকারী আগেই ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে নিয়েছে ডিমাণ্ড ড্রাফটের মাধ্যমে। তারা প্রশাসনকে আগে জানিয়েছে তারা কোনওরকম প্রতিরোধ করবে না” কেন্দ্রের আইনজীবী জানান,-‘  যারা আপত্তি করছে তাদের নাম, জমির প্লট নম্বর এগুলি মামলায় যুক্ত করা হয়নি’ । এর ফলে এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের  প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানায়, – ‘ ক্ষতিপূরণের টাকা কাদের দেওয়া হয়েছে?

আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে হলফনামা আকারে জানাতে হবে আদানি গোষ্ঠীকে।প্রসঙ্গত  বাংলা সীমান্তবর্তী ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় আদানি গ্রুপের তাপবিদ্যুত্‍ কেন্দ্র থেকে মুর্শিদাবাদের উপর দিয়ে হাইটেনশন তার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে । মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা এলাকায়  যে অঞ্চলের উপর দিয়ে যাচ্ছে এই হাইটেনশন তার সেখানে রয়েছে আম ও লিচু বাগান। তার জন্য প্রবল আপত্তি তুলেছেন কৃষকরা। এই নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে পুলিশের একাধিক বার গন্ডগোল  হয়েছে। ওই কৃষকদের দাবি মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানার বেনিয়া গ্রামের বেশিরভাগ লোক আম লিচুর চাষের উপর নির্ভরশীল। এলাকায় যেদিকে খালি জমি রয়েছে সেদিক দিয়ে হাইটেনশন তার গেলে কারও আপত্তি ছিল না। প্রশাসনে অভিযোগ জানিয়ে কাজ না হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের  দ্বারস্থ হয়েছেন কৃষকরা। এর আগে দ্রুত শুনানি চেয়ে মামলা দাখিল করা হয়েছিল,তাতে আদালত সায় দেয়নি।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ফারাক্কায় তাপবিদ্যুৎ প্রকপ্লে কারা ক্ষতিপূরণ পেয়েছে?  আদানি গোষ্ঠীর হলফনামা তলব প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের 

আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার

পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের অধিকাংশ এজলাসে একপ্রকার শুনানি হয়নি বললেই চলে। সৌজন্যে ডিএ নিয়ে আদালত কর্মীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন কর্মসূচি। তবুও প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বেশ কয়েক টি মামলার শুনানি চলে। যার মধ্যে মুর্শিদাবাদের আদানি গোষ্ঠীর তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে মামলার শুনানি হয় এদিন। মুর্শিদাবাদে আদানিদের বিদ্যুৎ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ইতিমধ্যেই মেটানো হয়েছে কি না?  তা জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট।

আদানি গোষ্ঠীরদের সে বিষয়ে রিপোর্ট আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে। মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় আদানিদের বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্পে  ক্ষতিগ্রস্ত আন্দোলনকারী কৃষকদের মধ্যে কাদের কাদের টাকা ইতিমধ্যেই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে? সেই ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করলেন কলকাতা হাইকোর্টের  প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ।

আরও পড়ুন: Closed Pak airspace বন্ধ পাক আকাশসীমা, বিপুল ক্ষতির মুখে এয়ার ইন্ডিয়া।

ডিভিশন বেঞ্চে আদানিদের আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে এই ব্যাপারে। এদিন মামলাকারীর আইনজীবী এজলাসে  জানান,  এই প্রকল্পের ফলে প্রচুর আম লিচু গাছ কাটা পড়েছে। তাতে প্রত্যেক বছর যে ফল হয় তার উপর জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে হয় ওখানকার এলাকাবাসীকে। সেখানে গাছ কেটে গাছের উপর দিয়ে হাইটেনশন তার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে।প্রতিবেশী দেশের সরকার এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে। ভারতের নাগরিকরা এর সুবিধা পাবে না।

আরও পড়ুন: নিহতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ মণিপুর সরকারের

ওই আইনজীবী আরও বলেন,  এই জায়গা বনদফতরের নয়,  যে বন সংরক্ষণ আইনের আওতায় পড়বে। ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে না পর্যাপ্ত পরিমাণে। বিদ্যুৎ দফতরের নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। এর আগে যশোর রোড সম্প্রসারণের সময় এই রকম গাছ কাটতে হয়। তাতে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: জাতীয় আইনী পরিষেবা কেন্দ্রের প্রকল্প অনুযায়ী নির্যাতিতা কে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল, বনাঞ্চলের বাইরে এই ধরনের গাছের আলাদা মুল্য রয়েছে। পরিবেশ রক্ষা করে গাছ। একইসঙ্গে মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে যুক্ত।” এরপর কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জানতে চান মামলাকারীর আইনজীবীর কাছে   কত পরিমাণ গাছ আনুমানিক কাটা হয়েছে। সে ব্যাপারে কোনও পরিসংখ্যান আছে কি না। মামলাকারীরা অবশ্য তা জানাতে পারেননি।

আদানিদের তরফে আইনজীবী জানান, “২০০৩  সালের ইন্ডিয়ান টেলিগ্রাম এক্টের ১৬৪ ধারা অনুয়ায়ীই কাজ হচ্ছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের চুক্তি অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। বেশিরভাগ মামলাকারী আগেই ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে নিয়েছে ডিমাণ্ড ড্রাফটের মাধ্যমে। তারা প্রশাসনকে আগে জানিয়েছে তারা কোনওরকম প্রতিরোধ করবে না” কেন্দ্রের আইনজীবী জানান,-‘  যারা আপত্তি করছে তাদের নাম, জমির প্লট নম্বর এগুলি মামলায় যুক্ত করা হয়নি’ । এর ফলে এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের  প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানায়, – ‘ ক্ষতিপূরণের টাকা কাদের দেওয়া হয়েছে?

আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে হলফনামা আকারে জানাতে হবে আদানি গোষ্ঠীকে।প্রসঙ্গত  বাংলা সীমান্তবর্তী ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় আদানি গ্রুপের তাপবিদ্যুত্‍ কেন্দ্র থেকে মুর্শিদাবাদের উপর দিয়ে হাইটেনশন তার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে । মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা এলাকায়  যে অঞ্চলের উপর দিয়ে যাচ্ছে এই হাইটেনশন তার সেখানে রয়েছে আম ও লিচু বাগান। তার জন্য প্রবল আপত্তি তুলেছেন কৃষকরা। এই নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে পুলিশের একাধিক বার গন্ডগোল  হয়েছে। ওই কৃষকদের দাবি মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানার বেনিয়া গ্রামের বেশিরভাগ লোক আম লিচুর চাষের উপর নির্ভরশীল। এলাকায় যেদিকে খালি জমি রয়েছে সেদিক দিয়ে হাইটেনশন তার গেলে কারও আপত্তি ছিল না। প্রশাসনে অভিযোগ জানিয়ে কাজ না হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের  দ্বারস্থ হয়েছেন কৃষকরা। এর আগে দ্রুত শুনানি চেয়ে মামলা দাখিল করা হয়েছিল,তাতে আদালত সায় দেয়নি।