১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশি চিহ্নিতকরণ: কেন জুনেই সারা দেশে অভিযান? প্রশ্ন কলকাতা হাই কোর্টের

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৫, বুধবার
  • / 46

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সারা ধর্ম দেশে একই সময়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া কি পূর্বপরিকল্পিত? এমনই প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। জুন মাসেই কেন একযোগে এই অভিযান শুরু হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতিরা। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের বেঞ্চ স্পষ্টভাবে কেন্দ্র সরকারকে প্রশ্ন করে, “হঠাৎ করে কেন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি শনাক্তের কাজ শুরু হল? এর পেছনে যুক্তি কী? সব রাজ্যের জন্য একই সময়ে জুন মাসই বা কেন বেছে নেওয়া হল?”

হাই কোর্ট আরও পর্যবেক্ষণ করে জানায়, “ধরা যাক, পুলিশ তল্লাশি অভিযান চালায়, তখন সেটি সমন্বিতভাবে হতে পারে এবং তার পিছনে যৌক্তিক কারণ থাকে। কিন্তু এখানে কী যুক্তি রয়েছে? পুরো প্রক্রিয়াটি কি পরিকল্পিত? এমন অভিযোগও শোনা যাচ্ছে যে, শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে অনেককে আটক করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।”

কেন্দ্রের আইনজীবী, ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল ধীরাজ ত্রিবেদী আদালতকে জানান, পহেলগাঁও হামলার ঘটনার পর সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করা হলে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। বাংলা ভাষাভাষী সকলকেই আটক করা হয়েছে, এমন নয়। তাঁর দাবি, এ পর্যন্ত ১৬৫ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে ৫ জন নিজেরাই স্বীকার করেছেন যে তাঁরা বাংলাদেশি। তাঁদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে, বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশে পুশ ব্যাক? হাই কোর্টে উঠল বড় প্রশ্ন, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে তলব রিপোর্ট

অন্যদিকে মামলার গ্রহণযোগ্যতা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ তোলেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোককুমার চক্রবর্তী। তিনি আদালতে বলেন, একই বিষয়ে দিল্লি হাই কোর্টে ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের রয়েছে এবং সেটি বিচারাধীন। একই ব্যক্তি কলকাতা হাই কোর্টেও মামলা করেছেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলায় হাই কোর্টের অন্তর্বর্তী রায়: কলেজ ভর্তি ও চাকরির নিয়োগে কোনও বাধা নেই

বিচারপতি চক্রবর্তী স্পষ্ট বলেন, “এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আদালতকে দিতে হবে, নইলে জনমনে ভুল বার্তা ছড়াতে পারে। কোনও অনভিপ্রেত পদক্ষেপ বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।”

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাংলাদেশি চিহ্নিতকরণ: কেন জুনেই সারা দেশে অভিযান? প্রশ্ন কলকাতা হাই কোর্টের

আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সারা ধর্ম দেশে একই সময়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া কি পূর্বপরিকল্পিত? এমনই প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। জুন মাসেই কেন একযোগে এই অভিযান শুরু হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতিরা। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের বেঞ্চ স্পষ্টভাবে কেন্দ্র সরকারকে প্রশ্ন করে, “হঠাৎ করে কেন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি শনাক্তের কাজ শুরু হল? এর পেছনে যুক্তি কী? সব রাজ্যের জন্য একই সময়ে জুন মাসই বা কেন বেছে নেওয়া হল?”

হাই কোর্ট আরও পর্যবেক্ষণ করে জানায়, “ধরা যাক, পুলিশ তল্লাশি অভিযান চালায়, তখন সেটি সমন্বিতভাবে হতে পারে এবং তার পিছনে যৌক্তিক কারণ থাকে। কিন্তু এখানে কী যুক্তি রয়েছে? পুরো প্রক্রিয়াটি কি পরিকল্পিত? এমন অভিযোগও শোনা যাচ্ছে যে, শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে অনেককে আটক করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।”

কেন্দ্রের আইনজীবী, ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল ধীরাজ ত্রিবেদী আদালতকে জানান, পহেলগাঁও হামলার ঘটনার পর সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করা হলে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। বাংলা ভাষাভাষী সকলকেই আটক করা হয়েছে, এমন নয়। তাঁর দাবি, এ পর্যন্ত ১৬৫ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে ৫ জন নিজেরাই স্বীকার করেছেন যে তাঁরা বাংলাদেশি। তাঁদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে, বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশে পুশ ব্যাক? হাই কোর্টে উঠল বড় প্রশ্ন, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে তলব রিপোর্ট

অন্যদিকে মামলার গ্রহণযোগ্যতা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ তোলেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোককুমার চক্রবর্তী। তিনি আদালতে বলেন, একই বিষয়ে দিল্লি হাই কোর্টে ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের রয়েছে এবং সেটি বিচারাধীন। একই ব্যক্তি কলকাতা হাই কোর্টেও মামলা করেছেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলায় হাই কোর্টের অন্তর্বর্তী রায়: কলেজ ভর্তি ও চাকরির নিয়োগে কোনও বাধা নেই

বিচারপতি চক্রবর্তী স্পষ্ট বলেন, “এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আদালতকে দিতে হবে, নইলে জনমনে ভুল বার্তা ছড়াতে পারে। কোনও অনভিপ্রেত পদক্ষেপ বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।”