১৯ জুলাই ২০২৫, শনিবার, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক বাড়ি ভাঙা নিয়ে বিতর্ক: বাংলাদেশ সরকারের ব্যাখ্যা, মমতার উদ্বেগ

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 60

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ময়মনসিংহ জেলায় কথিত সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনায় বিতর্ক ছড়িয়েছে দুই বাংলায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় প্রকাশ্য উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার আর্জি জানিয়েছেন।

 

বাড়ি ভাঙা নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে, তখন বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক বিষয়টি নিয়ে একটি সুদীর্ঘ ও বিস্তারিত বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে স্পষ্ট জানানো হয়, যে বাড়িটি ভাঙা হয়েছে, তার সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের কোনও সংযোগ নেই। বাংলাদেশ সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি সরকারি মালিকানাধীন একটি ভবন, যার ইতিহাস অন্যরকম।

আরও পড়ুন: আজ বঙ্গ সফরে প্রধানমন্ত্রী

 

আরও পড়ুন: ২৬-এর ভোটের আগে বাঙালি আবেগে জোর, বিজেপিকে তীব্র আক্রমণে মমতা-অভিষেক এক মঞ্চে

বিবৃতিতে জানানো হয়, স্থানীয় জমিদার শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী উক্ত বাড়িটি তৈরি করেছিলেন। তাঁর জমিদারির প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার জন্য এই বাড়িটি নির্মিত হয়েছিল। শশীকান্তের মূল বাংলো বাড়ি ছিল পাশেই — ‘শশী লজ’ নামে পরিচিত। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর সম্পত্তিটি সরকারের হাতে আসে। পরবর্তী সময়ে বাড়িটি বাংলাদেশের ‘শিশু অ্যাকাডেমি’-কে লিজে দেওয়া হয় এবং বহু বছর ধরে এটি শিশু অ্যাকাডেমির জেলা কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

আরও পড়ুন: ডিভিসির জল ছাড়ায় প্লাবিত বাংলা, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর

 

বাংলাদেশ সরকারের বিবৃতিতে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য না-ছড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রবীণ নাগরিক ও ইতিহাসবিদদের বক্তব্য ও সরকারি নথিপত্র পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এই ভবনের সঙ্গে রায় পরিবারের প্রত্যক্ষ কোনও সম্পর্ক নেই।

 

তবে একটি ঐতিহাসিক ক্ষীণ সংযোগের কথা স্বীকার করেছে বাংলাদেশ সরকার। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সত্যজিৎ রায়ের প্রপিতামহ হরিকিশোর রায় ময়মনসিংহেরই বাসিন্দা ছিলেন। তিনি পরবর্তীকালে সত্যজিতের পিতামহ এবং খ্যাতনামা লেখক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীকে দত্তক নেন। হরিকিশোরের নামে ওই এলাকার এক রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে — ‘হরিকিশোর রায় রোড’। রাস্তাটির ধারে রায় পরিবারের একসময় একটি বাড়ি ছিল, যা বহু বছর আগেই বিক্রি হয়ে যায় এবং বর্তমানে সেখানে একটি বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে।

 

এইভাবে, সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক ভিটে ভাঙার বিতর্কে বাংলাদেশ সরকার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সরকারের তরফে অতীতের তথ্য তুলে ধরে পরিস্থিতি পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হয়েছে, যদিও পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি এখনও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়ে গেছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক বাড়ি ভাঙা নিয়ে বিতর্ক: বাংলাদেশ সরকারের ব্যাখ্যা, মমতার উদ্বেগ

আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ময়মনসিংহ জেলায় কথিত সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনায় বিতর্ক ছড়িয়েছে দুই বাংলায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় প্রকাশ্য উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার আর্জি জানিয়েছেন।

 

বাড়ি ভাঙা নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে, তখন বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক বিষয়টি নিয়ে একটি সুদীর্ঘ ও বিস্তারিত বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে স্পষ্ট জানানো হয়, যে বাড়িটি ভাঙা হয়েছে, তার সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের কোনও সংযোগ নেই। বাংলাদেশ সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি সরকারি মালিকানাধীন একটি ভবন, যার ইতিহাস অন্যরকম।

আরও পড়ুন: আজ বঙ্গ সফরে প্রধানমন্ত্রী

 

আরও পড়ুন: ২৬-এর ভোটের আগে বাঙালি আবেগে জোর, বিজেপিকে তীব্র আক্রমণে মমতা-অভিষেক এক মঞ্চে

বিবৃতিতে জানানো হয়, স্থানীয় জমিদার শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী উক্ত বাড়িটি তৈরি করেছিলেন। তাঁর জমিদারির প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার জন্য এই বাড়িটি নির্মিত হয়েছিল। শশীকান্তের মূল বাংলো বাড়ি ছিল পাশেই — ‘শশী লজ’ নামে পরিচিত। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর সম্পত্তিটি সরকারের হাতে আসে। পরবর্তী সময়ে বাড়িটি বাংলাদেশের ‘শিশু অ্যাকাডেমি’-কে লিজে দেওয়া হয় এবং বহু বছর ধরে এটি শিশু অ্যাকাডেমির জেলা কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

আরও পড়ুন: ডিভিসির জল ছাড়ায় প্লাবিত বাংলা, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর

 

বাংলাদেশ সরকারের বিবৃতিতে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য না-ছড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রবীণ নাগরিক ও ইতিহাসবিদদের বক্তব্য ও সরকারি নথিপত্র পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এই ভবনের সঙ্গে রায় পরিবারের প্রত্যক্ষ কোনও সম্পর্ক নেই।

 

তবে একটি ঐতিহাসিক ক্ষীণ সংযোগের কথা স্বীকার করেছে বাংলাদেশ সরকার। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সত্যজিৎ রায়ের প্রপিতামহ হরিকিশোর রায় ময়মনসিংহেরই বাসিন্দা ছিলেন। তিনি পরবর্তীকালে সত্যজিতের পিতামহ এবং খ্যাতনামা লেখক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীকে দত্তক নেন। হরিকিশোরের নামে ওই এলাকার এক রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে — ‘হরিকিশোর রায় রোড’। রাস্তাটির ধারে রায় পরিবারের একসময় একটি বাড়ি ছিল, যা বহু বছর আগেই বিক্রি হয়ে যায় এবং বর্তমানে সেখানে একটি বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে।

 

এইভাবে, সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক ভিটে ভাঙার বিতর্কে বাংলাদেশ সরকার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সরকারের তরফে অতীতের তথ্য তুলে ধরে পরিস্থিতি পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হয়েছে, যদিও পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি এখনও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়ে গেছে।