০২ জুন ২০২৫, সোমবার, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রেড রোডে হবে না ঈদের নামায, অনুমতি দিল না সেনাবাহিনী

সুস্মিতা
  • আপডেট : ১ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 148

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গত বছরও চেষ্টা হয়েছিল কলকাতার রেড রোডে দুই ঈদের যে জমায়েত হয় তা যেন বন্ধ হয়ে যায়। মামলাটি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়ে ছিল। কিন্তু বিচারপতি বলেন, বহু বছর থেকে রেড রোডে দুই ঈদের নামায হয়ে আসছে। এই নামায নিয়ে কখনও কোনও বিতর্ক বা অশান্তি হয়নি। কাজেই রেড রোডে নামায বন্ধ করার আবেদন কোনও মতেই গ্রহণযোগ্য নয়।

কিন্তু এ বছর কলকাতা খিলাফত কমিটিকে এক চিঠি দিয়ে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং কর্নেল ভূমি নামে সেনাবাহিনীর এক অফিসার জানিয়েছেন, এ বছর রেড রোডে নামায পড়ার জন্য যে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল তার অনুমোদন দেওয়া হবে না। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে যে, ওই এলাকাটি এই সময় সামরিক উদ্দেশে প্রয়োজন হবে। চিঠির বিষয়বস্তুতে লেখা আছে ঈদ-উদ-জোহা উপলক্ষে (৭/৮ জুন, ২০২৫) নেতাজির মূর্তি থেকে ফোর্ট উইলিয়ামের পূর্ব গেট পর্যন্ত এক জামাতবদ্ধ নামায পড়ার অনুমতি সম্পর্কিত আবেদন।

আরও পড়ুন: রেড রোডেই হবে ঈদের জামাত, জানাল খিলাফত কমিটি

এ সম্পর্কে পুবের কলম টেলিফোনে যোগাযোগ করে কলকাতা খিলাফত কমিটির প্রেসিডেন্ট জনাব জাভেদ আহমেদ খানের সঙ্গে। কারণ, বেশকিছু বছর ধরে কলকাতা খিলাফত কমিটি রেড রোড ও ময়দানে দুই ঈদের নামাযের বন্দোবস্ত করে থাকে। জনাব জাভেদ আহমেদ সাহেব বলেন, আমরা সেনাবাহিনীর তরফ থেকে ওই চিঠি পেয়েছি। আজ রবিবার এই বিষয়টি নিয়ে খিলাফত কমিটির সদস্যরা তাদের ৮ নম্বর জাকারিয়া স্ট্রিটে যে অফিস রয়েছে তাতে এক বৈঠকে বসবেন এবং সেখানেই রেড রোডে নামায পড়ার অনুমতি না দিয়ে সেনাবাহিনী যে চিঠি দিয়েছে সেই সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আর বৈঠকের পর পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: ঈদ-উল আযহা-র নামায আদায় হাতিয়ারার জামে মসজিদে

উল্লেখ্য, খিলাফত কমিটি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে এক বড় ভূমিকা পালন করেছিল। মহাত্মা গান্ধি, মাওলানা মুহাম্মদ আলি ও মাওলানা শওকত আলির সঙ্গে এই খিলাফত আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। এই আন্দোলন ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে অন্যতম ইতিহাস রচনা করেছিল। পরবর্তীতে খিলাফত আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: ঈদ-উল-আজহায় পারস্পরিক সৌহার্দ্য বিনিময়

দীর্ঘদিন ধরে কলকাতা খিলাফত কমিটি রেড রোডে ঈদের নামাযের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে নিজেদের নাম ও অস্তিত্ব বজায় রেখেছে। মূলত চিৎপুরের জাকারিয়া স্ট্রিটের কিছু ব্যবসায়ী এবং সামাজিক কর্মকর্তা এই খিলাফত কমিটির সদস্য।

জনাব জাভেদ আহমেদ খানকে প্রশ্ন করা হয় রেড রোডে ঈদের নামায বন্ধের এই নির্দেশনা মিল্লাতের জন্য একটি বড় ঘটনা। খিলাফত কমিটির নির্দিষ্ট কয়েকজন সদস্য ছাড়া আর কলকাতা বা বাংলার কোনও বিশিষ্ট মুসলিমদের এই সমস্যা নিয়ে আলোচনায় শরিক করা হবে? জাভেদ খান সাহেব বলেন, অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। শুধুমাত্র খিলাফত কমিটির সদস্যরাই থাকবেন।

রেড রোডে সারা বাংলা থেকে মুসল্লিরা ঈদের নামাযে সামিল হন। তাঁরা এখন তাকিয়ে থাকবেন কলকাতা খিলাফত কমিটি রেড রোডে ঐতিহাশালী ঈদের জামাত নিয়ে কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রেড রোডে হবে না ঈদের নামায, অনুমতি দিল না সেনাবাহিনী

আপডেট : ১ জুন ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গত বছরও চেষ্টা হয়েছিল কলকাতার রেড রোডে দুই ঈদের যে জমায়েত হয় তা যেন বন্ধ হয়ে যায়। মামলাটি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়ে ছিল। কিন্তু বিচারপতি বলেন, বহু বছর থেকে রেড রোডে দুই ঈদের নামায হয়ে আসছে। এই নামায নিয়ে কখনও কোনও বিতর্ক বা অশান্তি হয়নি। কাজেই রেড রোডে নামায বন্ধ করার আবেদন কোনও মতেই গ্রহণযোগ্য নয়।

কিন্তু এ বছর কলকাতা খিলাফত কমিটিকে এক চিঠি দিয়ে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং কর্নেল ভূমি নামে সেনাবাহিনীর এক অফিসার জানিয়েছেন, এ বছর রেড রোডে নামায পড়ার জন্য যে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল তার অনুমোদন দেওয়া হবে না। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে যে, ওই এলাকাটি এই সময় সামরিক উদ্দেশে প্রয়োজন হবে। চিঠির বিষয়বস্তুতে লেখা আছে ঈদ-উদ-জোহা উপলক্ষে (৭/৮ জুন, ২০২৫) নেতাজির মূর্তি থেকে ফোর্ট উইলিয়ামের পূর্ব গেট পর্যন্ত এক জামাতবদ্ধ নামায পড়ার অনুমতি সম্পর্কিত আবেদন।

আরও পড়ুন: রেড রোডেই হবে ঈদের জামাত, জানাল খিলাফত কমিটি

এ সম্পর্কে পুবের কলম টেলিফোনে যোগাযোগ করে কলকাতা খিলাফত কমিটির প্রেসিডেন্ট জনাব জাভেদ আহমেদ খানের সঙ্গে। কারণ, বেশকিছু বছর ধরে কলকাতা খিলাফত কমিটি রেড রোড ও ময়দানে দুই ঈদের নামাযের বন্দোবস্ত করে থাকে। জনাব জাভেদ আহমেদ সাহেব বলেন, আমরা সেনাবাহিনীর তরফ থেকে ওই চিঠি পেয়েছি। আজ রবিবার এই বিষয়টি নিয়ে খিলাফত কমিটির সদস্যরা তাদের ৮ নম্বর জাকারিয়া স্ট্রিটে যে অফিস রয়েছে তাতে এক বৈঠকে বসবেন এবং সেখানেই রেড রোডে নামায পড়ার অনুমতি না দিয়ে সেনাবাহিনী যে চিঠি দিয়েছে সেই সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আর বৈঠকের পর পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: ঈদ-উল আযহা-র নামায আদায় হাতিয়ারার জামে মসজিদে

উল্লেখ্য, খিলাফত কমিটি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে এক বড় ভূমিকা পালন করেছিল। মহাত্মা গান্ধি, মাওলানা মুহাম্মদ আলি ও মাওলানা শওকত আলির সঙ্গে এই খিলাফত আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। এই আন্দোলন ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে অন্যতম ইতিহাস রচনা করেছিল। পরবর্তীতে খিলাফত আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: ঈদ-উল-আজহায় পারস্পরিক সৌহার্দ্য বিনিময়

দীর্ঘদিন ধরে কলকাতা খিলাফত কমিটি রেড রোডে ঈদের নামাযের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে নিজেদের নাম ও অস্তিত্ব বজায় রেখেছে। মূলত চিৎপুরের জাকারিয়া স্ট্রিটের কিছু ব্যবসায়ী এবং সামাজিক কর্মকর্তা এই খিলাফত কমিটির সদস্য।

জনাব জাভেদ আহমেদ খানকে প্রশ্ন করা হয় রেড রোডে ঈদের নামায বন্ধের এই নির্দেশনা মিল্লাতের জন্য একটি বড় ঘটনা। খিলাফত কমিটির নির্দিষ্ট কয়েকজন সদস্য ছাড়া আর কলকাতা বা বাংলার কোনও বিশিষ্ট মুসলিমদের এই সমস্যা নিয়ে আলোচনায় শরিক করা হবে? জাভেদ খান সাহেব বলেন, অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। শুধুমাত্র খিলাফত কমিটির সদস্যরাই থাকবেন।

রেড রোডে সারা বাংলা থেকে মুসল্লিরা ঈদের নামাযে সামিল হন। তাঁরা এখন তাকিয়ে থাকবেন কলকাতা খিলাফত কমিটি রেড রোডে ঐতিহাশালী ঈদের জামাত নিয়ে কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।