০৩ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজ‍্যে মহিলাদের মধ‍্যে প্রথম, বিনা গৃহশিক্ষকে স্কুল নির্ভর সাফল‍্য পুষ্পিতার

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার
  • / 36

পুষ্পিতাকে মিস্টি খাওয়াচ্ছেন মা তনুশ্রী ঘোষ।

দেবশ্রী মজুমদার, ইলামবাজার: অনেক র‍্যাঙ্কারকে সাবলীলভাবে বলতে শোনা যায়, গৃহশিক্ষক ছিল বেশ কয়েকজন।কিন্তু নিম্ন মধ‍্যবিত্ত পরিবার থেকে লড়াই করে ওঠা পুষ্পিতার ছিল না একজন গৃহ শিক্ষক। তবে তার এই সাফল্যের পিছনে ছিল বাবা মা এবং স্কুলের শিক্ষকেরা।

গ্রাম বাংলার প্রত‍্যন্ত এলাকায় অভাবী ও মেধা সম্পন্নদের জন‍্য ইলামবাজারে গড়ে ওঠা ইংরেজি মাধ‍্যম স্কুল নিউ ইন্ট্রিগেটেড গভর্নমেন্ট স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয় সে। বাবা সত‍্যনারায়ণ বাসুরি একজন গৃহশিক্ষক এবং মা তনুশ্রী ঘোষ একজন পাশের দারন্দা উচ্চ বিদ‍্যালয়ের পার্শ্ব শিক্ষিকা। দুই হাজার সতেরো সালে পথ চলা শুরু এই ইংরেজি মাধ‍্যম স্কুলের। এই বছর ছিল তার প্রথম মাধ‍্যমিক ব‍্যাচ। আর প্রথম বছরে চূড়ান্ত সাফল‍্য এনে দিয়েছে পুষ্পিতা বাসুরি।

রাজ‍্যে মহিলাদের মধ‍্যে প্রথম, বিনা গৃহশিক্ষকে স্কুল নির্ভর সাফল‍্য পুষ্পিতার

স্কুলটি প্রি প্রাইমারি থেকে উচ্চমাধ‍্যমিক পর্যন্ত। এবছর থেকেই ইংরেজি মাধ‍্যমে উচ্চ মাধ‍্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে চলেছে। ইংরেজি মাধ‍্যমের সব বই না পেয়েও বাংলা বই থেকে ইংরেজিতে উত্তর লিখে শিক্ষকদের কাছে সংশোধন করে নিত পুষ্পিতা। এব‍্যাপারে তাকে স্কুলের শিক্ষক থেকে মায়ের স্কুলের শিক্ষকরাও সাহায্য করেছেন।

বাড়িতে বিজ্ঞান দেখতেন বাবা এবং মা দেখতেন বাংলা। নিয়মিত দশ ঘন্টা পড়তো সে। নবম শ্রেনি থেকে কিছুটা অভাব এবং পড়ার চাপের কারণে গান ছেড়ে দেয় মেয়ে বলে জানান পুষ্পিতার বাবা সত‍্যনারায়ণ বাবু। ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে চায় সে। পুষ্পিতার প্রাপ্ত নম্বর যথাক্রমে 97, ইংরেজি 99, গণিত 98, প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে 99, জীবন বিজ্ঞানে 100, ইতিহাসে 98, ভূগোলে 100। সর্বমোট 691।

প্রধান শিক্ষক দীপ গোপাল মুখোপাধ‍্যায় বলেন, পুষ্পিতা নিজ চেষ্টা এবং স্কুলের শিক্ষকদের সহায়তায় এত ভালো ফল করেছে। স্কুল থেকে আলাদা কোচিংয়ের ব‍্যবস্থা করা হয়েছিল।একুশ সালে অস্টম শ্রেণিতে পাঠরত অবস্থায় ন‍্যাশ‍্যানাল মেরিট কাম মিনস পরীক্ষায় প্রথম হয় সে।

দীপ গোপাল মুখোপাধ‍্যায় বলেন, খুবই ভালো লাগছে এই ভেবে যে একটা প্রত‍্যন্ত এলাকায় আমার মুখ‍্যমন্ত্রী একটি ইংরেজি মাধ‍্যম স্কুল করার পরিকল্পনা করেছিলেন, তা সফল হলো। রাজ‍্যে মহিলাদের মধ‍্যে এবং জেলার প্রথম হলো মুখ‍্যমন্ত্রীর ড্রিম প্রজেক্ট স্কুলের প্রথম ব‍্যাচের ছাত্রী। প্রত‍্যন্ত এলাকায় ইংরেজি মাধ‍্যমের সরকারি বিদ‍্যালয়ে সুবিধা পাচ্ছেন পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলো। এই বছর বীরভূম জেলায় এই প্রথম কোনো ইংরেজি মাধ‍্যমে একাদশ দ্বাদশে বিজ্ঞান বিভাগ শুরু হয়েছে।

অনেকের ইচ্ছে থাকলেও অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে পড়তে পারে না। কিন্তু সরকারি ইংরেজি মাধ‍্যম অবৈতনিক হওয়াই অনেকেই সেই সুযোগ নিতে পারবে। অত‍্যাধুনিক সায়েন্স ল‍্যাব আছে। এবার বোলপুর থেকে ইলামবাজার অবধি স্কুল বাসের ব‍্যবস্থা হবে।
উল্লেখ্য, পুষ্পিতা বাসুরি রাজ্যে তৃতীয় এবং মহিলাদের মধ‍্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাজ‍্যে মহিলাদের মধ‍্যে প্রথম, বিনা গৃহশিক্ষকে স্কুল নির্ভর সাফল‍্য পুষ্পিতার

আপডেট : ২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার

দেবশ্রী মজুমদার, ইলামবাজার: অনেক র‍্যাঙ্কারকে সাবলীলভাবে বলতে শোনা যায়, গৃহশিক্ষক ছিল বেশ কয়েকজন।কিন্তু নিম্ন মধ‍্যবিত্ত পরিবার থেকে লড়াই করে ওঠা পুষ্পিতার ছিল না একজন গৃহ শিক্ষক। তবে তার এই সাফল্যের পিছনে ছিল বাবা মা এবং স্কুলের শিক্ষকেরা।

গ্রাম বাংলার প্রত‍্যন্ত এলাকায় অভাবী ও মেধা সম্পন্নদের জন‍্য ইলামবাজারে গড়ে ওঠা ইংরেজি মাধ‍্যম স্কুল নিউ ইন্ট্রিগেটেড গভর্নমেন্ট স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয় সে। বাবা সত‍্যনারায়ণ বাসুরি একজন গৃহশিক্ষক এবং মা তনুশ্রী ঘোষ একজন পাশের দারন্দা উচ্চ বিদ‍্যালয়ের পার্শ্ব শিক্ষিকা। দুই হাজার সতেরো সালে পথ চলা শুরু এই ইংরেজি মাধ‍্যম স্কুলের। এই বছর ছিল তার প্রথম মাধ‍্যমিক ব‍্যাচ। আর প্রথম বছরে চূড়ান্ত সাফল‍্য এনে দিয়েছে পুষ্পিতা বাসুরি।

রাজ‍্যে মহিলাদের মধ‍্যে প্রথম, বিনা গৃহশিক্ষকে স্কুল নির্ভর সাফল‍্য পুষ্পিতার

স্কুলটি প্রি প্রাইমারি থেকে উচ্চমাধ‍্যমিক পর্যন্ত। এবছর থেকেই ইংরেজি মাধ‍্যমে উচ্চ মাধ‍্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে চলেছে। ইংরেজি মাধ‍্যমের সব বই না পেয়েও বাংলা বই থেকে ইংরেজিতে উত্তর লিখে শিক্ষকদের কাছে সংশোধন করে নিত পুষ্পিতা। এব‍্যাপারে তাকে স্কুলের শিক্ষক থেকে মায়ের স্কুলের শিক্ষকরাও সাহায্য করেছেন।

বাড়িতে বিজ্ঞান দেখতেন বাবা এবং মা দেখতেন বাংলা। নিয়মিত দশ ঘন্টা পড়তো সে। নবম শ্রেনি থেকে কিছুটা অভাব এবং পড়ার চাপের কারণে গান ছেড়ে দেয় মেয়ে বলে জানান পুষ্পিতার বাবা সত‍্যনারায়ণ বাবু। ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে চায় সে। পুষ্পিতার প্রাপ্ত নম্বর যথাক্রমে 97, ইংরেজি 99, গণিত 98, প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে 99, জীবন বিজ্ঞানে 100, ইতিহাসে 98, ভূগোলে 100। সর্বমোট 691।

প্রধান শিক্ষক দীপ গোপাল মুখোপাধ‍্যায় বলেন, পুষ্পিতা নিজ চেষ্টা এবং স্কুলের শিক্ষকদের সহায়তায় এত ভালো ফল করেছে। স্কুল থেকে আলাদা কোচিংয়ের ব‍্যবস্থা করা হয়েছিল।একুশ সালে অস্টম শ্রেণিতে পাঠরত অবস্থায় ন‍্যাশ‍্যানাল মেরিট কাম মিনস পরীক্ষায় প্রথম হয় সে।

দীপ গোপাল মুখোপাধ‍্যায় বলেন, খুবই ভালো লাগছে এই ভেবে যে একটা প্রত‍্যন্ত এলাকায় আমার মুখ‍্যমন্ত্রী একটি ইংরেজি মাধ‍্যম স্কুল করার পরিকল্পনা করেছিলেন, তা সফল হলো। রাজ‍্যে মহিলাদের মধ‍্যে এবং জেলার প্রথম হলো মুখ‍্যমন্ত্রীর ড্রিম প্রজেক্ট স্কুলের প্রথম ব‍্যাচের ছাত্রী। প্রত‍্যন্ত এলাকায় ইংরেজি মাধ‍্যমের সরকারি বিদ‍্যালয়ে সুবিধা পাচ্ছেন পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলো। এই বছর বীরভূম জেলায় এই প্রথম কোনো ইংরেজি মাধ‍্যমে একাদশ দ্বাদশে বিজ্ঞান বিভাগ শুরু হয়েছে।

অনেকের ইচ্ছে থাকলেও অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে পড়তে পারে না। কিন্তু সরকারি ইংরেজি মাধ‍্যম অবৈতনিক হওয়াই অনেকেই সেই সুযোগ নিতে পারবে। অত‍্যাধুনিক সায়েন্স ল‍্যাব আছে। এবার বোলপুর থেকে ইলামবাজার অবধি স্কুল বাসের ব‍্যবস্থা হবে।
উল্লেখ্য, পুষ্পিতা বাসুরি রাজ্যে তৃতীয় এবং মহিলাদের মধ‍্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।