নবান্নে জায়গা পেল দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ছবি, রথযাত্রা ঘিরে রাজ্যজুড়ে উৎসবের প্রস্তুতি

- আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 61
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ছবি এবার স্থান পেতে চলেছে নবান্নের দেওয়ালে। শুধু তাই নয়, রাজ্যের সমস্ত মন্ত্রী ও বিধায়কদের দপ্তরেও টাঙানো হবে এই নতুন মন্দিরের ছবি। সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে উপহার হিসেবে দিঘার মন্দিরের একটি ছবি তুলে দেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন—রাজ্যের সমস্ত মন্ত্রী ও বিধায়ক যেন নিজেদের কার্যালয়ে এই ছবি রাখেন।
বিধানসভার অধিবেশন শেষে মুখ্যমন্ত্রী কিছুক্ষণ স্পিকারের ঘরে ছিলেন। সেখানেই তিনি দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ছবি উপহার হিসেবে গ্রহণ করেন এবং জানান, এটি নবান্নের দেওয়ালে স্থাপন করা হবে। এরপরই রাজ্যজুড়ে রথযাত্রা উদযাপন নিয়ে পরিকল্পনা শুরু হয়।
আগামী ২৭ জুন দিঘায় প্রথমবার রথযাত্রার সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। তিনি রথের দড়ি টেনে যাত্রা শুরু করবেন, তার আগে ২৬ জুন তিনি দিঘা পৌঁছে ‘সোনার ঝাঁটা’ দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে দেবতার আগমন পথকে শুভ করে তুলবেন। ইতিমধ্যেই মন্দির চত্বরে নিরাপত্তা ও ভিড় সামলাতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রশাসন।
এবছর ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই উদ্বোধন হয়েছে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের। কলিঙ্গ স্থাপত্যের ছোঁয়া পাওয়া এই মন্দির নির্মিত হয়েছে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের অনুকরণে। রাজস্থান থেকে আনা হয়েছিল প্রায় ৮০০ দক্ষ কারিগর। করোনার কারণে কিছুদিন নির্মাণ থমকে থাকলেও সম্প্রতি তা শেষ হয়েছে।
রথযাত্রা উপলক্ষে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে ইতিমধ্যেই ভক্তদের ভিড় জমতে শুরু করেছে। মন্দির থেকে ‘মাসির বাড়ি’র পথে বেরোবে প্রভু জগন্নাথের রথ। সেই রাস্তাকে ঘিরে চলছে সাজসজ্জার তোড়জোড়। প্রশাসন জানিয়েছে, সাধারণ মানুষ ব্যারিকেডের ভিতরে থাকবেন ঠিকই, কিন্তু সকলে যেন রথের দড়ি ছুঁতে পারেন—তার ব্যবস্থাও রাখা হবে।
রথযাত্রার দিন দিঘায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত থাকতে পারেন রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী, যেমন—অরূপ রায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ইন্দ্রনীল সেন, সুজিত বসু প্রমুখ। উল্টো রথের সময় আরও মন্ত্রী ও বিধায়কদের দিঘা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসংগত সোমবার, বিধানসভাতেই রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সমস্ত বিধায়ককে নির্দেশ দিয়েছেন, ২৭ জুন নিজ নিজ বিধানসভা এলাকায় রথযাত্রা উদযাপন করতে হবে এবং উপস্থিত থাকতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “রথযাত্রা আমাদের ঐতিহ্য, উৎসব আর ভক্তির মিলনস্থল—সেই ভাবনা ছড়িয়ে পড়ুক গোটা বাংলায়।”
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর মুখ্যমন্ত্রী দক্ষিণ কলকাতার ইসকনের রথযাত্রার সূচনা করতেন। তবে এবার তিনি দীঘা থেকেই রথ যাত্রার অনুষ্ঠানের সূচনা করবেন। রথ এ বছর গোটা রাজ্যে উৎসবের মেজাজে পালিত হবে। হিন্দু ধর্মের অনুষ্ঠান হলেও সব ধর্মের যাতে উৎসবের মেজাজির শামিল হতে পারেন সেজন্যই প্রশাসনকে সব রকম ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে পুলিশ এবং প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন তিনি কোনভাবেই যেন কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে নজর রাখতে।