১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩০ বছরের বিভ্রান্তি কাটিয়ে কম্পিউটার সায়েন্সের নোবেলে পুরস্কৃত বাঙালি গবেষক  

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ কম্পিউটার সায়েন্সে অবদানের জন্য ‘গোডেল প্রাইজ’ পেলেন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের প্রফেসর ঈশান চট্টোপাধ্যায়। তিনি ২০২৫ সালে গোডেল প্রাইজ পেয়েছেন। যা থিওরেটিক্যাল কম্পিউটার সায়েন্সের নোবেল পুরস্কার বলেও বিবেচিত হয়। তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন এমন এক সমস্যার সমাধান করে যা গত ৩০ বছর ধরে গবেষকদের বিভ্রান্ত করে রেখেছিল।

ভারতে বেড়ে ওঠা ঈশান আইআইটি কানপুর থেকে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকের পর ডেভিড জুকারম্যানের তত্ত্বাবধানে ডক্টরেট করতে ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসে যোগ দেন। এর পর তিনি ইউসি বার্কলে, মাইক্রোসফট এবং প্রিন্সটনের ইউনিভার্সিটি ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিতেও গবেষণা করেন। ২০১৮ সালে তিনি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ২০২৪ সালে সেখানকার অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হন।

আরও পড়ুন: মানুষের শান্তি কেড়ে ‘ শান্তিতে পুরস্কার ‘ পেতে চাচ্ছেন, ট্রাম্পের নোবেল আটকাতে কমিটিকে চিঠি কেরলবাসীর

ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসে ২০১৯ জুকারম্যানের সঙ্গে তিনি যৌথভাবে গবেষণা করে  ‘এক্সপ্লিসিট টু-সোর্স এক্সট্র্যাক্টরস অ্যান্ড রেজিলিয়েন্ট ফাংশনস’ নামক গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করেন। সেই গবেষণাই জিতে নিয়েছে গোডেল প্রাইজ। এই গবেষণাপত্রে দেখানো হয়েছে, কীভাবে দু’টি নিম্নমানের এলোমেলো উৎসকে একটি শক্তিশালী, নির্ভরযোগ্য একটি উৎসে পরিণত করা যায়। যা নিরাপদ, বিশ্বাসযোগ্য কম্পিউটার সিস্টেম তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন: Badruddin Umar: ইন্তেকাল করলেন লেখক, গবেষক বদরুদ্দীন উমর (ইন্না লিল্লাহে)

ঈশান ব়্যান্ডমনেস এক্সট্র্যাকশনের একটি সমস্যা সমাধান করেছেন। কীভাবে দু’টি দুর্বল এলোমেলো উৎস ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য এলোমেলো সংখ্যা তৈরি করা যায়। ক্রিপ্টোগ্রাফি, নিরাপদ যোগাযোগ এবং ডেটা কম্প্রেশনের ক্ষেত্রে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক দশক ধরে, বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করতেন যে এটি করা অসম্ভব। তাঁর গবেষণা প্রমাণ করে দেখিয়েছে যে দুর্বল ইনপুটগুলিও শক্তিশালী ব়্যান্ডমনেস তৈরি করতে পারে। এটি একটি গেমচেঞ্জিং ধারণা যা তত্ত্ব এবং বাস্তব-বিশ্ব প্রযুক্তি উভয় ক্ষেত্রেই ভবিষ্যতের কাজকে অন্য রূপ দেবে।

আরও পড়ুন: ভিন রাজ্য নয়, এই রাজ্যেই বাঙালি বলে কারখানা থেকে বের করে দিল কর্তৃপক্ষ, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি

কর্নেল ইউনিভার্সিটির মতে, এই কাজটি মূলত ২০১৬ সালে অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্পিউটিং মেশিনারি (এসিএম) সিম্পোজিয়াম অন থিওরি অফ কম্পিউটিং (এসটিওসি)-এর কার্যবিবরণীতে প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে এটি সেরা গবেষণাপত্রের পুরষ্কার পেয়েছিল এবং পরে ২০১৯ সালে অ্যানালস অফ ম্যাথমেটিক্সে প্রকাশিত হয়েছিল।

এছাড়াও ঈশান ২০২৩ সালে স্লোয়ান রিসার্চ ফেলোশিপ, ২০২১ সালে ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন (NSF) ক্যারিয়ার পুরস্কার এবং ২০১৯ সালে NSF কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনিশিয়েশন ইনিশিয়েচিভ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।

ঈশানের এই জয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত পড়ুয়াদের জন্য গর্বের বিষয়। যা প্রমাণ করে বিশ্বে বদলে যাওয়া বিজ্ঞানে ভারতীয়দের অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

 

সর্বধিক পাঠিত

সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর ওপর আইসিসের হামলার জবাব দেওয়া হবে: ট্রাম্প

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৩০ বছরের বিভ্রান্তি কাটিয়ে কম্পিউটার সায়েন্সের নোবেলে পুরস্কৃত বাঙালি গবেষক  

আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ কম্পিউটার সায়েন্সে অবদানের জন্য ‘গোডেল প্রাইজ’ পেলেন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের প্রফেসর ঈশান চট্টোপাধ্যায়। তিনি ২০২৫ সালে গোডেল প্রাইজ পেয়েছেন। যা থিওরেটিক্যাল কম্পিউটার সায়েন্সের নোবেল পুরস্কার বলেও বিবেচিত হয়। তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন এমন এক সমস্যার সমাধান করে যা গত ৩০ বছর ধরে গবেষকদের বিভ্রান্ত করে রেখেছিল।

ভারতে বেড়ে ওঠা ঈশান আইআইটি কানপুর থেকে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকের পর ডেভিড জুকারম্যানের তত্ত্বাবধানে ডক্টরেট করতে ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসে যোগ দেন। এর পর তিনি ইউসি বার্কলে, মাইক্রোসফট এবং প্রিন্সটনের ইউনিভার্সিটি ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিতেও গবেষণা করেন। ২০১৮ সালে তিনি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ২০২৪ সালে সেখানকার অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হন।

আরও পড়ুন: মানুষের শান্তি কেড়ে ‘ শান্তিতে পুরস্কার ‘ পেতে চাচ্ছেন, ট্রাম্পের নোবেল আটকাতে কমিটিকে চিঠি কেরলবাসীর

ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসে ২০১৯ জুকারম্যানের সঙ্গে তিনি যৌথভাবে গবেষণা করে  ‘এক্সপ্লিসিট টু-সোর্স এক্সট্র্যাক্টরস অ্যান্ড রেজিলিয়েন্ট ফাংশনস’ নামক গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করেন। সেই গবেষণাই জিতে নিয়েছে গোডেল প্রাইজ। এই গবেষণাপত্রে দেখানো হয়েছে, কীভাবে দু’টি নিম্নমানের এলোমেলো উৎসকে একটি শক্তিশালী, নির্ভরযোগ্য একটি উৎসে পরিণত করা যায়। যা নিরাপদ, বিশ্বাসযোগ্য কম্পিউটার সিস্টেম তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন: Badruddin Umar: ইন্তেকাল করলেন লেখক, গবেষক বদরুদ্দীন উমর (ইন্না লিল্লাহে)

ঈশান ব়্যান্ডমনেস এক্সট্র্যাকশনের একটি সমস্যা সমাধান করেছেন। কীভাবে দু’টি দুর্বল এলোমেলো উৎস ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য এলোমেলো সংখ্যা তৈরি করা যায়। ক্রিপ্টোগ্রাফি, নিরাপদ যোগাযোগ এবং ডেটা কম্প্রেশনের ক্ষেত্রে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক দশক ধরে, বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করতেন যে এটি করা অসম্ভব। তাঁর গবেষণা প্রমাণ করে দেখিয়েছে যে দুর্বল ইনপুটগুলিও শক্তিশালী ব়্যান্ডমনেস তৈরি করতে পারে। এটি একটি গেমচেঞ্জিং ধারণা যা তত্ত্ব এবং বাস্তব-বিশ্ব প্রযুক্তি উভয় ক্ষেত্রেই ভবিষ্যতের কাজকে অন্য রূপ দেবে।

আরও পড়ুন: ভিন রাজ্য নয়, এই রাজ্যেই বাঙালি বলে কারখানা থেকে বের করে দিল কর্তৃপক্ষ, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি

কর্নেল ইউনিভার্সিটির মতে, এই কাজটি মূলত ২০১৬ সালে অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্পিউটিং মেশিনারি (এসিএম) সিম্পোজিয়াম অন থিওরি অফ কম্পিউটিং (এসটিওসি)-এর কার্যবিবরণীতে প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে এটি সেরা গবেষণাপত্রের পুরষ্কার পেয়েছিল এবং পরে ২০১৯ সালে অ্যানালস অফ ম্যাথমেটিক্সে প্রকাশিত হয়েছিল।

এছাড়াও ঈশান ২০২৩ সালে স্লোয়ান রিসার্চ ফেলোশিপ, ২০২১ সালে ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন (NSF) ক্যারিয়ার পুরস্কার এবং ২০১৯ সালে NSF কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনিশিয়েশন ইনিশিয়েচিভ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।

ঈশানের এই জয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত পড়ুয়াদের জন্য গর্বের বিষয়। যা প্রমাণ করে বিশ্বে বদলে যাওয়া বিজ্ঞানে ভারতীয়দের অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ।