২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানকে কাছে টেনে ইরানের ওপর চাপ বাড়াতে চাইছে আমেরিকা 

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার
  • / 32

 

বুধবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির। ট্রাম্পের আমন্ত্রণে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিতে গিয়েছিলেন তিনি। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এবং ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ পরিস্থিতি-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

আরও পড়ুন: ইরানের হামলার ভয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিমান ও যুদ্ধজাহাজ সরাচ্ছে আমেরিকা

স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় হোয়াইট হাউসের ক্যাবিনেট রুমে শুরু হওয়া বৈঠক চলে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে; যেখানে মূলত রুদ্ধদ্বার আলোচনাই হয়েছে। বৈঠকে ট্রাম্প উল্লেখ করেন, তিনিই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি ঠেকিয়েছেন। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানায়, এই বিষয়ে মুনিরও একমত পোষণ করেছেন এবং পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের ভিসা নীতির কারণে গ্যালারি ফাঁকা থাকছে ক্লাব বিশ্বকাপে

পাক সেনা আরও জানায়, আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় পাকিস্তানের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি বৈঠকে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্পের মন্তব্য ছিল, ‘পাকিস্তান ইরানকে খুব ভালোভাবে চেনে। তারা অনেক বিষয়েই সন্তুষ্ট নয়। যদিও ইসরাইলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ নয়, কিন্তু ইরান বিষয়ে তাদের গভীর অভিজ্ঞতা রয়েছে।’

আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ বিরতিতে আমেরিকা মধ্যস্থতা করেনি স্বীকারোক্তি ট্রাম্পের

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের কৌশলগত অবস্থান আবারও আমেরিকার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ যদি তীব্র হয়, তবে আমেরিকা পাকিস্তানে আবারও কৌশলগত উপস্থিতি স্থাপন করতে চাইতে পারে। এই নতুন উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হল ইরানকে আঞ্চলিকভাবে আরও একঘরে করা এবং তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানো। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে সফলভাবে পাশে পায়, তাহলে ইরানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অবস্থান থেকে চাপে ফেলতে পারবে তেহরানকে। তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি এখন অনেক বেশি ভারসাম্যপূর্ণ। তাই ইসলামাবাদ কত দূর আমেরিকার এই খেলায় সাড়া দেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। যদিও সূত্র বলছে, পাকিস্তান সরকার সীমান্ত বন্ধ করলেও জেনারেল মুনির ইরানের প্রতি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন;তারা তেহরানের পাশেই থাকবে।

এর আগে প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান, জিয়া উল-হক এবং পারভেজ মুশারফের মতো সেনাপ্রধানরা হোয়াইট হাউসের মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিলেও, তারা প্রত্যেকেই তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে, ফিল্ড মার্শাল মুনিরের জন্য ট্রাম্পের এই সম্মান এক ব্যতিক্রমী নজির বলেই ধরা হচ্ছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পাকিস্তানকে কাছে টেনে ইরানের ওপর চাপ বাড়াতে চাইছে আমেরিকা 

আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার

 

বুধবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির। ট্রাম্পের আমন্ত্রণে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিতে গিয়েছিলেন তিনি। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এবং ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ পরিস্থিতি-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

আরও পড়ুন: ইরানের হামলার ভয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিমান ও যুদ্ধজাহাজ সরাচ্ছে আমেরিকা

স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় হোয়াইট হাউসের ক্যাবিনেট রুমে শুরু হওয়া বৈঠক চলে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে; যেখানে মূলত রুদ্ধদ্বার আলোচনাই হয়েছে। বৈঠকে ট্রাম্প উল্লেখ করেন, তিনিই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি ঠেকিয়েছেন। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানায়, এই বিষয়ে মুনিরও একমত পোষণ করেছেন এবং পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের ভিসা নীতির কারণে গ্যালারি ফাঁকা থাকছে ক্লাব বিশ্বকাপে

পাক সেনা আরও জানায়, আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় পাকিস্তানের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি বৈঠকে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্পের মন্তব্য ছিল, ‘পাকিস্তান ইরানকে খুব ভালোভাবে চেনে। তারা অনেক বিষয়েই সন্তুষ্ট নয়। যদিও ইসরাইলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ নয়, কিন্তু ইরান বিষয়ে তাদের গভীর অভিজ্ঞতা রয়েছে।’

আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ বিরতিতে আমেরিকা মধ্যস্থতা করেনি স্বীকারোক্তি ট্রাম্পের

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের কৌশলগত অবস্থান আবারও আমেরিকার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ যদি তীব্র হয়, তবে আমেরিকা পাকিস্তানে আবারও কৌশলগত উপস্থিতি স্থাপন করতে চাইতে পারে। এই নতুন উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হল ইরানকে আঞ্চলিকভাবে আরও একঘরে করা এবং তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানো। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে সফলভাবে পাশে পায়, তাহলে ইরানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অবস্থান থেকে চাপে ফেলতে পারবে তেহরানকে। তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি এখন অনেক বেশি ভারসাম্যপূর্ণ। তাই ইসলামাবাদ কত দূর আমেরিকার এই খেলায় সাড়া দেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। যদিও সূত্র বলছে, পাকিস্তান সরকার সীমান্ত বন্ধ করলেও জেনারেল মুনির ইরানের প্রতি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন;তারা তেহরানের পাশেই থাকবে।

এর আগে প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান, জিয়া উল-হক এবং পারভেজ মুশারফের মতো সেনাপ্রধানরা হোয়াইট হাউসের মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিলেও, তারা প্রত্যেকেই তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে, ফিল্ড মার্শাল মুনিরের জন্য ট্রাম্পের এই সম্মান এক ব্যতিক্রমী নজির বলেই ধরা হচ্ছে।