বাংলাদেশি সন্দেহে ওড়িশায় ৬দিন আটকে থাকার পর বাংলায় ফিরলেন মালদার ১৯ পরিযায়ী শ্রমিক

- আপডেট : ৩ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 57
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বাংলাভাষী হওয়াটাই কাল হয়ে দাঁড়াল তাঁদের জন্য। ওড়িশার কটকে বাংলাদেশি সন্দেহে আট দিন আটক থাকার পর বৃহস্পতিবার নিজের ঘরে ফিরলেন মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের তালগাছি এলাকার ১৯ জন পরিযায়ী শ্রমিক। ওড়িশার কটক জেলার মাহঙ্গা থানার পুলিশ তাঁদের আটক করে একটি পরিত্যক্ত সরকারি ভবনে আটকে রাখে। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন বলে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ।
তবে আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিবারের আবেদন এবং রাজ্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শেষপর্যন্ত মুক্তি পেলেন তাঁরা। বিগত আট দিন ধরে জেলা প্রশাসন ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের পরিচয়পত্র, আধার কার্ড ও ভোটার আইডির প্রমাণ ওড়িশার প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়। অবশেষে সব যাচাই-বাছাইয়ের পর ওড়িশা প্রশাসন তাঁদের ছেড়ে দেয়।
বৃহ্স্পতিবার সকালে তাঁরা ট্রেনে করে কটক থেকে মালদা পৌঁছোন। সেখান থেকে গাড়ি করে বিকেলে হরিশ্চন্দ্রপুরের তালগাছি গ্রামে ফেরেন। শ্রমিকদের স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী তজমুল হোসেন, হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার এবং বিডিও তাপস পাল।
গ্রামে পৌঁছে শ্রমিকদের অনেকের চোখেই ছিল জল, মুখে ছিল আতঙ্কের ছাপ। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, “আমরা কি আবার ভিন রাজ্যে কাজে যেতে পারব? বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও যদি আমাদের এইভাবে হেনস্থা হতে হয়, তবে কী করে কাজ করবো?”
তাঁদের অভিযোগ, শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করে পুলিশ। কোনও স্পষ্ট তদন্ত না করেই তাঁদের আটকে রাখা হয় এবং মানসিকভাবে হেনস্থা করা হয়।
এই ঘটনার পর মন্ত্রী তজমুল হোসেন বলেন, “এই বিষয়টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনব। বাংলা থেকে যে পরিযায়ী শ্রমিকরা বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করতে যান, তাঁদের নিরাপত্তা ও সম্মানের বিষয়টি নিশ্চিত করতেই হবে। আমরা চাই না বাংলার কোনও শ্রমিক ভিন রাজ্যে গিয়ে আবার এমন হেনস্থার শিকার হন।”