দক্ষিণবঙ্গে নিম্নচাপ ও মৌসুমী অক্ষরেখার জোড়া প্রভাবে টানা ভারী বৃষ্টি, প্লাবিত একাধিক জেলা

- আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, সোমবার
- / 270
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দক্ষিণবঙ্গে ফের সক্রিয় হয়েছে মৌসুমী অক্ষরেখা। তার সঙ্গী হয়েছে নতুন নিম্নচাপ। ফলে আবারও বৃষ্টির দাপট। রবিবার থেকেই বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর, যা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টি সোমবারেও অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি এমনই যে, সমুদ্রে যাওয়ার উপর মৎস্যজীবীদের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে, যা উত্তর ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। এটি ধীরে ধীরে নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। এই ঘূর্ণাবর্ত এবং সক্রিয় মৌসুমী অক্ষরেখার প্রভাবে রাজ্যজুড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাস।
-
সোমবার: কলকাতায় মাঝারি বৃষ্টিপাত চলবে।
-
অতি ভারী বৃষ্টি: পশ্চিম মেদিনীপুর
-
ভারী বৃষ্টি: বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম বর্ধমান
-
-
মঙ্গলবার: নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা।
-
বুধবার: দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে। উত্তরবঙ্গেও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়ার এই পরিস্থিতি অন্তত বুধবার পর্যন্ত স্থায়ী হবে, এরপর আবহাওয়ার ধীরে ধীরে উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে।
নিম্নচাপের জেরে গত সপ্তাহেও প্রবল বর্ষণে দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলা জলের তলায় চলে গিয়েছিল। জনজীবন কার্যত বিপর্যস্ত হয়েছিল। শুক্রবার পরিস্থিতির সাময়িক উন্নতি হলেও রবিবার দুপুর থেকে ফের ভোলবদল হয়েছে আবহাওয়ার।
রবিবার সকালে তীব্র ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে দুপুরের পর থেকেই শুরু হয় বর্ষণ, যা সাময়িক স্বস্তি দিলেও নতুন করে উদ্বেগও তৈরি করেছে।
টানা বৃষ্টির জেরে একাধিক নদী ফুঁসছে। জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম-সহ একাধিক জেলার বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
এর পাশাপাশি, রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসি (DVC) জল ছাড়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। মাঠঘাট জলের তলায়। এতে কৃষি এবং ফুলচাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কৃষকেরা মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন।
আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তা অনুযায়ী, উত্তাল সমুদ্রের কারণে সোমবার পর্যন্ত সমুদ্রে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গে নিম্নচাপ ও মৌসুমী অক্ষরেখার যুগলবন্দি রাজ্যজুড়ে বৃষ্টির প্রবণতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে একাধিক জেলা। কৃষিক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা। আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যবাসীকে প্রস্তুত ও সতর্ক থাকতে বলেছে প্রশাসন ও আবহাওয়া দফতর।