২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জলবায়ু পরিবর্তন রোখা ইসলামি দায়ও

পুবের কলম ডেস্ক : গ্লাসগোতে বিশ্বের ১০০ জনের বেশি নেতা একত্রিত হয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করতে। অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলির পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের নেতারাও উদ্বিগ্ন। মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশগুলি সহ প্রতিটি দেশ যদি তাদের নিজস্ব দায়িত্ব পালন করে তাহলেই ঠেকানো যেতে পারে এই দুর্বিপাক। ৫৬টি মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশের আনুমানিক জনসংখ্যা ১.৮ বিলিয়ন, অর্থাৎ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ। মুসলিম দেশগুলি মূলত উন্নয়নশীল এবং কার্বন-বর্জ্য পরিত্যাগের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে। কিন্তু তারপরও এই বৈশ্বিক সংকটের সমাধান খুঁজতে যে আলোচনা তাতে তাদেরও অংশগ্রহণ করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামি চিন্তাধারা জুড়ে রয়েছে মৌলবাদ, সন্ত্রাস, নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলি। সেই সঙ্গে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের পরম্পরার সঙ্গে বোঝাপড়া ও আধুনিক বিজ্ঞান নিয়ে তাদের যাবতীয় ভাবনা। জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত স্থিতিশীলতা এখনও তাদের মনোজগতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করেনি। তবে এরই মধ্যে সৈয়দ হোসেইন নসরের কাজ বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। পরিবেশ রক্ষার্থে মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত তার একটি ইসলামি, আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন নসর।

এই গভীর সংকটের মুখোমুখি হয়ে মুসলিম পরিবেশকর্মী ও বিজ্ঞানীরা একটি ইসলামি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছে। ২০১৫ সালে প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনের আগে ইস্তাম্বুলে হওয়া এক সম্মেলনে এই ঘোষণা করা হয়। জলবায়ু বিজ্ঞানের সঙ্গে কুরআনের প্রজ্ঞাকে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে এই ঘোষণায়। এতে কোনও অস্পষ্টতা বা ধোঁয়াশা নেই। প্রত্যেক মানুষকে নতুন সময়ে ‘খালিফা’ হিসাবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, যে হারে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে তাতে মনুষ্যপ্রজাতির অস্তিত্ব সংকটের মুখে। খালিফার ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হওয়া সম্পর্কে ইসলামে নানা কথা বলা রয়েছে এবং তার ফলাফল কী হতে পারে তাও। কুরআনের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে এই ঘোষণাপত্র তৈরি করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে মানুষের লড়াইকে সমর্থন জোগাতে কুরআনের আয়াত ব্যবহার করা হয়েছে। এই ঘোষণায় জলবায়ু সংক্রান্ত সমস্যাকে ‘আত্মরক্ষামূলক’ বলা হয়েছে। কুরআনের আলোকে জলবায়ু বিজ্ঞানকে ব্যাখ্যা করার ফলে মুসলিমরা একে উপেক্ষা করতে পারবেন না এবং এটি ইসলামে অন্তঃস্থলে প্রবেশ করেছে।

আরও পড়ুন: আগামী কয়েক বছরেই জলবায়ু বদলের ভয়ঙ্কর পরিণাম টের পাবে ভারত, পূর্বাভাস বিজ্ঞানীদের

মানুষের অপকর্মের ফলে গোটা বিশ্ব আজ সংকটে। ইসলামি আইন অনুযায়ী, ক্ষতি রোধ করাই অগ্রাধিকার পায়। তাই পরিবেশ রক্ষার জন্য বা ভিন্নভাবে বললে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করার জন্য কাজ করা প্রতিটি মুসলিম, সংগঠন ও সরকারের দায়। ইসলামে দুই ধরনের দায়বদ্ধতার কথা বলা আছে–ফরজে আইন (ব্যক্তিগত দায়) ও ফরজে কিফায়া (সমষ্টিগত দায়)। দ্বিতীয়টির অর্থ হল, যদি কোনও মুসলিম সংগঠন তার দায় পালন করে তাহলে সেই দায় থেকে সমস্ত মুসলিমরা রক্ষা পান। পরিবেশের প্রতি যত্নশীল হওয়া তাই একই সঙ্গে ফরজে আইন ও ফরজে কিফায়া। পরিবেশ নিয়ে সক্রিয় হওয়াকেও এক ধরনের জিহাদ বলা হয়েছে এই প্রসঙ্গে।

আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের বিরাট ঝুঁকিতে আফ্রিকা- মধ্যপ্রাচ্য

আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন­ বিলুপ্তির পথে ইরাকের বিখ্যাত হরিণ
ট্যাগ :
সর্বধিক পাঠিত

বিজেপির রাজ্যে ‘বেটি বাঁচাও’-এর এটাই বাস্তব চিত্র: সেঙ্গারের জামিন নিয়ে তোপ অভিষেকের

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জলবায়ু পরিবর্তন রোখা ইসলামি দায়ও

আপডেট : ৭ নভেম্বর ২০২১, রবিবার

পুবের কলম ডেস্ক : গ্লাসগোতে বিশ্বের ১০০ জনের বেশি নেতা একত্রিত হয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করতে। অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলির পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের নেতারাও উদ্বিগ্ন। মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশগুলি সহ প্রতিটি দেশ যদি তাদের নিজস্ব দায়িত্ব পালন করে তাহলেই ঠেকানো যেতে পারে এই দুর্বিপাক। ৫৬টি মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশের আনুমানিক জনসংখ্যা ১.৮ বিলিয়ন, অর্থাৎ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ। মুসলিম দেশগুলি মূলত উন্নয়নশীল এবং কার্বন-বর্জ্য পরিত্যাগের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে। কিন্তু তারপরও এই বৈশ্বিক সংকটের সমাধান খুঁজতে যে আলোচনা তাতে তাদেরও অংশগ্রহণ করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামি চিন্তাধারা জুড়ে রয়েছে মৌলবাদ, সন্ত্রাস, নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলি। সেই সঙ্গে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের পরম্পরার সঙ্গে বোঝাপড়া ও আধুনিক বিজ্ঞান নিয়ে তাদের যাবতীয় ভাবনা। জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত স্থিতিশীলতা এখনও তাদের মনোজগতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করেনি। তবে এরই মধ্যে সৈয়দ হোসেইন নসরের কাজ বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। পরিবেশ রক্ষার্থে মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত তার একটি ইসলামি, আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন নসর।

এই গভীর সংকটের মুখোমুখি হয়ে মুসলিম পরিবেশকর্মী ও বিজ্ঞানীরা একটি ইসলামি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছে। ২০১৫ সালে প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনের আগে ইস্তাম্বুলে হওয়া এক সম্মেলনে এই ঘোষণা করা হয়। জলবায়ু বিজ্ঞানের সঙ্গে কুরআনের প্রজ্ঞাকে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে এই ঘোষণায়। এতে কোনও অস্পষ্টতা বা ধোঁয়াশা নেই। প্রত্যেক মানুষকে নতুন সময়ে ‘খালিফা’ হিসাবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, যে হারে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে তাতে মনুষ্যপ্রজাতির অস্তিত্ব সংকটের মুখে। খালিফার ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হওয়া সম্পর্কে ইসলামে নানা কথা বলা রয়েছে এবং তার ফলাফল কী হতে পারে তাও। কুরআনের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে এই ঘোষণাপত্র তৈরি করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে মানুষের লড়াইকে সমর্থন জোগাতে কুরআনের আয়াত ব্যবহার করা হয়েছে। এই ঘোষণায় জলবায়ু সংক্রান্ত সমস্যাকে ‘আত্মরক্ষামূলক’ বলা হয়েছে। কুরআনের আলোকে জলবায়ু বিজ্ঞানকে ব্যাখ্যা করার ফলে মুসলিমরা একে উপেক্ষা করতে পারবেন না এবং এটি ইসলামে অন্তঃস্থলে প্রবেশ করেছে।

আরও পড়ুন: আগামী কয়েক বছরেই জলবায়ু বদলের ভয়ঙ্কর পরিণাম টের পাবে ভারত, পূর্বাভাস বিজ্ঞানীদের

মানুষের অপকর্মের ফলে গোটা বিশ্ব আজ সংকটে। ইসলামি আইন অনুযায়ী, ক্ষতি রোধ করাই অগ্রাধিকার পায়। তাই পরিবেশ রক্ষার জন্য বা ভিন্নভাবে বললে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করার জন্য কাজ করা প্রতিটি মুসলিম, সংগঠন ও সরকারের দায়। ইসলামে দুই ধরনের দায়বদ্ধতার কথা বলা আছে–ফরজে আইন (ব্যক্তিগত দায়) ও ফরজে কিফায়া (সমষ্টিগত দায়)। দ্বিতীয়টির অর্থ হল, যদি কোনও মুসলিম সংগঠন তার দায় পালন করে তাহলে সেই দায় থেকে সমস্ত মুসলিমরা রক্ষা পান। পরিবেশের প্রতি যত্নশীল হওয়া তাই একই সঙ্গে ফরজে আইন ও ফরজে কিফায়া। পরিবেশ নিয়ে সক্রিয় হওয়াকেও এক ধরনের জিহাদ বলা হয়েছে এই প্রসঙ্গে।

আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের বিরাট ঝুঁকিতে আফ্রিকা- মধ্যপ্রাচ্য

আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন­ বিলুপ্তির পথে ইরাকের বিখ্যাত হরিণ