২৩ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিশুদের প্রাণ বাঁচানো কাফিল, যোগীর রোষেই খোয়ালেন চাকরি

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২১, শুক্রবার
  • / 21

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ শেষ পর্যন্ত যোগী আদিত্যনাথ সরকারের চরম হঠকারিতা ও অবিচারের শিকার হলেন চিকিৎসক কাফিল খান। শিশু মৃত্যুর ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের বিআরডি হাসপাতালের চিকিৎসক কাফিলকে বরখাস্ত করল যোগী আদিত্যনাথ সরকার।

উল্লেখ্য– ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশে বাবা রাঘবদাস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক সপ্তাহের মধ্যে অক্সিজেনের অভাবে ৬৩টি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। ওই হাসপাতলে যে বেসরকারি সংস্থা অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করত তারা জানিয়েছিল–  সরকার বকেয়া টাকা না দিলে তারা আর অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করবেন না। টাকা না পাওয়ায় যথারীতি ওই সংস্থা অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠানো বন্ধ করে দেয়।

আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে সন্তান জন্মানোর হার হু-হু করে কমছে, কারণটা কী?

এ ঘটনায় অক্সিজেনের অভাবেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ৬০টি সদ্যোজাত শিশু। কিন্তু ওই সময়ে কাফিল খান এবং তাঁর কয়েকজন সহকর্মী কার্যত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বহু শিশুকে প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিহিংসা পরায়ণ যোগী সরকার সেই কাফিলকেই বরখাস্ত করল।

আরও পড়ুন: “শ্রেষ্ঠ শিশু-আবাস পুরস্কার” পেল পূর্ব-বর্ধমান

একসঙ্গে এতগুলি শিশুর মৃত্যুতে রাজ্য তথা দেশ জুড়ে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়। ঘটনার পর যোগী সরকার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। মুখ্যমন্ত্রী যোগী সব ঘটনার দায় নিজের সরকারের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে চিকিৎসক কাফিল খানকে দায়ী করেন।

আরও পড়ুন: ২৫ দিনে গাজায় ৫০০ শিশুকে খুন ইসরাইলের

শুধু তাই নয়– কাফিলকে সাসপেন্ড করার পাশাপাশি কী কারণে এতগুলি শিশুর মৃত্যু হল তা জানতে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। ওই কমিটি সব দায় ওই ডাক্তারের কাঁধে চাপায়।

ওই কমিটি তার তদন্ত শেষ করার পর এক রিপোর্টে জানিয়েছে– ওই অভিশপ্ত ঘটনার জন্য চিকিৎসক কাফিল খানই দায়ী। চিকিৎসকের গাফিলতিতেই ৬০টি শিশু অকারণে প্রাণ হারিয়েছে। ওই ঘটনায় কাফিলকে অভিযুক্ত করে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি। যোগী সরকার কমিটির সুপারিশে মেনে নিল। সেই কমিটি কার্যত যোগী সরকারের পাশেই দাঁড়াল।

ওই ঘটনার পরেই কাফিল খানকে সাসপেন্ড করেছিল যোগী সরকার এবার তাকে পাকাপাকি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হল।

উত্তরপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিপিএসসি) তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়ার পরে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আদেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ উল্লেখ না করলেও বুধবার রাতে ইউপিপিএসসির নির্দেশে চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগ তার বরখাস্তের আদেশ জারি করে। প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি– মেডিক্যাল এডুকেশন– অলোক কুমার বলেছেন– তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ডাঃ কফিল খানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

ঘটনাক্রমে– ডাঃ কফিলকে গোরক্ষপুর অক্সিজেন মামলায় অন্যদের সঙ্গে খালাস দেওয়া হয়েছিল তবে পরে তাকে ফের অন্যান্য মামলায় জড়িত করা হয়েছিল। ডাঃ কাফিল বলেছেন যে তিনি এই আদেশকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করবেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শিশুদের প্রাণ বাঁচানো কাফিল, যোগীর রোষেই খোয়ালেন চাকরি

আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২১, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ শেষ পর্যন্ত যোগী আদিত্যনাথ সরকারের চরম হঠকারিতা ও অবিচারের শিকার হলেন চিকিৎসক কাফিল খান। শিশু মৃত্যুর ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের বিআরডি হাসপাতালের চিকিৎসক কাফিলকে বরখাস্ত করল যোগী আদিত্যনাথ সরকার।

উল্লেখ্য– ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশে বাবা রাঘবদাস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক সপ্তাহের মধ্যে অক্সিজেনের অভাবে ৬৩টি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। ওই হাসপাতলে যে বেসরকারি সংস্থা অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করত তারা জানিয়েছিল–  সরকার বকেয়া টাকা না দিলে তারা আর অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করবেন না। টাকা না পাওয়ায় যথারীতি ওই সংস্থা অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠানো বন্ধ করে দেয়।

আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে সন্তান জন্মানোর হার হু-হু করে কমছে, কারণটা কী?

এ ঘটনায় অক্সিজেনের অভাবেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ৬০টি সদ্যোজাত শিশু। কিন্তু ওই সময়ে কাফিল খান এবং তাঁর কয়েকজন সহকর্মী কার্যত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বহু শিশুকে প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিহিংসা পরায়ণ যোগী সরকার সেই কাফিলকেই বরখাস্ত করল।

আরও পড়ুন: “শ্রেষ্ঠ শিশু-আবাস পুরস্কার” পেল পূর্ব-বর্ধমান

একসঙ্গে এতগুলি শিশুর মৃত্যুতে রাজ্য তথা দেশ জুড়ে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়। ঘটনার পর যোগী সরকার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। মুখ্যমন্ত্রী যোগী সব ঘটনার দায় নিজের সরকারের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে চিকিৎসক কাফিল খানকে দায়ী করেন।

আরও পড়ুন: ২৫ দিনে গাজায় ৫০০ শিশুকে খুন ইসরাইলের

শুধু তাই নয়– কাফিলকে সাসপেন্ড করার পাশাপাশি কী কারণে এতগুলি শিশুর মৃত্যু হল তা জানতে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। ওই কমিটি সব দায় ওই ডাক্তারের কাঁধে চাপায়।

ওই কমিটি তার তদন্ত শেষ করার পর এক রিপোর্টে জানিয়েছে– ওই অভিশপ্ত ঘটনার জন্য চিকিৎসক কাফিল খানই দায়ী। চিকিৎসকের গাফিলতিতেই ৬০টি শিশু অকারণে প্রাণ হারিয়েছে। ওই ঘটনায় কাফিলকে অভিযুক্ত করে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি। যোগী সরকার কমিটির সুপারিশে মেনে নিল। সেই কমিটি কার্যত যোগী সরকারের পাশেই দাঁড়াল।

ওই ঘটনার পরেই কাফিল খানকে সাসপেন্ড করেছিল যোগী সরকার এবার তাকে পাকাপাকি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হল।

উত্তরপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিপিএসসি) তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়ার পরে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আদেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ উল্লেখ না করলেও বুধবার রাতে ইউপিপিএসসির নির্দেশে চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগ তার বরখাস্তের আদেশ জারি করে। প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি– মেডিক্যাল এডুকেশন– অলোক কুমার বলেছেন– তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ডাঃ কফিল খানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

ঘটনাক্রমে– ডাঃ কফিলকে গোরক্ষপুর অক্সিজেন মামলায় অন্যদের সঙ্গে খালাস দেওয়া হয়েছিল তবে পরে তাকে ফের অন্যান্য মামলায় জড়িত করা হয়েছিল। ডাঃ কাফিল বলেছেন যে তিনি এই আদেশকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করবেন।