২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিজাব মামলা: কী রায় দিল কর্নাটক আদালত জেনে নিন

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 43

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ আজ বহু বিতর্কিত হিজাব কাণ্ডের রায় ঘোষণা হল। বিগত কয়েকদিন ধরেই হিজাব বিতর্কে উত্তপ্ত হয়েছিল গোটা রাজ্য। কর্নাটকের উদুপিতে শুরু হওয়া হিজাব কাণ্ডের উত্তাপ চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে আজ, মঙ্গলবার কর্নাটক আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করল। এর রায়ের দিকেই আজ তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ।

আদালত তার রায়ে জানিয়েছেন, স্কুল ইউনিফর্ম একটি যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধ, যা সাংবিধানিকভাবে বৈধ। ধর্মাচরণে হিজাব অপরিহার্য নয়। আদালত  আরও জানিয়েছে, স্কুলের পোশাক নিয়ে রাজ্য সরকারের যে কোনও আদেশ জারি করার ক্ষমতা রয়েছে। এদিন মামলা সংক্রান্ত রিট পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।

আরও পড়ুন: ২৬ হাজার চাকরি বাতিলঃ শুনানি শেষ, রায় স্থগিত সুপ্রিম কোর্টে

কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি রীতুরাজ অবস্থি, বিচারপতি কৃষ্ণ এস দীক্ষিত এবং বিচারপতি জেএম খাজির একটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আজ হিজাব মামলা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই রায়দান করেন। তবে আদালতের এই রায়দানে খুব স্বাভাবিকভাবেই নিরাশ হয়েছেন আবেদনকারী ছাত্রীরা। হিজাব নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে আদালতে মোট পাঁচটি পিটিশন জমা পড়ে।

আরও পড়ুন: Breaking: কুন্তল ঘোষ চিঠি মামলায় হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন অভিষেক

আবেদনকারীরা আদালত জানান, ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী হিজাব ধর্মাচরণে ক্ষেত্রে তাদের মৌলিক অধিকার।

আরও পড়ুন: আঞ্চলিক ভাষাতেই সুপ্রিম কোর্টের রায়, তবে বাংলাতে এখন অনুবাদ হবে না এমনটাই মন্তব্য করলেন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়

১১ দিনের শুনানির পর ২৫ ফেব্রয়ারি আদালত হিজাব ও গেরুয়া উত্তরীয় নিষিদ্ধ করার রায় দিয়েছিল। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অনেকেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শুনানিতে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন “এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয় আমরা হাইকোর্টের রায় না আশা পর্যন্ত এই মামলায় কোনও রকম হস্তক্ষেপ করব না।”

আজ এই স্পর্শকাতর মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কর্নাটকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে যে কোনও ধরনের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তৎপর প্রশাসন। আরও একসপ্তাহ ধরে এই বিধিনিষেধ জারি থাকবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। বেঙ্গালুরুর পাশাপাশি ম্যাঙ্গালোরেও ১৫ থেকে ১৯ মার্চ অবধি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। উদিপি থেকেই জন্ম নিয়েছিল হিজাব বিতর্ক। আজ তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উদিপির স্কুল কলেজগুলিও আজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গতমাসেই কর্নাটক আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও ধরনের ধর্মীয় পোশাকের ওপর অস্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। হিজাব বা গেরুয়া উত্তরীয়ের ওপরও জারি হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা।

উল্লেখ্য, কর্নাটকের হিজাব বিতর্ক ঘিরে উত্তেজনা চরমে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ কয়েকটি জেলায় জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা। হিজাব পরে স্কুল কলেজে প্রবেশ নিষিদ্ধ হওয়ার জন্য বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষার্থীরা। সেই বিক্ষোভ এ পাথর ছোঁড়া থেকে শুরু করে পাল্টা পুলিশের লাঠিচার্জ সব কিছুই ঘটেছে। ঘটনার সূত্রপাত কর্নাটকের উদিপি জেলার এক সরকারি কলেজে। সেখানে ৬ জন মুসলিম ছাত্রী হিজাব পড়ে ক্লাসে আসেন। কিন্তু সরকারি প্রি- ইউনিভার্সিটি কলেজের শ্রেণিকক্ষে হিজাব পরে আসা ছাত্রীদের কলেজ চত্বর থেকে বাইরে বেরিয়ে যেতে বলা হয়। তারপরই হিজাব সংক্রান্ত বিতর্ক-বিবাদ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায়। কোথাও পুলিশের সঙ্গে পড়ুয়াদের সংঘর্ষ চোখে পরে আবার কোথাও অভিভাবকদের পাথর ছোঁড়ার ঘটনাও প্রকাশ্যে আসে।

 

 

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হিজাব মামলা: কী রায় দিল কর্নাটক আদালত জেনে নিন

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ আজ বহু বিতর্কিত হিজাব কাণ্ডের রায় ঘোষণা হল। বিগত কয়েকদিন ধরেই হিজাব বিতর্কে উত্তপ্ত হয়েছিল গোটা রাজ্য। কর্নাটকের উদুপিতে শুরু হওয়া হিজাব কাণ্ডের উত্তাপ চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে আজ, মঙ্গলবার কর্নাটক আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করল। এর রায়ের দিকেই আজ তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ।

আদালত তার রায়ে জানিয়েছেন, স্কুল ইউনিফর্ম একটি যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধ, যা সাংবিধানিকভাবে বৈধ। ধর্মাচরণে হিজাব অপরিহার্য নয়। আদালত  আরও জানিয়েছে, স্কুলের পোশাক নিয়ে রাজ্য সরকারের যে কোনও আদেশ জারি করার ক্ষমতা রয়েছে। এদিন মামলা সংক্রান্ত রিট পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।

আরও পড়ুন: ২৬ হাজার চাকরি বাতিলঃ শুনানি শেষ, রায় স্থগিত সুপ্রিম কোর্টে

কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি রীতুরাজ অবস্থি, বিচারপতি কৃষ্ণ এস দীক্ষিত এবং বিচারপতি জেএম খাজির একটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আজ হিজাব মামলা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই রায়দান করেন। তবে আদালতের এই রায়দানে খুব স্বাভাবিকভাবেই নিরাশ হয়েছেন আবেদনকারী ছাত্রীরা। হিজাব নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে আদালতে মোট পাঁচটি পিটিশন জমা পড়ে।

আরও পড়ুন: Breaking: কুন্তল ঘোষ চিঠি মামলায় হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন অভিষেক

আবেদনকারীরা আদালত জানান, ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী হিজাব ধর্মাচরণে ক্ষেত্রে তাদের মৌলিক অধিকার।

আরও পড়ুন: আঞ্চলিক ভাষাতেই সুপ্রিম কোর্টের রায়, তবে বাংলাতে এখন অনুবাদ হবে না এমনটাই মন্তব্য করলেন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়

১১ দিনের শুনানির পর ২৫ ফেব্রয়ারি আদালত হিজাব ও গেরুয়া উত্তরীয় নিষিদ্ধ করার রায় দিয়েছিল। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অনেকেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শুনানিতে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন “এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয় আমরা হাইকোর্টের রায় না আশা পর্যন্ত এই মামলায় কোনও রকম হস্তক্ষেপ করব না।”

আজ এই স্পর্শকাতর মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কর্নাটকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে যে কোনও ধরনের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তৎপর প্রশাসন। আরও একসপ্তাহ ধরে এই বিধিনিষেধ জারি থাকবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। বেঙ্গালুরুর পাশাপাশি ম্যাঙ্গালোরেও ১৫ থেকে ১৯ মার্চ অবধি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। উদিপি থেকেই জন্ম নিয়েছিল হিজাব বিতর্ক। আজ তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উদিপির স্কুল কলেজগুলিও আজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গতমাসেই কর্নাটক আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও ধরনের ধর্মীয় পোশাকের ওপর অস্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। হিজাব বা গেরুয়া উত্তরীয়ের ওপরও জারি হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা।

উল্লেখ্য, কর্নাটকের হিজাব বিতর্ক ঘিরে উত্তেজনা চরমে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ কয়েকটি জেলায় জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা। হিজাব পরে স্কুল কলেজে প্রবেশ নিষিদ্ধ হওয়ার জন্য বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষার্থীরা। সেই বিক্ষোভ এ পাথর ছোঁড়া থেকে শুরু করে পাল্টা পুলিশের লাঠিচার্জ সব কিছুই ঘটেছে। ঘটনার সূত্রপাত কর্নাটকের উদিপি জেলার এক সরকারি কলেজে। সেখানে ৬ জন মুসলিম ছাত্রী হিজাব পড়ে ক্লাসে আসেন। কিন্তু সরকারি প্রি- ইউনিভার্সিটি কলেজের শ্রেণিকক্ষে হিজাব পরে আসা ছাত্রীদের কলেজ চত্বর থেকে বাইরে বেরিয়ে যেতে বলা হয়। তারপরই হিজাব সংক্রান্ত বিতর্ক-বিবাদ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায়। কোথাও পুলিশের সঙ্গে পড়ুয়াদের সংঘর্ষ চোখে পরে আবার কোথাও অভিভাবকদের পাথর ছোঁড়ার ঘটনাও প্রকাশ্যে আসে।