১৪ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী উপাচার্য কে হচ্ছেন?

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, রবিবার
  • / 111

বর্তমান উপাচার্য মুহাম্মদ আলি

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে হচ্ছেন, এটা এখন কোটি টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান উপাচার্য মুহাম্মদ আলি সাহেবের মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলমান বছরের ১২ এপ্রিল। সেক্ষেত্রে হাতে রইল মাত্র একদিন। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়ার মূল দায়িত্বে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর (এমএএমই)।

 

আরও পড়ুন: আলিয়ার সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত হল নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাহ’র শহিদ দিবস

কিন্তু বার বার বিভিন্ন মহল থেকে জানানো সত্ত্বেও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও ‘সার্চ কমিটি’ করা হয়নি। আর বর্তমান উপাচার্যকে যে ‘এক্সটেনশন’ দেওয়া হবে, সে সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্ত তো দূরে থাক, ইশারা-ইঙ্গিতও সামনে আসেনি। তাহলে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কি আপাতত স্থায়ী শীর্ষকর্তা বিহীনই থাকবে? শোনা যাচ্ছে, সাময়িক সমাধান হিসেবে এমএএমই দফতর কোনও এক ব্যক্তিকে অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিতে পারে। কিন্তু এটা শোনা কথা মাত্র। এমএএমই দফতর কি করবে সেটা তারাই জানে। ৯ এপ্রিল পর্যন্ত তারা এ সম্পর্কে স্পষ্ট কোনও কথাই বলেনি। পুবের কলম পত্রিকার প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তরে এমএএমই দফতরের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, ১২ এপ্রিলের মধ্যেই এ সম্পর্কে জানানো হবে। অর্থাৎ কি না, শেষ মুহূর্তেই হবে রহস্যের অবসান। কিন্তু কেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বাংলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান নিয়ে এই ধরনের রহস্য বজায় রাখা হচ্ছে, তার কোনও হদিশ কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: আলিয়ার সেমিনার হলে ৩ জুলাই পালিত হবে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাহ’র শহিদ দিবস

 

আরও পড়ুন: সিরিয়ায় নতুন সরকার গঠন আগামী মাসে

এদিকে এক গুরুত্বপূর্ণ সূত্রে জানা গেছে, এমএএমই দফতর থেকে কম-বেশি ২০ দিন আগে আলিয়ার বর্তমান উপাচার্যকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। উপাচার্যকে সার্চ কমিটি গঠনের জন্য আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কোর্টের মিটিং ডাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যখন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ ১২ এপ্রিল শেষ হচ্ছে, সেক্ষেত্রে এত বিলম্বে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট ডাকার কথা এমএএমই দফতরের স্মরণে এল। যদিও কোনও আইন নেই, সাধারণত প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সার্চ কমিটিকে উপাচার্য নির্বাচনের জন্য কমপক্ষে ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়। সেখানে এখনও পর্যন্ত আলিয়ার কোর্টই ডাকা হয়নি।

 

আর কোর্ট আহ্বানের প্রক্রিয়ার মধ্যেও রয়েছে সময় প্রদানের প্রয়োজনীয়তা। সাধারণত কোর্ট আহ্বান করতে গেলে আচার্যের অনুমতি বা সম্মতির প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হচ্ছেন বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ধনখড়কে এমএএমই দফতর কোনও অনুরোধ কিংবা পত্র পাঠায়নি। বর্তমান আইন বা নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যই আচার্যকে সরাসরি পত্র লিখতে পারেন না। সেই বিশ্ববিদ্যালয় যে দফতরের অধীনে রয়েছে সেই দফতরেরই মন্ত্রী বা আধিকারিদের মাধ্যমে আচার্যকে চিঠি প্রদান করতে হয়।

 

এক্ষেত্রে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা দফতরের অধীনে। কাজেই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট ডাকার জন্য উপাচার্যের মাধ্যমে চান্সেলর বা আচার্যকে অনুরোধ করতে হবে এমএএমই দফতরকেই। অবশ্য এমএএমই দফতরের হাতে আচার্যকে এড়িয়ে কোর্ট আহ্বান করার কোনও বিকল্প হয়তো থাকলেও থাকতে পারে।

 

এদিকে যেহেতু প্রথা মেনে এখনও সার্চ কমিটি গঠন করা হয়নি এবং বর্তমান উপাচার্যের মেয়ার প্রায় ফুরিয়ে গেছে, সেজন্য কারও কারও মতে, এমএএমই সাময়িকভাবে কোনও যোগ্য ব্যক্তিকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব দিতে পারে। কিন্তু আলিয়ায় এই অবস্থা সৃষ্টির পিছনে কি প্রয়োজনীয়তা বা পরিকল্পনা ছিল, তা কিন্তু অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না।

 

কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচন বা দায়িত্ব প্রদানের জন্য সর্বনিম্ন যোগ্যতা হচ্ছে, তাঁকে ৫ বছর প্রফেসর পদে দায়িত্ব পালন করে অভিজ্ঞ হতে হবে। সম্ভবত তেমন কাউকেই হয়তো বা আলিয়ার অস্থায়ী উপাচার্যের পদে দায়িত্ব অর্পণ করা হবে।কিন্তু সব মিলিয়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা এবং স্থায়ী উপাচার্য নির্বাচনে যে একটি জট তৈরি হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। আর একটি প্রশ্ন অনেকে তুলছেন, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে এমএএমই দফতরের উদ্যোগে একটি ভিজিলেন্স কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু বহু মহল থেকে চাওয়া সত্ত্বেও সেই ভিজিলেন্স কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসেনি। কাজেই উপাচার্য মুহাম্মদ আলি কি কি ‘অপরাধ’ বা ‘দুর্নীতি’ করেছিলেন তাও কিন্তু জানা যায়নি।

 

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী উপাচার্য কে হচ্ছেন?

আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে হচ্ছেন, এটা এখন কোটি টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান উপাচার্য মুহাম্মদ আলি সাহেবের মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলমান বছরের ১২ এপ্রিল। সেক্ষেত্রে হাতে রইল মাত্র একদিন। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়ার মূল দায়িত্বে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর (এমএএমই)।

 

আরও পড়ুন: আলিয়ার সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত হল নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাহ’র শহিদ দিবস

কিন্তু বার বার বিভিন্ন মহল থেকে জানানো সত্ত্বেও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও ‘সার্চ কমিটি’ করা হয়নি। আর বর্তমান উপাচার্যকে যে ‘এক্সটেনশন’ দেওয়া হবে, সে সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্ত তো দূরে থাক, ইশারা-ইঙ্গিতও সামনে আসেনি। তাহলে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কি আপাতত স্থায়ী শীর্ষকর্তা বিহীনই থাকবে? শোনা যাচ্ছে, সাময়িক সমাধান হিসেবে এমএএমই দফতর কোনও এক ব্যক্তিকে অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিতে পারে। কিন্তু এটা শোনা কথা মাত্র। এমএএমই দফতর কি করবে সেটা তারাই জানে। ৯ এপ্রিল পর্যন্ত তারা এ সম্পর্কে স্পষ্ট কোনও কথাই বলেনি। পুবের কলম পত্রিকার প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তরে এমএএমই দফতরের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, ১২ এপ্রিলের মধ্যেই এ সম্পর্কে জানানো হবে। অর্থাৎ কি না, শেষ মুহূর্তেই হবে রহস্যের অবসান। কিন্তু কেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বাংলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান নিয়ে এই ধরনের রহস্য বজায় রাখা হচ্ছে, তার কোনও হদিশ কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: আলিয়ার সেমিনার হলে ৩ জুলাই পালিত হবে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাহ’র শহিদ দিবস

 

আরও পড়ুন: সিরিয়ায় নতুন সরকার গঠন আগামী মাসে

এদিকে এক গুরুত্বপূর্ণ সূত্রে জানা গেছে, এমএএমই দফতর থেকে কম-বেশি ২০ দিন আগে আলিয়ার বর্তমান উপাচার্যকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। উপাচার্যকে সার্চ কমিটি গঠনের জন্য আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কোর্টের মিটিং ডাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যখন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ ১২ এপ্রিল শেষ হচ্ছে, সেক্ষেত্রে এত বিলম্বে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট ডাকার কথা এমএএমই দফতরের স্মরণে এল। যদিও কোনও আইন নেই, সাধারণত প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সার্চ কমিটিকে উপাচার্য নির্বাচনের জন্য কমপক্ষে ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়। সেখানে এখনও পর্যন্ত আলিয়ার কোর্টই ডাকা হয়নি।

 

আর কোর্ট আহ্বানের প্রক্রিয়ার মধ্যেও রয়েছে সময় প্রদানের প্রয়োজনীয়তা। সাধারণত কোর্ট আহ্বান করতে গেলে আচার্যের অনুমতি বা সম্মতির প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হচ্ছেন বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ধনখড়কে এমএএমই দফতর কোনও অনুরোধ কিংবা পত্র পাঠায়নি। বর্তমান আইন বা নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যই আচার্যকে সরাসরি পত্র লিখতে পারেন না। সেই বিশ্ববিদ্যালয় যে দফতরের অধীনে রয়েছে সেই দফতরেরই মন্ত্রী বা আধিকারিদের মাধ্যমে আচার্যকে চিঠি প্রদান করতে হয়।

 

এক্ষেত্রে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা দফতরের অধীনে। কাজেই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট ডাকার জন্য উপাচার্যের মাধ্যমে চান্সেলর বা আচার্যকে অনুরোধ করতে হবে এমএএমই দফতরকেই। অবশ্য এমএএমই দফতরের হাতে আচার্যকে এড়িয়ে কোর্ট আহ্বান করার কোনও বিকল্প হয়তো থাকলেও থাকতে পারে।

 

এদিকে যেহেতু প্রথা মেনে এখনও সার্চ কমিটি গঠন করা হয়নি এবং বর্তমান উপাচার্যের মেয়ার প্রায় ফুরিয়ে গেছে, সেজন্য কারও কারও মতে, এমএএমই সাময়িকভাবে কোনও যোগ্য ব্যক্তিকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব দিতে পারে। কিন্তু আলিয়ায় এই অবস্থা সৃষ্টির পিছনে কি প্রয়োজনীয়তা বা পরিকল্পনা ছিল, তা কিন্তু অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না।

 

কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচন বা দায়িত্ব প্রদানের জন্য সর্বনিম্ন যোগ্যতা হচ্ছে, তাঁকে ৫ বছর প্রফেসর পদে দায়িত্ব পালন করে অভিজ্ঞ হতে হবে। সম্ভবত তেমন কাউকেই হয়তো বা আলিয়ার অস্থায়ী উপাচার্যের পদে দায়িত্ব অর্পণ করা হবে।কিন্তু সব মিলিয়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা এবং স্থায়ী উপাচার্য নির্বাচনে যে একটি জট তৈরি হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। আর একটি প্রশ্ন অনেকে তুলছেন, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে এমএএমই দফতরের উদ্যোগে একটি ভিজিলেন্স কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু বহু মহল থেকে চাওয়া সত্ত্বেও সেই ভিজিলেন্স কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসেনি। কাজেই উপাচার্য মুহাম্মদ আলি কি কি ‘অপরাধ’ বা ‘দুর্নীতি’ করেছিলেন তাও কিন্তু জানা যায়নি।