২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মৃত্যুপুরী ওড়িশায় স্বজনহারানোর হাহাকার, এখনও নিখোঁজ ১০১টি দেহ

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৬ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 15

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:   বালেশ্বরের অভিশপ্ত ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুপুরী ওড়িশা। চারদিকেই স্বজনহারানোর হাহাকার। হাসপাতালের একদিকে দেহের স্তূপ। পরিজনদের ছবি হাতে হাসপাতাল থেকে মর্গের দরজায় ঘুরছে পরিবারের লোকেরা। সোমবার এইমস-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনও ১০১টি দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

 

আরও পড়ুন: করমণ্ডলের দুর্ঘটনায় এখনও নিখোঁজ বহু

ইস্টার্ন সেন্ট্রাল রেলওয়ের বিভাগীয় ম্যানেজার ঋণীকেশ রায় জানিয়েছেন, মৃত ২৭৮ জনের মধ্যে ১০১ জনের দেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি। প্রায় ১১০০ মানুষ আহত হয়েছে। এখনও ২০০’র বেশি মানুষ ওড়িশার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় বহু মানুষের দেহ বিকৃত হয়ে গেছে। পাশাপাশি উচ্চ-টেনশনযুক্ত বৈদ্যুতিক তারের ওভারহেড ছিঁড়ে পড়ে বহু দেহ ঝলসে গেছে। ফলে শনাক্ত করতে সমস্যা হচ্ছে।
ভুবনেশ্বরের এইমস-মর্গে মৃতদেহগুলি রাখা হয়েছে। এদিকে হাসপাতাল সূত্রে খবর, দেহের তুলনায় মর্গের সংখ্যা কম। মর্গে প্রায় ৩০-৪০টি জায়গা রয়েছে দেহ রাখার। কিন্তু সেখানে এখন প্রায় ১৯৩টি দেহ রয়েছে। দেহ রাখতে রেফিজারেশন কন্টেনার নিয়ে আসা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: সাকিল কাণ্ডে ঘাতক গাড়ির খোঁজ মিললো, এখনও অধরা চালকের নাম

মৃত্যুপুরী ওড়িশায় স্বজনহারানোর হাহাকার, এখনও নিখোঁজ ১০১টি দেহ

আরও পড়ুন: সাগরদিঘিতে তিন সন্তানকে নিয়ে গঙ্গায় ঝাঁপের ঘটনায় উদ্ধার মায়ের দেহ, এখনও নিখোঁজ ২

 

ছেলের ছবি হাতে নিয়ে গত দুদিন ধরে হাসপাতালের দোরে দোরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক বাবা। সাংবাদিকদের তিনি জানান,আমার ছেলে হাওড়া থেকে ট্রেনে উঠেছিল চেন্নাই যাওয়ার জন্য। ছেলের দেহ শনাক্ত করতে পারিনি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা অপর এক পরিবারেরও একই বক্তব্য। বিহারের মুধুবনী জেলা থেকে এক পরিবারের ৬ জন সদস্য ছিলেন এই ট্রেনে। পরিবারের অপর সদস্য মুহাম্মদ তাহির জানিয়েছেন, একজনের দেহ পাওয়া গেলেও বাকিরা নিখোঁজ। বিহারের কাঘারিয়া জেলা থেকে কাকার খোঁজে এসেছেন অরবিন্দ চৌধুরী। অরবিন্দের কথায়, দু-থেকে তিনটে হাসপাতালে ঘুরেছি। কাকার খোঁজ মেলেনি। চিকিৎসকেরা বলছেন, যদি তার ছবি শনাক্তকরণের তালিকায় না থাকে তাহলে তিনি বেঁচেও থাকতে পারেন। ভাইয়ের খোঁজে বিহারের দ্বারভাঙা থেকে এসেছেন রাকেশ যাদব। দুদিন ধরে খুঁজেও ভাইয়ের দেহ পাননি তিনি। তার গ্রামে এক ব্যক্তির দেহ শনাক্ত করলেও ভাইয়ের খোঁজ নেই। হাসপাতালের তালিকাতেও নাম আর ছবিও নেই ভাইয়ের।

 

ভুবনেশ্বর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কমিশনার বিজয় অমৃত কুলাঙ্গে জানান, ভুবনেশ্বরের ১৯৩টি দেহের মধ্যে ৮০টি দেহ শনাক্ত করা গেছে। এর মধ্যে ৫৫টি দেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।  প্রায় ২০০টির বেশি ফোন কল এসেছিল কর্পোরেশনের হেল্পলাইন- নাম্বার ১৯২৯-এ। রেলওয়ে, ওড়িশা সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে, নিহতদের ছবি এবং বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি যাত্রীদের তালিকা সহ তিনটি অনলাইন লিঙ্ক প্রস্তুত করেছে। ভুবনেশ্বর হেল্প লাইন নাম্বার ১৮০০৩৪৫০০৬১/১৯২৯। ২৪ ঘণ্টাই খোলা আছে।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মৃত্যুপুরী ওড়িশায় স্বজনহারানোর হাহাকার, এখনও নিখোঁজ ১০১টি দেহ

আপডেট : ৬ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:   বালেশ্বরের অভিশপ্ত ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুপুরী ওড়িশা। চারদিকেই স্বজনহারানোর হাহাকার। হাসপাতালের একদিকে দেহের স্তূপ। পরিজনদের ছবি হাতে হাসপাতাল থেকে মর্গের দরজায় ঘুরছে পরিবারের লোকেরা। সোমবার এইমস-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনও ১০১টি দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

 

আরও পড়ুন: করমণ্ডলের দুর্ঘটনায় এখনও নিখোঁজ বহু

ইস্টার্ন সেন্ট্রাল রেলওয়ের বিভাগীয় ম্যানেজার ঋণীকেশ রায় জানিয়েছেন, মৃত ২৭৮ জনের মধ্যে ১০১ জনের দেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি। প্রায় ১১০০ মানুষ আহত হয়েছে। এখনও ২০০’র বেশি মানুষ ওড়িশার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় বহু মানুষের দেহ বিকৃত হয়ে গেছে। পাশাপাশি উচ্চ-টেনশনযুক্ত বৈদ্যুতিক তারের ওভারহেড ছিঁড়ে পড়ে বহু দেহ ঝলসে গেছে। ফলে শনাক্ত করতে সমস্যা হচ্ছে।
ভুবনেশ্বরের এইমস-মর্গে মৃতদেহগুলি রাখা হয়েছে। এদিকে হাসপাতাল সূত্রে খবর, দেহের তুলনায় মর্গের সংখ্যা কম। মর্গে প্রায় ৩০-৪০টি জায়গা রয়েছে দেহ রাখার। কিন্তু সেখানে এখন প্রায় ১৯৩টি দেহ রয়েছে। দেহ রাখতে রেফিজারেশন কন্টেনার নিয়ে আসা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: সাকিল কাণ্ডে ঘাতক গাড়ির খোঁজ মিললো, এখনও অধরা চালকের নাম

মৃত্যুপুরী ওড়িশায় স্বজনহারানোর হাহাকার, এখনও নিখোঁজ ১০১টি দেহ

আরও পড়ুন: সাগরদিঘিতে তিন সন্তানকে নিয়ে গঙ্গায় ঝাঁপের ঘটনায় উদ্ধার মায়ের দেহ, এখনও নিখোঁজ ২

 

ছেলের ছবি হাতে নিয়ে গত দুদিন ধরে হাসপাতালের দোরে দোরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক বাবা। সাংবাদিকদের তিনি জানান,আমার ছেলে হাওড়া থেকে ট্রেনে উঠেছিল চেন্নাই যাওয়ার জন্য। ছেলের দেহ শনাক্ত করতে পারিনি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা অপর এক পরিবারেরও একই বক্তব্য। বিহারের মুধুবনী জেলা থেকে এক পরিবারের ৬ জন সদস্য ছিলেন এই ট্রেনে। পরিবারের অপর সদস্য মুহাম্মদ তাহির জানিয়েছেন, একজনের দেহ পাওয়া গেলেও বাকিরা নিখোঁজ। বিহারের কাঘারিয়া জেলা থেকে কাকার খোঁজে এসেছেন অরবিন্দ চৌধুরী। অরবিন্দের কথায়, দু-থেকে তিনটে হাসপাতালে ঘুরেছি। কাকার খোঁজ মেলেনি। চিকিৎসকেরা বলছেন, যদি তার ছবি শনাক্তকরণের তালিকায় না থাকে তাহলে তিনি বেঁচেও থাকতে পারেন। ভাইয়ের খোঁজে বিহারের দ্বারভাঙা থেকে এসেছেন রাকেশ যাদব। দুদিন ধরে খুঁজেও ভাইয়ের দেহ পাননি তিনি। তার গ্রামে এক ব্যক্তির দেহ শনাক্ত করলেও ভাইয়ের খোঁজ নেই। হাসপাতালের তালিকাতেও নাম আর ছবিও নেই ভাইয়ের।

 

ভুবনেশ্বর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কমিশনার বিজয় অমৃত কুলাঙ্গে জানান, ভুবনেশ্বরের ১৯৩টি দেহের মধ্যে ৮০টি দেহ শনাক্ত করা গেছে। এর মধ্যে ৫৫টি দেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।  প্রায় ২০০টির বেশি ফোন কল এসেছিল কর্পোরেশনের হেল্পলাইন- নাম্বার ১৯২৯-এ। রেলওয়ে, ওড়িশা সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে, নিহতদের ছবি এবং বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি যাত্রীদের তালিকা সহ তিনটি অনলাইন লিঙ্ক প্রস্তুত করেছে। ভুবনেশ্বর হেল্প লাইন নাম্বার ১৮০০৩৪৫০০৬১/১৯২৯। ২৪ ঘণ্টাই খোলা আছে।