কাউন্সিলারের সই জাল করে একাধিক নথি তৈরির অভিযোগে গ্রেপ্তার এক সোনারপুরে

- আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 39
উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,সোনারপুর : এবার সোনারপুরে ফাঁস ভুয়ো নথির সাম্রাজ্য, জালিয়াতি ধরা পড়তেই বিজেপির নিশানায় তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড।একদিকে রাজ্যজুড়ে উন্নয়নের দাবি, আর অন্যদিকে পুরসভার প্যাডেই চলছে ভুয়ো সার্টিফিকেট তৈরির কাজ। সই জাল করে বানানো ইনকাম সার্টিফিকেট, রেশন কার্ড, ব্লাড রিলেশন,কাস্ট সার্টিফিকেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি।পুলিশের জালে ধরা পড়তেই তোলপাড় রাজপুর সোনারপুর পৌরএলাকা।
রাজ্যের শহর উন্নয়ন ও পরিষেবা নিয়ে যখন রাজ্য সরকার দাবি করছে সবার উন্নয়ন,সকলের পাশে পুরসভা, ঠিক তখন রাজপুর সোনারপুর পুরসভা থেকে উঠে এল এক ভয়ঙ্কর চিত্র। ঠিক যেন উন্নয়নের মুখোশের নিচে ঘাপটি মেরে থাকা প্রতারণার দৈত্য। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার জয়ন্ত সেনগুপ্তের স্বাক্ষর জাল করে বানানো হচ্ছিল একের পর এক সরকারি নথি—যা দিয়ে তৈরি হচ্ছিল রেশন কার্ড, ইনকাম সার্টিফিকেট,ব্লাড রিলেশন, এমনকি কাস্ট সার্টিফিকেটের মতন গুরুত্বপূর্ণ নথি।
শুধু ৩ নম্বর নয়, ছড়িয়ে পড়েছিল ৯, ১২ এবং ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডেও।আর এই কাজ করার অভিযোগে ঢালুয়া নবপল্লির বাসিন্দা প্রশান্ত নাথকে গ্রেফতার করেছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। যদিও বাইরে থেকে সে নথিপত্র প্রস্তুতকারক বলে পরিচিত, পুলিশি জেরায় সামনে এসেছে, সে নিজেই ছিল এক জাল নথি তৈরির গোপন কারখানার মালিক।তার ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক ভুয়ো কাগজ পত্র, পুরসভার নকল প্যাড, এমনকি একাধিক জাল সিল। সব মিলিয়ে উদ্ধার হওয়া জাল সার্টিফিকেটে দেখা গেছে, একই সিরিয়াল নম্বরের একাধিক ইনকাম সার্টিফিকেট এবং সইয়ের মধ্যে অবিশ্বাস্য মিল—যা থেকে পরিষ্কার হয়ে যায়, কাউন্সিলরের সইটি নকল করা হয়েছে।
আরএই ঘটনাকে শুধুমাত্র একজনের অপরাধ হিসেবে দেখছে না পুলিশ। বরং তদন্তকারীদের ধারণা, এটি একটি বড় প্রতারণা চক্রের অংশ। প্রশ্ন উঠছে—এই ধরনের জালিয়াতির পেছনে কে বা কারা রয়েছে? পুরসভার অন্দরের কেউ কি যুক্ত ছিল? এসব নকল সিল কোথা থেকে আসছে? পুরসভা কি জানতো না এত বড় চক্র চলছে।আর এই জালিয়াতির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপি স্পষ্ট ভাষায় অভিযোগ তুলেছে, পুরবোর্ডের ভিতরে বসেই চলছে এই ফাঁস চক্র। কাউন্সিলরের সই জাল হচ্ছে আর কেউ কিছু জানছে না—এটা কি করে সম্ভব? বিজেপির বক্তব্য, তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের ভিতরে থেকেই কেউ না কেউ এই প্রতারণায় যুক্ত। তাঁরা এই ঘটনার পূর্ণ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ডা: পল্লব দাস বলেন,যদি কোনও পরিষেবার দরকার হয়, সরাসরি পুরসভায় আসুন।বাইরের কারও মাধ্যমে করালে আপনিও ফাঁসবেন, আর যিনি করছেন তিনি তো অবশ্যই ধরা পড়বেন।
অন্যদিকে, যার সই জাল হয়েছে সেই কাউন্সিলার জয়ন্ত সেনগুপ্ত বলেন,একটি নথি দেখেই তাঁর সন্দেহ হয়—এটা তাঁর সই নয়। সেখান থেকেই বিষয়টি খতিয়ে দেখে তিনি নিজের উদ্যোগে নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর পুলিশ তদন্তে নেমে প্রশান্ত নাথকে গ্রেফতার করে।আইন আইনের পথে চলবে।