০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা, ৪৩ টি পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা ডেঙ্গু রোধে কড়া পুরসভা

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৮ জুন ২০২৩, বুধবার
  • / 22

পুবের কলম প্রতিবেদক: প্রত্যেক বছরই বর্ষা আসলে কলকাতা পুরসভার মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় মশাবাহিত রোগ। পুরসভার তরফ থেকে একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও শেষ কয়েকটা বছর ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া মৃত্যু শূন্য হয়নি। তাই এবছর বর্ষার শুরুতেই ডেঙ্গু রোধে কী কী করণীয়, তা নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক সেরেছে কলকাতা পুরসভা।

সেই বৈঠকে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পুরসভাকে। সেই মতো ইতিমধ্যেই তৎপরতা শুরু হয়েছে। তবে পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নাগরিকরা সতর্ক হলে তবেই মশাবাহিত রোগ নিধন সম্ভব। তাই সবরকম ভাবে তা নিশ্চিত করা হবে। সেক্ষত্রে আর আবেদন-নিবেদন নীতি নয়, বাড়ি থেকে লার্ভা মিললেই মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুরসভা। সঙ্গে মোটা অঙ্কের ফাইনও গুনতে হতে পারে।

সাম্প্রতিককালে গোটা শহর জুড়ে ড্রোন চালিয়ে একাধিক ছবি সংগ্রহ করে কলকাতা পুরসভা। তাতে দেখা গিয়েছে একাধিক জায়গায় বাড়ির ছাদে ট্যাঙ্কের মুখ খোলা, যেখানে থেকে মশা জন্মাচ্ছে। অন্যদিকে, শহরের একাধিক খালি জমিকে রীতিমত ভ্যাটে পরিনত করা হয়েছে। শহরের ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, পরিত্যক্ত জমি। আর তাই এবার পরিত্যক্ত জমি নিয়েই কড়া আইন চাইছে পুরসভা। সেবিষয়ে খুব শিগ্রই রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তবে বর্তমানে শুধু আবেদন-নিবেদন নীতিতেই থেমে নেই কর্তৃপক্ষ। পুরসভা সূত্রে খবর, তাই মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করে কর্তৃপক্ষ।

জানুয়ারি থেকে শুরু করে ২৭ জুন পর্যন্ত বাড়িতে ডেঙ্গুর মশার লার্ভা পাওয়া যাওয়ায় প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জনকে নোটিশ ধরানো হয়েছে। এছাড়া ৪৩ জনের বিরুদ্ধে ৪৯৬ এ ধারায় মামলা করা হয়েছে। এঁদের প্রত্যেকের বাড়িতেই ডেঙ্গুর লার্ভা মিলেছিল। এর পর নোটিশ ধরানো হলেও পরিষ্কার করা হয়নি। এরপরেই ৪৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুরসভা। তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে এই সংক্রান্ত কেসে মামলা হয় ২ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫০০ টি, ২০১৮ সালে ১৩ লক্ষ ৬ হাজার ৭৫০ জনের বিরুদ্ধে কেস করা হয়, ২০১৯ সালে সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ লক্ষ ২০ হাজার ৫০০ তে। এরপর ২০২০-২১ সালে করোনার জন্য ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তবে ২০২২ সালের শেষের দিকে ফের ২৩ টি মামলা দায়ের হয়।

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই পুরসভার তরফে সচেতনতার প্রচার শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সেই কর্মকান্ডের নমুনাও নাগরিকদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। ভ্রাম্যমান গাড়িতে এলইডি স্ক্রিন লাগিয়েও চলছে প্রচার। এক-এক দিন একটি করে ওয়ার্ড ঘুরছে এই গাড়ি। কীভাবে বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার রাখতে হবে, মশারি ব্যবহারের গুরুত্ব বোঝানো হচ্ছে।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা, ৪৩ টি পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা ডেঙ্গু রোধে কড়া পুরসভা

আপডেট : ২৮ জুন ২০২৩, বুধবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: প্রত্যেক বছরই বর্ষা আসলে কলকাতা পুরসভার মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় মশাবাহিত রোগ। পুরসভার তরফ থেকে একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও শেষ কয়েকটা বছর ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া মৃত্যু শূন্য হয়নি। তাই এবছর বর্ষার শুরুতেই ডেঙ্গু রোধে কী কী করণীয়, তা নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক সেরেছে কলকাতা পুরসভা।

সেই বৈঠকে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পুরসভাকে। সেই মতো ইতিমধ্যেই তৎপরতা শুরু হয়েছে। তবে পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নাগরিকরা সতর্ক হলে তবেই মশাবাহিত রোগ নিধন সম্ভব। তাই সবরকম ভাবে তা নিশ্চিত করা হবে। সেক্ষত্রে আর আবেদন-নিবেদন নীতি নয়, বাড়ি থেকে লার্ভা মিললেই মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুরসভা। সঙ্গে মোটা অঙ্কের ফাইনও গুনতে হতে পারে।

সাম্প্রতিককালে গোটা শহর জুড়ে ড্রোন চালিয়ে একাধিক ছবি সংগ্রহ করে কলকাতা পুরসভা। তাতে দেখা গিয়েছে একাধিক জায়গায় বাড়ির ছাদে ট্যাঙ্কের মুখ খোলা, যেখানে থেকে মশা জন্মাচ্ছে। অন্যদিকে, শহরের একাধিক খালি জমিকে রীতিমত ভ্যাটে পরিনত করা হয়েছে। শহরের ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, পরিত্যক্ত জমি। আর তাই এবার পরিত্যক্ত জমি নিয়েই কড়া আইন চাইছে পুরসভা। সেবিষয়ে খুব শিগ্রই রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তবে বর্তমানে শুধু আবেদন-নিবেদন নীতিতেই থেমে নেই কর্তৃপক্ষ। পুরসভা সূত্রে খবর, তাই মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করে কর্তৃপক্ষ।

জানুয়ারি থেকে শুরু করে ২৭ জুন পর্যন্ত বাড়িতে ডেঙ্গুর মশার লার্ভা পাওয়া যাওয়ায় প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জনকে নোটিশ ধরানো হয়েছে। এছাড়া ৪৩ জনের বিরুদ্ধে ৪৯৬ এ ধারায় মামলা করা হয়েছে। এঁদের প্রত্যেকের বাড়িতেই ডেঙ্গুর লার্ভা মিলেছিল। এর পর নোটিশ ধরানো হলেও পরিষ্কার করা হয়নি। এরপরেই ৪৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুরসভা। তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে এই সংক্রান্ত কেসে মামলা হয় ২ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫০০ টি, ২০১৮ সালে ১৩ লক্ষ ৬ হাজার ৭৫০ জনের বিরুদ্ধে কেস করা হয়, ২০১৯ সালে সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ লক্ষ ২০ হাজার ৫০০ তে। এরপর ২০২০-২১ সালে করোনার জন্য ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তবে ২০২২ সালের শেষের দিকে ফের ২৩ টি মামলা দায়ের হয়।

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই পুরসভার তরফে সচেতনতার প্রচার শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সেই কর্মকান্ডের নমুনাও নাগরিকদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। ভ্রাম্যমান গাড়িতে এলইডি স্ক্রিন লাগিয়েও চলছে প্রচার। এক-এক দিন একটি করে ওয়ার্ড ঘুরছে এই গাড়ি। কীভাবে বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার রাখতে হবে, মশারি ব্যবহারের গুরুত্ব বোঝানো হচ্ছে।