জন্মাষ্টমীতে হিন্দুদের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস

- আপডেট : ১৬ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার
- / 136
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানালেন অন্তরবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস। বার্তায় ইউনুস বলেন, শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষাই পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে তুলবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ধর্মাবতার শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন। সৃষ্টিকর্তার বন্দনা ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় শ্রীকৃষ্ণের দর্শন ও মূল্যবোধ সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সবাইকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য। আবহমানকাল থেকে এদেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তরবর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধনকে অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
আগস্টের শুরুতে শেখ হাসিনার পতনের পর ছাত্রছাত্রীদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলনের জেরেই বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার। সেই সময় থেকেই হিন্দু সম্প্রদায় ও তাঁদের উপাসনালয়ের ওপর একাধিক হামলার ঘটনা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বার্তায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা উঠে আসায় রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে তা বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
ইউনুস বলেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সমাজে ন্যায়, মানবিক সহমর্মিতা আর শান্তির শিক্ষা দিয়েছেন। যেখানে অন্যায় বা নির্যাতন ঘটেছে, সেখানেই তিনি আবির্ভূত হয়েছেন, সততার শক্তিকে রক্ষা করতে এবং অশুভকে প্রতিহত করতে। তাঁর দর্শন কেবল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নয়, সকল ধর্মাবলম্বীকেই অনুপ্রাণিত করে।
বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর পুজো কমিটির উদ্যেগে শনিবার সকাল থেকে ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শুরু হয়েছে শ্রীকৃষ্ণের জন্মোৎসব পালন। সকাল আটটায় শুরু হয় গীতাপাঠ। দেশবাসীর মঙ্গল কামনা করে চলছে যজ্ঞ। ঢাকা ছাড়াও রাজশাহী, খুলনা, যশোর, বরিশাল, সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লার মতো বড় শহর-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় জন্মাষ্টমী উপলক্ষে উৎসব-অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শতাধিক শোভাযাত্রার আয়েজন করা হবে।
প্রফেসর ইউনুসের এই বার্তায় বাংলাদেশের বৌদ্ধিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে লিখেছেন, জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বার্তার মাধ্যমে অন্তরবর্তীকালীন সরকার স্পষ্ট বার্তা দিল যে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা করাই তাঁদের অন্যতম দায়িত্ব।