২৭ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দিল্লি দাঙ্গা: উমর খালিদের বিরুদ্ধে মামলা ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি, সওয়াল আইনজীবীর

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৫ মে ২০২২, বুধবার
  • / 73

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  ২০২০ সালে দিল্লি দাঙ্গায় ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ তুলে প্রাক্তন জেএনইউ ছাত্রনেতা উমর খালিদকে গ্রেফতার করা হয়। বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনে খালিদকে অভিযুক্ত করে তার বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনের ধারায় মামলা দায়ের হয়। বিগত প্রায় দুবছর জেলবন্দি খালিদ।

ইতিমধ্যেই ট্রায়াল কোর্টে জামিন খারিজ হয়ে গিয়েছে খালিদের। এর পরেই উমর খালিদ ট্রায়াল কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন জানান।

আরও পড়ুন: ফের উমর খালিদ ও শারজিল ইমামের জামিনের বিরোধিতা করল দিল্লি পুলিশ

মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্টে শুনানি চলাকালীন উমর খালিদের প্রতিনিধিত্বকারী বর্ষীয়ান আইনজীবী ত্রিদীপ পাইস বলেন, তার মক্কেল উমর খালিদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে মামলা তৈরি করা হয়েছে। শুধুমাত্র শুনানির উপর ভিত্তি করে গত দুবছর ধরে উমর খালিদ কারাবন্দী। বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুল ও বিচারপতি রজনীশ ভাটনগরের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলার সময় এই যুক্তি দেন আইনজীবী ত্রিদীপ পাইস।

আরও পড়ুন: জামার বোতাম খোলা রাখার অপরাধে ৬ মাসের কারাদণ্ড আইনজীবীর

বর্ষীয়ান আইনজীবী পাইস পুলিশদের সাক্ষী, হোয়াটস অ্যাপ চ্যাট নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, সংহিসতার সঙ্গে সম্পর্কিত ৭৫১ টি এফআইআর ছিল। কিন্তু প্রকৃত সহিংসতার কোনও অভিযোগই উমর খালিদের সঙ্গে যুক্ত নয়। তার পরেও কেন আমার মক্কেল উমর খালিদকে দু বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে?

আরও পড়ুন: নতুন করে ওবিসি যাচাই করছে রাজ্য, মান্যতা দিয়ে মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য্য জুলাইয়ে

আইনজীবী ত্রিদীপ পাইস আদালতে শুনানি চলাকালীন বলেন, এটি এমন একটি মামলা যেখানে বিবৃতি নেওয়া হয়েছে ‘অভিযুক্ত’ করার জন্য। দিল্লি দাঙ্গায় সহিংসতার সঙ্গে উমর খালিদের কোনও সম্পর্ক নেই।
আইনজীবী পাইস বলেন, একটি অনায্য আইনের বিরুদ্ধে খালিদের প্রতিবাদ ছিল। কিন্তু উমর খালিদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-১৫ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। ইউএপিএ-১৫ ধারা হল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু খালিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীমূলক কাজের প্রমাণ মেলেনি। সে শুধু একটি প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছিল।

বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুলের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করেন, প্রতিবাদের সময় এতটাই ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল যে, যা সাধারণ মানুষে মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছিল?

আইনজীবী পাইস যুক্তি দিয়ে বলেন, পাইস জবাব দিয়েছিলেন যে অভিযোগপত্রে তা প্রতিফলিত হয় না। আর যদি এমন হয়, তাহলে প্রতিটি অপরাধমূলক কাজই সন্ত্রাসে পরিণত হবে।

আইনজীবী যুক্তি দিয়ে বলেন, তার মক্কেল খালিদকে যে অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে আর প্রমাণ হিসেবে দেখানো আর বিবৃতির মধ্যে কোনও মিল নেই। আদালতকে একটি বিবৃতি জমা দিয়ে আইনজীবী সওয়াল করে বলেন, ইউএপিএ-অধীনে জামিনের জন্য কঠোর পরীক্ষা তার মক্কেল উমর খালিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না, কারণ অভিযোগের সমর্থন করার মতো কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে দিল্লি সংঘর্ষের মামলায় অভিযুক্ত জেএনইউ-এর প্রাক্তন ছাত্র উমর খালিদের জামিনের আবেদন খারিজ দেয় দিল্লির একটি আদালত। যদিও জামিন খারিজের কোনও কারণ দেখায়নি কোর্ট। ২০২০-র সেপ্টেম্বর থেকে দিল্লির জেলে বন্দি খালিদ। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা চলছে।
২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে উত্তর-পূর্ব দিল্লির সংঘর্ষে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় শতাধিক মানুষ।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দিল্লি দাঙ্গা: উমর খালিদের বিরুদ্ধে মামলা ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি, সওয়াল আইনজীবীর

আপডেট : ২৫ মে ২০২২, বুধবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  ২০২০ সালে দিল্লি দাঙ্গায় ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ তুলে প্রাক্তন জেএনইউ ছাত্রনেতা উমর খালিদকে গ্রেফতার করা হয়। বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনে খালিদকে অভিযুক্ত করে তার বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনের ধারায় মামলা দায়ের হয়। বিগত প্রায় দুবছর জেলবন্দি খালিদ।

ইতিমধ্যেই ট্রায়াল কোর্টে জামিন খারিজ হয়ে গিয়েছে খালিদের। এর পরেই উমর খালিদ ট্রায়াল কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন জানান।

আরও পড়ুন: ফের উমর খালিদ ও শারজিল ইমামের জামিনের বিরোধিতা করল দিল্লি পুলিশ

মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্টে শুনানি চলাকালীন উমর খালিদের প্রতিনিধিত্বকারী বর্ষীয়ান আইনজীবী ত্রিদীপ পাইস বলেন, তার মক্কেল উমর খালিদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে মামলা তৈরি করা হয়েছে। শুধুমাত্র শুনানির উপর ভিত্তি করে গত দুবছর ধরে উমর খালিদ কারাবন্দী। বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুল ও বিচারপতি রজনীশ ভাটনগরের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলার সময় এই যুক্তি দেন আইনজীবী ত্রিদীপ পাইস।

আরও পড়ুন: জামার বোতাম খোলা রাখার অপরাধে ৬ মাসের কারাদণ্ড আইনজীবীর

বর্ষীয়ান আইনজীবী পাইস পুলিশদের সাক্ষী, হোয়াটস অ্যাপ চ্যাট নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, সংহিসতার সঙ্গে সম্পর্কিত ৭৫১ টি এফআইআর ছিল। কিন্তু প্রকৃত সহিংসতার কোনও অভিযোগই উমর খালিদের সঙ্গে যুক্ত নয়। তার পরেও কেন আমার মক্কেল উমর খালিদকে দু বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে?

আরও পড়ুন: নতুন করে ওবিসি যাচাই করছে রাজ্য, মান্যতা দিয়ে মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য্য জুলাইয়ে

আইনজীবী ত্রিদীপ পাইস আদালতে শুনানি চলাকালীন বলেন, এটি এমন একটি মামলা যেখানে বিবৃতি নেওয়া হয়েছে ‘অভিযুক্ত’ করার জন্য। দিল্লি দাঙ্গায় সহিংসতার সঙ্গে উমর খালিদের কোনও সম্পর্ক নেই।
আইনজীবী পাইস বলেন, একটি অনায্য আইনের বিরুদ্ধে খালিদের প্রতিবাদ ছিল। কিন্তু উমর খালিদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-১৫ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। ইউএপিএ-১৫ ধারা হল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু খালিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীমূলক কাজের প্রমাণ মেলেনি। সে শুধু একটি প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছিল।

বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুলের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করেন, প্রতিবাদের সময় এতটাই ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল যে, যা সাধারণ মানুষে মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছিল?

আইনজীবী পাইস যুক্তি দিয়ে বলেন, পাইস জবাব দিয়েছিলেন যে অভিযোগপত্রে তা প্রতিফলিত হয় না। আর যদি এমন হয়, তাহলে প্রতিটি অপরাধমূলক কাজই সন্ত্রাসে পরিণত হবে।

আইনজীবী যুক্তি দিয়ে বলেন, তার মক্কেল খালিদকে যে অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে আর প্রমাণ হিসেবে দেখানো আর বিবৃতির মধ্যে কোনও মিল নেই। আদালতকে একটি বিবৃতি জমা দিয়ে আইনজীবী সওয়াল করে বলেন, ইউএপিএ-অধীনে জামিনের জন্য কঠোর পরীক্ষা তার মক্কেল উমর খালিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না, কারণ অভিযোগের সমর্থন করার মতো কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে দিল্লি সংঘর্ষের মামলায় অভিযুক্ত জেএনইউ-এর প্রাক্তন ছাত্র উমর খালিদের জামিনের আবেদন খারিজ দেয় দিল্লির একটি আদালত। যদিও জামিন খারিজের কোনও কারণ দেখায়নি কোর্ট। ২০২০-র সেপ্টেম্বর থেকে দিল্লির জেলে বন্দি খালিদ। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা চলছে।
২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে উত্তর-পূর্ব দিল্লির সংঘর্ষে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় শতাধিক মানুষ।