২৫ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে আটক করল ঢাকা পুলিশ

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 73

 পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে আটক করল ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (DB)। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম। খায়রুলের বিরুদ্ধে বর্তমানে তিনটি মামলা রয়েছে, যার অন্তত একটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হবে বলে জানিয়েছে ‘প্রথম আলো’।

 

প্রাক্তন বিচারপতি খায়রুল হকের নাম ঘিরে বহুদিন ধরেই রাজনৈতিক বিতর্ক চলছিল। শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছিলেন, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়। সেই রায় নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। বিরোধী দল বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও জালিয়াতির অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল।

আরও পড়ুন: ওবিসি স্থগিতাদেশ চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য শীর্ষ কোর্টে, শুনানি সোমে

 

আরও পড়ুন: ওবিসি তালিকা ইস্যুতে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য, প্রধান বিচারপতির অনুমতি, শুনানি সোমবার

জানা গিয়েছে, ঢাকার যাত্রাবাড়ি ও নারায়ণগঞ্জে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলির মধ্যে রয়েছে আদালতের রায় ঘিরে জালজালিয়াতি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ। বিএনপি বহুবার প্রশ্ন তুলেছে— কেন এই অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও খায়রুল হকের বিরুদ্ধে এতদিন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন: এবার বাংলাদেশের পাশে ভারত, চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্ণ সহায়তা

 

প্রসঙ্গত, খায়রুল হক ছিলেন সেই বিচারক যাঁর রায়ের মাধ্যমে ফতোয়া ব্যবস্থাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি হাই কোর্টে থাকাকালীন শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে, জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার রায়-ও দেন তিনি। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০১১ সালের মে মাসে অবসর নেন।

 

অবসর গ্রহণের পর ২০১৩ সালে শেখ হাসিনার সরকার তাঁকে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ করে। প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য এই দায়িত্ব দেওয়া হলেও পরবর্তীতে তাঁর মেয়াদ একাধিকবার বাড়ানো হয়। গত বছর হাসিনা সরকার বাংলাদেশ ছাড়ার পর, ১৩ আগস্ট তিনি ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

 

প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি হিসেবে ক্ষমতায় থাকার সময় এবং পরবর্তী সময়ে খায়রুল হক যে রাজনৈতিক সুবিধা পেয়েছেন, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠছিল। এবার তাঁকে আটক করায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে ফের আলোড়ন তৈরি হয়েছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে আটক করল ঢাকা পুলিশ

আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার

 পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে আটক করল ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (DB)। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম। খায়রুলের বিরুদ্ধে বর্তমানে তিনটি মামলা রয়েছে, যার অন্তত একটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হবে বলে জানিয়েছে ‘প্রথম আলো’।

 

প্রাক্তন বিচারপতি খায়রুল হকের নাম ঘিরে বহুদিন ধরেই রাজনৈতিক বিতর্ক চলছিল। শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছিলেন, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়। সেই রায় নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। বিরোধী দল বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও জালিয়াতির অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল।

আরও পড়ুন: ওবিসি স্থগিতাদেশ চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য শীর্ষ কোর্টে, শুনানি সোমে

 

আরও পড়ুন: ওবিসি তালিকা ইস্যুতে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য, প্রধান বিচারপতির অনুমতি, শুনানি সোমবার

জানা গিয়েছে, ঢাকার যাত্রাবাড়ি ও নারায়ণগঞ্জে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলির মধ্যে রয়েছে আদালতের রায় ঘিরে জালজালিয়াতি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ। বিএনপি বহুবার প্রশ্ন তুলেছে— কেন এই অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও খায়রুল হকের বিরুদ্ধে এতদিন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন: এবার বাংলাদেশের পাশে ভারত, চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্ণ সহায়তা

 

প্রসঙ্গত, খায়রুল হক ছিলেন সেই বিচারক যাঁর রায়ের মাধ্যমে ফতোয়া ব্যবস্থাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি হাই কোর্টে থাকাকালীন শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে, জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার রায়-ও দেন তিনি। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০১১ সালের মে মাসে অবসর নেন।

 

অবসর গ্রহণের পর ২০১৩ সালে শেখ হাসিনার সরকার তাঁকে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ করে। প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য এই দায়িত্ব দেওয়া হলেও পরবর্তীতে তাঁর মেয়াদ একাধিকবার বাড়ানো হয়। গত বছর হাসিনা সরকার বাংলাদেশ ছাড়ার পর, ১৩ আগস্ট তিনি ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

 

প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি হিসেবে ক্ষমতায় থাকার সময় এবং পরবর্তী সময়ে খায়রুল হক যে রাজনৈতিক সুবিধা পেয়েছেন, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠছিল। এবার তাঁকে আটক করায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে ফের আলোড়ন তৈরি হয়েছে।