০৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিট সাফল্যে নিজের জেদকেই কৃতিত্ব দিতে চান জেলা টপার ফাইমা

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, শনিবার
  • / 28

সুবিদ আবদুল্লাহ্ঃ মা বিড়ি শ্রমিক। বিড়ি বাঁধাই করেই সংসার চলে তাদের। সাত বছর হল বাবা নেই। মেয়ে নিট-এ জেলা  টপার। পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘু প্রধান জেলা উত্তর দিনাজপুরের নিট পড়ুয়াদের  এবার স্বপ্ন দেখালেন ফাইমা বেগম।জেলার করনদিঘী ব্লকের হলদিবাড়ি গ্রামের ফাইমা মাধ্যমিকেও জেলায় প্রথম হয়েছিলেন। সেটা ছিল দোমহনা জিডি মিশনের সাফল্য। এরপর উচ্চমাধ্যমিকে জেলা টপার হলেও ফাইমা বেগম কৃতিত্ব দিতে চান আল-আমীন মিশনকে। তবে নিট-সাফল্যের জন্য নিজের জেদকে কৃতিত্ব দিতে চান ফাইমা।হলদিবাড়ি গ্রামের পোড়ো বাড়িতে বসে ফাইমা ছলছল চোখে স্মরণ করলেন যে ব্যক্তিকে, তিনি হলেন দোমহনা জিডি মিশনের সম্পাদক সমাজসেবী জানে আলম। ফাইমার কথায়, ‘পিতৃপ্রতীম জানে আলম সাহেব আমার ভেতরে জেদের বীজ বপন না করলে আজকের এই সাফল্য আসত না।’

 

আরও পড়ুন: বস্ত্রমেলার সাফল্যে লাভের মুখ দেখছেন পোশাক ব্যবসায়ীরা

প্রসঙ্গতঃ ফাইমা জানান, প্রাথমিকের পড়া শেষ করে উচ্চশিক্ষা নেবার সাহস পাচ্ছিলাম না। জানে আলম সাহেব কম বেতনে তাঁর আবাসিক মিশনে নিলেন। ক্লাস ফাইভের পর পড়া ছেড়ে দিতে চাইলাম আর্থিক কারনে। তখন জানে আলম সাহেব বিনা বেতনে পড়ানোর দায়িত্ব নিলেন। স্বপ্ন দেখালেন বড় কিছু করার, বড় কিছু হওয়ার।

আরও পড়ুন: ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায়  নজরকাড়া সাফল্য কাশ্মীরি ইমাম কন্যাদের     

 

আরও পড়ুন: ইউপিএসসিতে মুসলিমদের সাফল্যের হার নিম্নগামী, বলছে পরিসংখ্যান

সপ্তম শ্রেণিতে বাবাকে হারানোর পর কার্যত বাবার দায়িত্ব নিলেন মিশন সম্পাদক। তাঁর নজরদারিতেই মাধ্যমিকে ৯৩.১৪ শতাংশ নম্বর নিয়ে হলাম জেলার সেরা। তারপর থেকে আল-আমীন মিশন। আল-আমীন মিশনের বর্ধমান ব্রাঞ্চ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক। সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম নিজের দায়িত্বে নিট পড়ান। ফাইমা নিট স্টাডি করেন (প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি) আল-আমীন মিশনের খলৎপুর মেইন ব্রাঞ্চে থেকে। নিট প্রবেশিকায় নম্বর পেয়েছেন ৬৪৪। সর্বভারতীয় স্তরে র‌্যাঙ্ক ৫,৭৭১।

 

বিড়িতে সুতো বাঁধতে বাঁধতে মা নাজেমা বিবি জানান, দোমহনা জিডি মিশনে ভিত গড়ে না উঠলে ফাইমা মাধ্যমিকে জেলা সেরা হতে পারত না। পাশাপাশি নুরুল ইসলাম সাহেব পাশে না থাকলে উচ্চমাধ্যমিক ও নিট-এ জেলা সেরা হতে পারত না। নিট-এর মত সর্বভারতীয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে নুরুল সাহেব সঙ্গে না থাকলে মেয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে যেত।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নিট সাফল্যে নিজের জেদকেই কৃতিত্ব দিতে চান জেলা টপার ফাইমা

আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, শনিবার

সুবিদ আবদুল্লাহ্ঃ মা বিড়ি শ্রমিক। বিড়ি বাঁধাই করেই সংসার চলে তাদের। সাত বছর হল বাবা নেই। মেয়ে নিট-এ জেলা  টপার। পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘু প্রধান জেলা উত্তর দিনাজপুরের নিট পড়ুয়াদের  এবার স্বপ্ন দেখালেন ফাইমা বেগম।জেলার করনদিঘী ব্লকের হলদিবাড়ি গ্রামের ফাইমা মাধ্যমিকেও জেলায় প্রথম হয়েছিলেন। সেটা ছিল দোমহনা জিডি মিশনের সাফল্য। এরপর উচ্চমাধ্যমিকে জেলা টপার হলেও ফাইমা বেগম কৃতিত্ব দিতে চান আল-আমীন মিশনকে। তবে নিট-সাফল্যের জন্য নিজের জেদকে কৃতিত্ব দিতে চান ফাইমা।হলদিবাড়ি গ্রামের পোড়ো বাড়িতে বসে ফাইমা ছলছল চোখে স্মরণ করলেন যে ব্যক্তিকে, তিনি হলেন দোমহনা জিডি মিশনের সম্পাদক সমাজসেবী জানে আলম। ফাইমার কথায়, ‘পিতৃপ্রতীম জানে আলম সাহেব আমার ভেতরে জেদের বীজ বপন না করলে আজকের এই সাফল্য আসত না।’

 

আরও পড়ুন: বস্ত্রমেলার সাফল্যে লাভের মুখ দেখছেন পোশাক ব্যবসায়ীরা

প্রসঙ্গতঃ ফাইমা জানান, প্রাথমিকের পড়া শেষ করে উচ্চশিক্ষা নেবার সাহস পাচ্ছিলাম না। জানে আলম সাহেব কম বেতনে তাঁর আবাসিক মিশনে নিলেন। ক্লাস ফাইভের পর পড়া ছেড়ে দিতে চাইলাম আর্থিক কারনে। তখন জানে আলম সাহেব বিনা বেতনে পড়ানোর দায়িত্ব নিলেন। স্বপ্ন দেখালেন বড় কিছু করার, বড় কিছু হওয়ার।

আরও পড়ুন: ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায়  নজরকাড়া সাফল্য কাশ্মীরি ইমাম কন্যাদের     

 

আরও পড়ুন: ইউপিএসসিতে মুসলিমদের সাফল্যের হার নিম্নগামী, বলছে পরিসংখ্যান

সপ্তম শ্রেণিতে বাবাকে হারানোর পর কার্যত বাবার দায়িত্ব নিলেন মিশন সম্পাদক। তাঁর নজরদারিতেই মাধ্যমিকে ৯৩.১৪ শতাংশ নম্বর নিয়ে হলাম জেলার সেরা। তারপর থেকে আল-আমীন মিশন। আল-আমীন মিশনের বর্ধমান ব্রাঞ্চ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক। সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম নিজের দায়িত্বে নিট পড়ান। ফাইমা নিট স্টাডি করেন (প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি) আল-আমীন মিশনের খলৎপুর মেইন ব্রাঞ্চে থেকে। নিট প্রবেশিকায় নম্বর পেয়েছেন ৬৪৪। সর্বভারতীয় স্তরে র‌্যাঙ্ক ৫,৭৭১।

 

বিড়িতে সুতো বাঁধতে বাঁধতে মা নাজেমা বিবি জানান, দোমহনা জিডি মিশনে ভিত গড়ে না উঠলে ফাইমা মাধ্যমিকে জেলা সেরা হতে পারত না। পাশাপাশি নুরুল ইসলাম সাহেব পাশে না থাকলে উচ্চমাধ্যমিক ও নিট-এ জেলা সেরা হতে পারত না। নিট-এর মত সর্বভারতীয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে নুরুল সাহেব সঙ্গে না থাকলে মেয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে যেত।