২৪ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পের ভিসা নীতির কারণে গ্যালারি ফাঁকা থাকছে ক্লাব বিশ্বকাপে

চামেলি দাস
  • আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 271

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বেশ ঢাকঢোল পিটিয়ে নতুন ফর্ম্যাটের ক্লাব বিশ্বকাপ শুরু করেছে ফিফা। বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলিকে নিয়ে নতুন মোড়কে আরও একটা বিশ্বকাপ শুরু করে তারা। সেই মতো টুর্নামেন্টের রেকর্ড প্রাইজমানি (১ বিলিয়ন ডলার) রেখে ফিফা সবাইকে চমকে পর্যন্ত দিয়েছিল।

একই সঙ্গে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেছিলেন, ‘এটা হবে ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় উৎসব।’ অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সবটাই ফাঁকা বুলি। এই টুর্নামেন্টকে ঘিরে এই মুহূর্তে কারোর কোনও আগ্রহ নেই। মাঠে রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি, বায়ার্ন মিউনিখের মতো দল নামলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্যালারি থাকছে ফাঁকা। গত সোমবার আটলান্টার মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়ামে লস অ্যাঞ্জেলেস এফসির চেলসির ম্যাচে তো গোটা স্টেডিয়াম খালি ছিল। যা দেখে চেলসির কোচ এনজো মারেসকা জানিয়েছিলেন, খুবই অদ্ভুত লাগছে গ্যালারির এই হাল দেখে।

মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়ামের লোকধারণ ক্ষমতা ৭০ হাজারের বেশি। চেলসি-এলএএফসির ম্যাচ দেখতে সেদিন গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২২ হাজার দর্শক। এতে মাঠের তিন ভাগের এক ভাগও ভরেনি দর্শক। ইউরোপজুড়ে ভরা গ্যালারির উন্মাদনায় খেলে অভ্যস্ত চেলসি ওই রকম ফাঁকা মাঠে খেলছে দেখে হতাশ হয়েছেন অনেকেই। অথচ ম্যাচটা ছিল ক্লাব বিশ্বকাপের।

আরও পড়ুন: প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে খোঁচা দিয়ে নোবেল ঘোষণার আগে যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি ট্রাম্পের

শুধু ওই ম্যাচ নয়, এখন পর্যন্ত ক্লাব বিশ্বকাপের বেশির ভাগ ম্যাচেই গ্যালারি ফাঁকা থেকেছে। আটলান্টা, সিয়াটল, নিউ জার্সি, অরল্যান্ডোর ম্যাচগুলিতেও গ্যালারিতে একই দৃশ্য। টুর্নামেন্টের শেষ ১২টি ম্যাচের কোনোটিতেই স্টেডিয়াম ভরেনি। অর্ধেকও ভরেনি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। ফিফার অন্যতম পছন্দের টুর্নামেন্টের এই হাল দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। প্রতিটা ম্যাচে গ্যালারি ফাঁকা থাকছে কেন? কেউ কেউ মনে করছেন, টিকিটের দামে আকাশছোঁয়া হওয়া। ফিফা শুরুতে ভেবেছিল, আমেরিকানরা তো টাকা খরচ করতে ভালোবাসে, তাই ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে বিপুল সংখ্যক মানুষ মাঠে আসবেন। অথচ শেষ পর্যন্ত টিকিটের দাম অনেকাংশ কমিয়েও মাঠে লোক হচ্ছে না।

আরও পড়ুন: মোদির বজ্রকন্ঠ কেড়ে নিয়েছেন Donald Trump: জয়রাম রমেশ

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সাধারণ গ্রুপ ম্যাচের টিকিট ১০০ ডলারের ওপর। এর সঙ্গে থাকছে খাবার, পানীয়, পার্কিং। সব মিলিয়ে এক ম্যাচ দেখতে যে খরচ দাঁড়ায়, সেটা নাকি যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল সমর্থকদের কাছে খুবই নগন্য। অথচ টিকিটই বিক্রিবাট্টা একদমই হচ্ছে না ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচের। একটি সূত্র অবশ্য এই ক্লাব বিশ্বকাপের প্রতি সমর্থকদের আগ্রহ না থাকার পিছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া ভিসা নীতিকেই দায়ী করছে।

আরও পড়ুন: ভারত ও চিনের উপর ১০০% শুল্ক আরোপের জন্য ইইউ-কে চাপ ট্রাম্পের

তাদের মতে, ক্লাব বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা ৩২টি ক্লাবের বহু সমর্থকই নিজের পকেটের টাকা খরচ করে আমেরিকায় গিয়ে খেলা দেখতে চেয়েছিলেন। বিশেষ করে দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার দেশগুলিতে এই টুর্নামেন্ট নিয়ে বেশ উন্মাদনা ছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবিত লাল তালিকাভুক্ত থাকা দেশ ইরান, আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, ভুটান, কিউবা, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, মিশর, ভেনেজুয়েলা, ইয়েমেনের ফুটবলপ্রেমীরা আমেরিকায় প্রবেশের অনুমতি পাননি।

এ ব্যাপারে কায়রোর ২৮ বছর বয়সী গামাল হোসনি বলেন, ‘আমি আমার প্রিয় ক্লাব আল আহলির খেলা দেখতে চেয়েছিলাম। সেই মতো যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদন করেছিলাম। ১৮৫ ডলার ফি ও দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার আবেদন তারা বাতিল করে দেয়। তাই সেখানে যেতে পারিনি।’

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ট্রাম্পের ভিসা নীতির কারণে গ্যালারি ফাঁকা থাকছে ক্লাব বিশ্বকাপে

আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বেশ ঢাকঢোল পিটিয়ে নতুন ফর্ম্যাটের ক্লাব বিশ্বকাপ শুরু করেছে ফিফা। বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলিকে নিয়ে নতুন মোড়কে আরও একটা বিশ্বকাপ শুরু করে তারা। সেই মতো টুর্নামেন্টের রেকর্ড প্রাইজমানি (১ বিলিয়ন ডলার) রেখে ফিফা সবাইকে চমকে পর্যন্ত দিয়েছিল।

একই সঙ্গে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেছিলেন, ‘এটা হবে ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় উৎসব।’ অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সবটাই ফাঁকা বুলি। এই টুর্নামেন্টকে ঘিরে এই মুহূর্তে কারোর কোনও আগ্রহ নেই। মাঠে রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি, বায়ার্ন মিউনিখের মতো দল নামলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্যালারি থাকছে ফাঁকা। গত সোমবার আটলান্টার মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়ামে লস অ্যাঞ্জেলেস এফসির চেলসির ম্যাচে তো গোটা স্টেডিয়াম খালি ছিল। যা দেখে চেলসির কোচ এনজো মারেসকা জানিয়েছিলেন, খুবই অদ্ভুত লাগছে গ্যালারির এই হাল দেখে।

মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়ামের লোকধারণ ক্ষমতা ৭০ হাজারের বেশি। চেলসি-এলএএফসির ম্যাচ দেখতে সেদিন গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২২ হাজার দর্শক। এতে মাঠের তিন ভাগের এক ভাগও ভরেনি দর্শক। ইউরোপজুড়ে ভরা গ্যালারির উন্মাদনায় খেলে অভ্যস্ত চেলসি ওই রকম ফাঁকা মাঠে খেলছে দেখে হতাশ হয়েছেন অনেকেই। অথচ ম্যাচটা ছিল ক্লাব বিশ্বকাপের।

আরও পড়ুন: প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে খোঁচা দিয়ে নোবেল ঘোষণার আগে যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি ট্রাম্পের

শুধু ওই ম্যাচ নয়, এখন পর্যন্ত ক্লাব বিশ্বকাপের বেশির ভাগ ম্যাচেই গ্যালারি ফাঁকা থেকেছে। আটলান্টা, সিয়াটল, নিউ জার্সি, অরল্যান্ডোর ম্যাচগুলিতেও গ্যালারিতে একই দৃশ্য। টুর্নামেন্টের শেষ ১২টি ম্যাচের কোনোটিতেই স্টেডিয়াম ভরেনি। অর্ধেকও ভরেনি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। ফিফার অন্যতম পছন্দের টুর্নামেন্টের এই হাল দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। প্রতিটা ম্যাচে গ্যালারি ফাঁকা থাকছে কেন? কেউ কেউ মনে করছেন, টিকিটের দামে আকাশছোঁয়া হওয়া। ফিফা শুরুতে ভেবেছিল, আমেরিকানরা তো টাকা খরচ করতে ভালোবাসে, তাই ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে বিপুল সংখ্যক মানুষ মাঠে আসবেন। অথচ শেষ পর্যন্ত টিকিটের দাম অনেকাংশ কমিয়েও মাঠে লোক হচ্ছে না।

আরও পড়ুন: মোদির বজ্রকন্ঠ কেড়ে নিয়েছেন Donald Trump: জয়রাম রমেশ

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সাধারণ গ্রুপ ম্যাচের টিকিট ১০০ ডলারের ওপর। এর সঙ্গে থাকছে খাবার, পানীয়, পার্কিং। সব মিলিয়ে এক ম্যাচ দেখতে যে খরচ দাঁড়ায়, সেটা নাকি যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল সমর্থকদের কাছে খুবই নগন্য। অথচ টিকিটই বিক্রিবাট্টা একদমই হচ্ছে না ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচের। একটি সূত্র অবশ্য এই ক্লাব বিশ্বকাপের প্রতি সমর্থকদের আগ্রহ না থাকার পিছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া ভিসা নীতিকেই দায়ী করছে।

আরও পড়ুন: ভারত ও চিনের উপর ১০০% শুল্ক আরোপের জন্য ইইউ-কে চাপ ট্রাম্পের

তাদের মতে, ক্লাব বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা ৩২টি ক্লাবের বহু সমর্থকই নিজের পকেটের টাকা খরচ করে আমেরিকায় গিয়ে খেলা দেখতে চেয়েছিলেন। বিশেষ করে দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার দেশগুলিতে এই টুর্নামেন্ট নিয়ে বেশ উন্মাদনা ছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবিত লাল তালিকাভুক্ত থাকা দেশ ইরান, আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, ভুটান, কিউবা, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, মিশর, ভেনেজুয়েলা, ইয়েমেনের ফুটবলপ্রেমীরা আমেরিকায় প্রবেশের অনুমতি পাননি।

এ ব্যাপারে কায়রোর ২৮ বছর বয়সী গামাল হোসনি বলেন, ‘আমি আমার প্রিয় ক্লাব আল আহলির খেলা দেখতে চেয়েছিলাম। সেই মতো যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদন করেছিলাম। ১৮৫ ডলার ফি ও দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার আবেদন তারা বাতিল করে দেয়। তাই সেখানে যেতে পারিনি।’