ভারতে মুসলিম নির্যাতন, চুপ কেন ট্রাম্প, প্রশ্ন মানবাধিকার সংস্থার

- আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবার
- / 214
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভারতে মুসলিমদের উপর নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিতে বলল আমেরিকার ‘জাস্টিস ফর অল’ মানবাধিকার সংস্থা। এটি বিশ্ব পর্যায়ের একটি নামকরা মানবাধিকার সংস্থা।
এই সংস্থার প্রেসিডেন্ট ইমাম আবদুল মালিক মুজাহিদ ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে গুজরাত এবং উত্তর প্রদেশের দু’টি ঘটনার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেছেন, আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের ভাবা উচিত, ভারতকে ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণের দায়ে ‘কান্ট্রি অফ পার্টিকুলার কনসার্ন’ হিসেবে ঘোষণা করা যায় কি না।
একইসঙ্গে আমেরিকা ভারতের সঙ্গে আগামী দিনে কোনও চুক্তি করার আগে যেন সেদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা কতটা লঙ্ঘিত হচ্ছে, তা বিচার করেই চুক্তি-টুক্তি করে। এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন এবং মানবাধিকার হরণের প্রতি নজর রাখতে আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রক একজন বিশেষ উপদেষ্টা নিয়োগ করুক।
ভারতে সাম্প্রতিক যে দু’টি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার একটি ঘটেছে গুজরাতে। সেখানে গত ২২ মে কোনও রকম বিচারবিভাগের নির্দেশ বা আগাম আইনি নোটিশের তোয়াক্কা না করে ৮০০০ এর মতো মুসলিমকে উচ্ছেদ করে তাঁদের ঘরবাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
‘জাতীয় নিরাপত্তার’ অজুহাত দিয়ে গুজরাতের দীর্ঘকালের বাসিন্দা এইসব মানুষের উপর অনুপ্রবেশকারী তকমা দেগে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে এর ঠিক দুদিন পরে, ২৪ মে তারিখে। উত্তরপ্রদেশে কয়েকজন মুসলিম যুবক মাংস নিয়ে গাড়ি করে যাচ্ছিল, তাদের তথাকথিত গোরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা বেধড়ক পেটায়।
ওদের মারা হয়েছিল, ওরা গাড়ি করে গো-মাংস নিয়ে যাচ্ছিল এই অভিযোগ করে। কিন্তু পরে ওই মাংস ফরেনসিক পরীক্ষা করে দেখা যায়, তা গো-মাংস নয়। অথচ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। জাস্টিস ফর অল সংগঠনের শাখা ‘ সেভ ইন্ডিয়া ফ্রম ফ্যাসিজম’-এর প্রধান জাহির আদিল অভিযোগ করেছেন, ‘ এই দু’টি ঘটনা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এমন ঘটনা হামেশাই ঘটছে ভারতে।
উন্মত্ত জনতার হিংসা, সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে মিথ্যে অভিযোগ তুলে হেনস্থা করা, বুলডোজারে বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকা এই বিষয়ে চোখ বুঁজে থাকতে পারে না’। অন্যদিকে মুজাহিদ বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের সর্বত্র ধর্মীয় স্বাধীনতার পক্ষে জোরালোভাবে কথা বলছেন।
২০১৮ সালে তিনিই প্রথম আমেরিকায় মন্ত্রিসভায় ‘অ্যাডভান্সড রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ দফতর খোলেন। আজ সময় এসেছে আমেরিকার সংখ্যালঘুদের পক্ষে দাঁড়ানোর, ন্যায়কে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার। আমেরিকা সরাসরি জানিয়ে দিক, যে দেশ নিজেকে গণতান্ত্রিক দেশ বলে দাবি করে সেই দেশে বুলডোজারের রাজনীতি এবং সমাজের এক বড় অংশের মানুষকে অবজ্ঞা করার কোনও অধিকার নেই।