০৯ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ ১০ বছরে ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২ লক্ষ ৬০ হাজার, রিপোর্ট দিল এনসিআরবি

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৫ জুন ২০২৩, সোমবার
  • / 154

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ১৯৮১ সালের পর ২০২৩ সাল। ওড়িশায় বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনা শতাব্দীর সবচেয়ে বড় মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী বহন করল। রেল, কেন্দ্র, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে দুর্ঘটনায় যে মানুষগুলি চলে গেলেন সেই শূন্যস্থান কোনোদিন আর পূরণ হওয়ার নয়। চারদিকে শুধুই আর্তনাদ, আর প্রিয়জনকে হারিয়ে আজ নিঃস্বপরিবারগুলি।
গত ২ জুন, শুক্রবার ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ওড়িশা সরকারের দাবি, মৃত্যু হয়েছে ২৮৮ জনের আহতের সংখ্যা ৯০০। প্রশ্নের মুখে ভারতীয় রেলের নিরাপত্তা।

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড (এনসিআরবি) এর সমীক্ষা অনুযায়ী দীর্ঘ ১০ বছরে রেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ট্রেন থেকে পড়ে বা চাপা পড়ে। এনসিআরবি’র সমীক্ষা বলছে, গত ১০ বছরে ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রায় দুলক্ষ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।  সংখ্যা সত্যিই ভয়াবহ। ভারত সরকারের একটি নির্ভরযোগ্য এজেন্সি হল এনসিআরবি, যারা অপরাধ তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের কাজ করে থাকে।
সমীক্ষা অনুযায়ী ২০১৭-২১ সালের প্রায় ৭০ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে ট্রেন থেকে ছিটকে পড়ে গিয়ে। এনসিআরবি ট্রেন দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুকে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। এর মধ্যে হল লাইনচ্যুত, ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, বিস্ফোরণ বা অগ্নিকাণ্ড, ট্রেন থেকে ছিটকে পড়ে যাওয়া, ট্র্যাকে ট্রেনের সংঘর্ষ।

আরও পড়ুন: চতুর্থ স্তম্ভবের ওপর আঘাত, ভারতে বন্ধ হল রয়টার্সের এক্স অ্যাকাউন্ট

পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১১ সালে দুর্ঘটনাজনিত ও আত্মহত্যার কারণে নিহতের সংখ্যা ২৫, ৮৭২। ২০১২-এ সেই সংখ্যা পৌঁছায় ২৭ হাজারে, ২০১৩-তে নিহতের সংখ্যা ২৭,৭৬৫ ও ২০১৪ সালে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২৫ হাজারে নেমে আসে। ২০১৭ সালে নিহতের সংখ্যা ছিল ২৪ হাজারে, ২০১৯ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৪,৬১৯। ২০২০ সালে করোনাকালে ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১১, ৯৬৮। ফের ২০২১ সালে সেই সংখ্যা ২৭ শতাংশ বেড়ে গিয়ে নিহতের সংখ্যা পৌঁছে যায় ১৬, ৪৩১-এ।

আরও পড়ুন: করোনা পরবর্তী ভারতে একাকীত্ব বড় সমস্যা! শহুরে যুবক-যুবতীরা বেশি ভুগছেন একাকীত্বে! রিপোর্টে প্রকাশিত

এনসিআরবি অনুসারে, ২০২১ সালে রেল দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যুর মধ্যে ১১,০৩৬। এই মৃত্যুগুলি উপরিউক্ত বিভাগগুলির অধীনে পড়েছে তারপরে ৫,২৮৭টি, তবে ‘অন্যান্য মামলাও রয়েছে। তবে অন্যান্য মামলাগুলির কারণ নির্দিষ্ট করা হয়নি। ২০২১ সালে ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৮৬ ও লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় ২২ জন মারা গেছে।

আরও পড়ুন: ফ্রান্সের পর প্রথম ভারতে তৈরি হবে ফ্যালকন জেট

রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে রেল দুর্ঘটনায় শীর্ষ স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। এই রাজ্যে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ১৭ হাজার হতাহত হয়েছে। এর পরে রয়েছে উত্তর প্রদেশ (১৩,০৭৪) এবং পশ্চিমবঙ্গ (১১,৯৬৭)৷ সেই সময়ের সঙ্গে তুলনা করে ওড়িশায় মৃত্যুর সংখ্যা সর্বনিম্ন, মাত্র ১৮৪৬ জন মারা গেছে।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দীর্ঘ ১০ বছরে ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২ লক্ষ ৬০ হাজার, রিপোর্ট দিল এনসিআরবি

আপডেট : ৫ জুন ২০২৩, সোমবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ১৯৮১ সালের পর ২০২৩ সাল। ওড়িশায় বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনা শতাব্দীর সবচেয়ে বড় মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী বহন করল। রেল, কেন্দ্র, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে দুর্ঘটনায় যে মানুষগুলি চলে গেলেন সেই শূন্যস্থান কোনোদিন আর পূরণ হওয়ার নয়। চারদিকে শুধুই আর্তনাদ, আর প্রিয়জনকে হারিয়ে আজ নিঃস্বপরিবারগুলি।
গত ২ জুন, শুক্রবার ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ওড়িশা সরকারের দাবি, মৃত্যু হয়েছে ২৮৮ জনের আহতের সংখ্যা ৯০০। প্রশ্নের মুখে ভারতীয় রেলের নিরাপত্তা।

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড (এনসিআরবি) এর সমীক্ষা অনুযায়ী দীর্ঘ ১০ বছরে রেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ট্রেন থেকে পড়ে বা চাপা পড়ে। এনসিআরবি’র সমীক্ষা বলছে, গত ১০ বছরে ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রায় দুলক্ষ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।  সংখ্যা সত্যিই ভয়াবহ। ভারত সরকারের একটি নির্ভরযোগ্য এজেন্সি হল এনসিআরবি, যারা অপরাধ তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের কাজ করে থাকে।
সমীক্ষা অনুযায়ী ২০১৭-২১ সালের প্রায় ৭০ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে ট্রেন থেকে ছিটকে পড়ে গিয়ে। এনসিআরবি ট্রেন দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুকে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। এর মধ্যে হল লাইনচ্যুত, ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, বিস্ফোরণ বা অগ্নিকাণ্ড, ট্রেন থেকে ছিটকে পড়ে যাওয়া, ট্র্যাকে ট্রেনের সংঘর্ষ।

আরও পড়ুন: চতুর্থ স্তম্ভবের ওপর আঘাত, ভারতে বন্ধ হল রয়টার্সের এক্স অ্যাকাউন্ট

পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১১ সালে দুর্ঘটনাজনিত ও আত্মহত্যার কারণে নিহতের সংখ্যা ২৫, ৮৭২। ২০১২-এ সেই সংখ্যা পৌঁছায় ২৭ হাজারে, ২০১৩-তে নিহতের সংখ্যা ২৭,৭৬৫ ও ২০১৪ সালে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২৫ হাজারে নেমে আসে। ২০১৭ সালে নিহতের সংখ্যা ছিল ২৪ হাজারে, ২০১৯ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৪,৬১৯। ২০২০ সালে করোনাকালে ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১১, ৯৬৮। ফের ২০২১ সালে সেই সংখ্যা ২৭ শতাংশ বেড়ে গিয়ে নিহতের সংখ্যা পৌঁছে যায় ১৬, ৪৩১-এ।

আরও পড়ুন: করোনা পরবর্তী ভারতে একাকীত্ব বড় সমস্যা! শহুরে যুবক-যুবতীরা বেশি ভুগছেন একাকীত্বে! রিপোর্টে প্রকাশিত

এনসিআরবি অনুসারে, ২০২১ সালে রেল দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যুর মধ্যে ১১,০৩৬। এই মৃত্যুগুলি উপরিউক্ত বিভাগগুলির অধীনে পড়েছে তারপরে ৫,২৮৭টি, তবে ‘অন্যান্য মামলাও রয়েছে। তবে অন্যান্য মামলাগুলির কারণ নির্দিষ্ট করা হয়নি। ২০২১ সালে ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৮৬ ও লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় ২২ জন মারা গেছে।

আরও পড়ুন: ফ্রান্সের পর প্রথম ভারতে তৈরি হবে ফ্যালকন জেট

রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে রেল দুর্ঘটনায় শীর্ষ স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। এই রাজ্যে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ১৭ হাজার হতাহত হয়েছে। এর পরে রয়েছে উত্তর প্রদেশ (১৩,০৭৪) এবং পশ্চিমবঙ্গ (১১,৯৬৭)৷ সেই সময়ের সঙ্গে তুলনা করে ওড়িশায় মৃত্যুর সংখ্যা সর্বনিম্ন, মাত্র ১৮৪৬ জন মারা গেছে।