০২ মে ২০২৫, শুক্রবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলার পথে কেরল, রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে সরাতে সিদ্ধান্ত বিজয়ন সরকারের

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার
  • / 16

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: রাজ্যপালের সঙ্গে চলমান বিতর্কে ইতি টানতে বাংলার তৃণমূল সরকারের পথ অনুসরণ কেরলের বাম সরকারের। রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের তীব্র বিরোধের জেরে শেষমেশ অর্ডিন্যান্স আনতে চলেছে কেরলের বিজয়ন মন্ত্রিসভা।

 

এর মাধ্যমে রাজ্যটির সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বা আচার্য পদ থেকে সরানো হবে রাজ্যপাল আরিফ মুহাম্মদ খানকে। কয়েক মাস আগে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের সঙ্গে যখন তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছিল, তখন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীকে সমস্ত রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে বসানোর জন্য বিল পাস করেছিল তৃণমূল সরকার। তারপর সেই বিল রাজ্যপালের কাছে স্বাক্ষরের জন্য পড়ে রয়েছে আইন হওয়ার অপেক্ষায়।

 

তবে কেরল সরকার অবিলম্বে আরিফকে শিক্ষাব্যবস্থায় নাক গলানোর কর্মকাণ্ড থেকে দূরে হটাতে অধ্যাদেশ জারি করতে চলেছে। বুধবার বিজয়ন ক্যাবিনেট একটি বৈঠক করার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বাংলার মতো আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রী বসবেন না

কেরলের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী আর বিন্দু জানিয়েছেন, এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে খ্যাতনামা কোনও শিক্ষাবিদ বা শিক্ষা-ব্যক্তিত্বকে চ্যান্সেলর পদে নিয়োগ করা হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এই অর্ডিন্যান্স পাস করাতে লাগবে রাজ্যপালের স্বাক্ষর। তার সঙ্গে এখন আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক বিজয়ন সরকারের।

 

তিনি কি এতে স্বাক্ষর করবেন, এটাই বড় প্রশ্ন। রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব মেনে অর্ডিন্যান্সে স্বাক্ষর করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী বিন্দু।

এ দিকে তাকে সরানোর জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করা হবে, এই খবর পেয়ে আরিফ মুহাম্মদ খান প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, যেহেতু এই অর্ডিন্যান্স আমার বিরুদ্ধে, তাই আমি এটার বিচার করতে পারব না। আমি এটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেব।

 

উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হলেও রাজ্যপাল আরিফ মুহাম্মদ খানের সঙ্গে ফুটন্ত সম্পর্কের জন্যই এমন করা হচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলের মত। সংঘ-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বারবার হস্তক্ষেপ করছিলেন।

 

কেরলের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির নিয়ম মেনে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়নি বলে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট একটি শুনানিতে জানিয়েছিল। তারপরই রাজ্যপাল ১০ জন উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। এই ইস্যু নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের বিবাদ চরমে ওঠে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও জগদীপ ধনকরের মতো পিনারাই বিজয়ন ও আরিফ মুহাম্মদ খানের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছে বেশ কিছুদিন ধরে।

 

পরবর্তীতে ধনকর উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হলে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল তৃণমূল। এমনকী ধনকরের বিরুদ্ধে নির্বাচনে ভোটদান থেকে বিরত ছিল বিরোধী শিবিরের তৃণমূল কংগ্রেস। এর মাধ্যমেই ধনকরের সঙ্গে বিতর্কের ইতি ঘটেছিল বলে মনে করা হয়। কেরলে সেটা কতদূর গড়াবে, তা সময়ের অপেক্ষা। তবে রাজ্যপাল আরিফকে সরাতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে আবেদন জানাবে বলে জানিয়েছে কেরল সরকার।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাংলার পথে কেরল, রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে সরাতে সিদ্ধান্ত বিজয়ন সরকারের

আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: রাজ্যপালের সঙ্গে চলমান বিতর্কে ইতি টানতে বাংলার তৃণমূল সরকারের পথ অনুসরণ কেরলের বাম সরকারের। রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের তীব্র বিরোধের জেরে শেষমেশ অর্ডিন্যান্স আনতে চলেছে কেরলের বিজয়ন মন্ত্রিসভা।

 

এর মাধ্যমে রাজ্যটির সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বা আচার্য পদ থেকে সরানো হবে রাজ্যপাল আরিফ মুহাম্মদ খানকে। কয়েক মাস আগে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের সঙ্গে যখন তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছিল, তখন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীকে সমস্ত রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে বসানোর জন্য বিল পাস করেছিল তৃণমূল সরকার। তারপর সেই বিল রাজ্যপালের কাছে স্বাক্ষরের জন্য পড়ে রয়েছে আইন হওয়ার অপেক্ষায়।

 

তবে কেরল সরকার অবিলম্বে আরিফকে শিক্ষাব্যবস্থায় নাক গলানোর কর্মকাণ্ড থেকে দূরে হটাতে অধ্যাদেশ জারি করতে চলেছে। বুধবার বিজয়ন ক্যাবিনেট একটি বৈঠক করার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বাংলার মতো আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রী বসবেন না

কেরলের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী আর বিন্দু জানিয়েছেন, এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে খ্যাতনামা কোনও শিক্ষাবিদ বা শিক্ষা-ব্যক্তিত্বকে চ্যান্সেলর পদে নিয়োগ করা হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এই অর্ডিন্যান্স পাস করাতে লাগবে রাজ্যপালের স্বাক্ষর। তার সঙ্গে এখন আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক বিজয়ন সরকারের।

 

তিনি কি এতে স্বাক্ষর করবেন, এটাই বড় প্রশ্ন। রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব মেনে অর্ডিন্যান্সে স্বাক্ষর করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী বিন্দু।

এ দিকে তাকে সরানোর জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করা হবে, এই খবর পেয়ে আরিফ মুহাম্মদ খান প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, যেহেতু এই অর্ডিন্যান্স আমার বিরুদ্ধে, তাই আমি এটার বিচার করতে পারব না। আমি এটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেব।

 

উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হলেও রাজ্যপাল আরিফ মুহাম্মদ খানের সঙ্গে ফুটন্ত সম্পর্কের জন্যই এমন করা হচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলের মত। সংঘ-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বারবার হস্তক্ষেপ করছিলেন।

 

কেরলের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির নিয়ম মেনে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়নি বলে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট একটি শুনানিতে জানিয়েছিল। তারপরই রাজ্যপাল ১০ জন উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। এই ইস্যু নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের বিবাদ চরমে ওঠে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও জগদীপ ধনকরের মতো পিনারাই বিজয়ন ও আরিফ মুহাম্মদ খানের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছে বেশ কিছুদিন ধরে।

 

পরবর্তীতে ধনকর উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হলে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল তৃণমূল। এমনকী ধনকরের বিরুদ্ধে নির্বাচনে ভোটদান থেকে বিরত ছিল বিরোধী শিবিরের তৃণমূল কংগ্রেস। এর মাধ্যমেই ধনকরের সঙ্গে বিতর্কের ইতি ঘটেছিল বলে মনে করা হয়। কেরলে সেটা কতদূর গড়াবে, তা সময়ের অপেক্ষা। তবে রাজ্যপাল আরিফকে সরাতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে আবেদন জানাবে বলে জানিয়েছে কেরল সরকার।