ফের অশান্ত মণিপুর, বন্দুকবাজের গুলিতে মৃত্যু ৪ জনের

- আপডেট : ৩০ জুন ২০২৫, সোমবার
- / 28
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করেও শান্তি ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না মণিপুর -এ। সম্প্রতি, রাজ্যের ইস্তফা দেওয়া মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বড় মুখ করে বলেছিলেন, মণিপুর -এ শান্তি ফিরেছে। গোলাগুলির বা হিংসার কোনও খবর নেই। ফলে নতুন সরকার গঠনের জন্য এবার তৎপর হবে বিজেপি। এই আবহে ফের হত্যাকাণ্ড ঘটে গেল উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। ৩০ জুন সোমবার মণিপুরের কুকি-প্রধান চূড়াচন্দ্রপুর জেলায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের হামলায় ৪জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে এক বৃদ্ধাও রয়েছে। নিহতরা প্রত্যেকেই কুকি বলে জানা গিয়েছে।
চূড়াচন্দ্রপুর শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে মংজাং গ্রামের কাছে জেসামি রোডে দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। মণিপুরে কুকিদের একটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘কুকি ন্যাশনাল অর্গ্যানাইজেশন’ (কেএনও)-এর এক শীর্ষনেতা ও তার দুই দেহরক্ষীকে গুলি করে হত্যা করে ওই দুষ্কৃতীরা। পাশাপাশি, সেখানে থাকা এক পথচারী মহিলাও দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হয়। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কুকি ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) ডেপুটি কম্যান্ডার-ইন-চিফ থাহপি হাওকিপ তার দুই দেহরক্ষীর সাথে গাড়িতে করে যাচ্ছিল, সেইসময় তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, হামলাকারীরা খুব কাছ থেকে গুলিবর্ষণ করে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, ঘটনাটি একটি গোষ্ঠীগত বিরোধের সাথে সম্পর্কিত। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। এদিকে এই হত্যা-কাণ্ডের পর আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় ঘটনার পরপরই নিরাপত্তা কর্মীরা এলাকায় ছুটে যান।
উল্লেখ্য, কেএনএ হল কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের সশস্ত্র দল। এটি প্রায় ২৫টি কুকি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে একটি যারা এর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে অপারেশন স্থগিতাদেশ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মণিপুর রাষ্ট্রপতি শাসনের অধীনে রয়েছে কিন্তু সহিংসতার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। সরব হয়েছে তৃণমূলও। তৃণমূলের পক্ষ থেকে এদিন একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে অভিযোগ করা হয়েছে, মণিপুর নিজে নিজে ভেঙে পড়েনি। দিল্লি এটিকে ভেঙে দিয়েছে। আর এখন দিল্লি অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। এদিকে, ইম্ফল উপত্যকা-ভিত্তিক তিনটি সংগঠন— ‘অল মণিপুর ইউনাইটেড ক্লাব অর্গ্যানাইজেশন’, ‘কোঅর্ডিনেটিং কমিটি অন মণিপুর ইন্টিগ্রিটি’ ও ‘ফেডারেশন অব সিভিল সোসাইটি অর্গ্যানাইজেশন’-এর নেতারা এদিনই দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্মকর্তাদের সাথে একটি বৈঠক করেছেন। বৈঠকের এজেন্ডাগুলির মধ্যে ছিল— মহাসড়ক পুনরায় চালু করা, কৃষক এবং তাদের কৃষিজমির নিরাপত্তা এবং বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসন ব্যবস্থা। ২০২৩ সালের ৩ মে মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে সংঘটিত জাতিগত সংঘাতে ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ৬০,০০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত।