০২ ডিসেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জয়নগরে মোয়া হাব সোসাইটি

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৮ মে ২০২৫, বুধবার
  • / 330

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়: গোটা দেশে জয়নগর মোয়ার শহর হিসাবে পরিচিত। বেশ কয়েকবছর আগেই জয়নগরের মোয়া জি আই নথিভুক্ত হয়েছে। তার পর থেকে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রতি বছর শীতে কম-বেশি করে জয়নগরের মোয়া বিদেশে যাচ্ছে। বারবার যে বিষয়টি সামনে এসেছে তা হল মোয়া বেশি দিন ভালো রাখতে প্রয়োজন মোয়া হাবের।

এরপর জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল উদ্যোগ নেন জয়নগরে মোয়া হাব তৈরির। জয়নগরে মোয়া হাবের জন্য জমি সমস্যায় বেশ কয়েক বছর কেটে যায়। প্রথমে জয়নগর মজিলপুর পুরসভার অধীন জয়নগর মিত্রগঞ্জ হাটের ভেতর হাব তৈরি হবার কথা হলেও পরে তা বাতিল হয়ে যায়। এর পরে জয়নগর মজিলপুর পুরসভা পুরসভার মোয়া হাবের জন্য জায়গা করে দেয় । সূদূর ইতালি থেকে প্রায় দু’কোটি টাকা খরচ করে রাজ্য সরকার খাদি গ্রামীণ শিল্প বোর্ডের সহায়তায় মোয়া হাবের প্রয়োজনীয় মেশিন পত্র আনে। মোয়া হাবের ঘর তৈরি থেকে সব কিছু এখন রেডি হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

এ ব্যাপারে খাদি গ্রামীণ শিল্প বোর্ডের এক আধিকারিক বিশ্বজিত সরকার বলেন, আমরা ইতিমধ্যে মেশিন ইনস্টল করে ফেলেছি।দু-একটা ছোটো-খাটো কাজ বাকি আছে। জয়নগর মোয়া হাব সোসাইটি গঠিত হয়েছে শুনলাম। সরকারি নিয়ম মেনে আমরা দেখাশোনার পুরো দায়িত্ব ওদের হাতে তুলে দেব।এই মোয়া হাবের দোতালায় থাকছে মোয়াকে প্রায় একমাস ধরে সংরক্ষণ করার জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্র।পাশাপাশি মোয়া নিয়ে গবেষণা ও প্রস্তুতকারকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন: Chetla Agrani Club: চেতলা অগ্রণীর পুজো মণ্ডপে আগুন

২০২৪ সালের ৬ জানুয়ারি জয়নগরের বহড়ু হাইস্কুলের মাঠে প্রশাসনিক সভায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্রুত মোয়া হাবের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।  তার পরেই তড়িঘড়ি মোয়া হাবের কাজ ও শেষ করা হয়। সম্প্রতি জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল নিজে বিভিন্ন বিভাগীয় দফতর, বারুইপুর মহকুমা শাসক, খাদি বোর্ড, বিডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। একাধিক বার আলোচনা বসেন। তার পরেই বুধবার জয়নগর এক নম্বর বিডিও অফিস বহড়ুতে জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের নিয়ে আলোচনার মধ্যে দিয়ে জয়নগর মোয়া হাব সোসাইটি গঠন করা হয়।

আরও পড়ুন: অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার পরিকল্পনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

এদিন ৯ জনের একটি মূল কমিটি গঠন করা হয়। এদিন এই কমিটি গঠনে উপস্থিত ছিলেন জয়নগর ১ নং ও ২ নং দায়িত্ব প্রাপ্ত শিল্প উন্নয়ন আধিকারিক শ্রেয়া বর্গী। ৯ জনের কমিটির সভাপতি হন রঞ্জিত ঘোষ, সহ সভাপতি সুব্রত মণ্ডল, সম্পাদক তিলক কয়াল, যুগ্ম সম্পাদক রাজেশ দাস, কোষাধ্যক্ষ পলাশ ঘোষ, হিসাব রক্ষক গণেশ দাস,সদস্য শান্তুনু কয়াল,জয়কৃষ্ণ হালদার ও জালাল উদ্দিন শেখ। এই মোয়া হাব চালু হলে এখানকার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত হবেন।

এ ব্যাপারে মোয়া ব্যবসায়ী রঞ্জিত ঘোষ, তিলক কয়াল, রাজেশ দাস ও গণেশ দাস বলেন,  মোয়া হাব চালু হলে নিঃসন্দেহে এখানকার মোয়া প্রস্তুতকারক ও ব্যবসায়ী এবং মোয়া ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সবার উপকার হবে। জয়নগরের মোয়া ব্যবসায় নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। আর ও উন্নত মানের প্যাকেজিং সহ খাদ্যবিধি মেনে আমরা খাদ্য প্রেমিকদের হাতে তুলে দিতে পারব এই মোয়া। আমাদের সদ্য গঠিত জয়নগরের মোয়া হাব সোসাইটির মাধ্যমে এই হাবটি পরিচালিত হবে।

জয়নগর মজিলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুকুমার হালদার বলেন, জয়নগরের মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে এই মোয়া হাব। খুব ভালো লাগছে। জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছেন জয়নগরে মোয়াকে বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরতে। তার জন্য প্রয়োজন ছিল একটি মোয়া হাবের। তা এবার চালু হতে চলেছে পুজোর আগেই। তাই খুশির হাওয়া জয়নগরে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জয়নগরে মোয়া হাব সোসাইটি

আপডেট : ২৮ মে ২০২৫, বুধবার

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়: গোটা দেশে জয়নগর মোয়ার শহর হিসাবে পরিচিত। বেশ কয়েকবছর আগেই জয়নগরের মোয়া জি আই নথিভুক্ত হয়েছে। তার পর থেকে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রতি বছর শীতে কম-বেশি করে জয়নগরের মোয়া বিদেশে যাচ্ছে। বারবার যে বিষয়টি সামনে এসেছে তা হল মোয়া বেশি দিন ভালো রাখতে প্রয়োজন মোয়া হাবের।

এরপর জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল উদ্যোগ নেন জয়নগরে মোয়া হাব তৈরির। জয়নগরে মোয়া হাবের জন্য জমি সমস্যায় বেশ কয়েক বছর কেটে যায়। প্রথমে জয়নগর মজিলপুর পুরসভার অধীন জয়নগর মিত্রগঞ্জ হাটের ভেতর হাব তৈরি হবার কথা হলেও পরে তা বাতিল হয়ে যায়। এর পরে জয়নগর মজিলপুর পুরসভা পুরসভার মোয়া হাবের জন্য জায়গা করে দেয় । সূদূর ইতালি থেকে প্রায় দু’কোটি টাকা খরচ করে রাজ্য সরকার খাদি গ্রামীণ শিল্প বোর্ডের সহায়তায় মোয়া হাবের প্রয়োজনীয় মেশিন পত্র আনে। মোয়া হাবের ঘর তৈরি থেকে সব কিছু এখন রেডি হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

এ ব্যাপারে খাদি গ্রামীণ শিল্প বোর্ডের এক আধিকারিক বিশ্বজিত সরকার বলেন, আমরা ইতিমধ্যে মেশিন ইনস্টল করে ফেলেছি।দু-একটা ছোটো-খাটো কাজ বাকি আছে। জয়নগর মোয়া হাব সোসাইটি গঠিত হয়েছে শুনলাম। সরকারি নিয়ম মেনে আমরা দেখাশোনার পুরো দায়িত্ব ওদের হাতে তুলে দেব।এই মোয়া হাবের দোতালায় থাকছে মোয়াকে প্রায় একমাস ধরে সংরক্ষণ করার জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্র।পাশাপাশি মোয়া নিয়ে গবেষণা ও প্রস্তুতকারকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন: Chetla Agrani Club: চেতলা অগ্রণীর পুজো মণ্ডপে আগুন

২০২৪ সালের ৬ জানুয়ারি জয়নগরের বহড়ু হাইস্কুলের মাঠে প্রশাসনিক সভায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্রুত মোয়া হাবের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।  তার পরেই তড়িঘড়ি মোয়া হাবের কাজ ও শেষ করা হয়। সম্প্রতি জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল নিজে বিভিন্ন বিভাগীয় দফতর, বারুইপুর মহকুমা শাসক, খাদি বোর্ড, বিডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। একাধিক বার আলোচনা বসেন। তার পরেই বুধবার জয়নগর এক নম্বর বিডিও অফিস বহড়ুতে জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের নিয়ে আলোচনার মধ্যে দিয়ে জয়নগর মোয়া হাব সোসাইটি গঠন করা হয়।

আরও পড়ুন: অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার পরিকল্পনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

এদিন ৯ জনের একটি মূল কমিটি গঠন করা হয়। এদিন এই কমিটি গঠনে উপস্থিত ছিলেন জয়নগর ১ নং ও ২ নং দায়িত্ব প্রাপ্ত শিল্প উন্নয়ন আধিকারিক শ্রেয়া বর্গী। ৯ জনের কমিটির সভাপতি হন রঞ্জিত ঘোষ, সহ সভাপতি সুব্রত মণ্ডল, সম্পাদক তিলক কয়াল, যুগ্ম সম্পাদক রাজেশ দাস, কোষাধ্যক্ষ পলাশ ঘোষ, হিসাব রক্ষক গণেশ দাস,সদস্য শান্তুনু কয়াল,জয়কৃষ্ণ হালদার ও জালাল উদ্দিন শেখ। এই মোয়া হাব চালু হলে এখানকার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত হবেন।

এ ব্যাপারে মোয়া ব্যবসায়ী রঞ্জিত ঘোষ, তিলক কয়াল, রাজেশ দাস ও গণেশ দাস বলেন,  মোয়া হাব চালু হলে নিঃসন্দেহে এখানকার মোয়া প্রস্তুতকারক ও ব্যবসায়ী এবং মোয়া ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সবার উপকার হবে। জয়নগরের মোয়া ব্যবসায় নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। আর ও উন্নত মানের প্যাকেজিং সহ খাদ্যবিধি মেনে আমরা খাদ্য প্রেমিকদের হাতে তুলে দিতে পারব এই মোয়া। আমাদের সদ্য গঠিত জয়নগরের মোয়া হাব সোসাইটির মাধ্যমে এই হাবটি পরিচালিত হবে।

জয়নগর মজিলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুকুমার হালদার বলেন, জয়নগরের মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে এই মোয়া হাব। খুব ভালো লাগছে। জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছেন জয়নগরে মোয়াকে বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরতে। তার জন্য প্রয়োজন ছিল একটি মোয়া হাবের। তা এবার চালু হতে চলেছে পুজোর আগেই। তাই খুশির হাওয়া জয়নগরে।