নাইজেরিয়ায় ভয়াবহ বন্যা, মৃত ১৫০-র বেশি

- আপডেট : ৩১ মে ২০২৫, শনিবার
- / 185
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: নাইজেরিয়ার নাইজার রাজ্যের মোকওয়া শহরে চলতি সপ্তাহের শুরুতে আকস্মিক বন্যায় ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে। ইতিমধ্যেই ১৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র ইব্রাহিম আউদু হুসেইনি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
এই বন্যার ফলে ৩ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, ৩০০-র বেশি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে এবং দু’টি সেতুও পানির তোড়ে উধাও হয়েছে। বন্যার জেরে অনেকেই এখনও নিখোঁজ। একটি পরিবারের ১২ জনের মধ্যে মাত্র চারজনের খোঁজ পাওয়া গেছে।
রেড ক্রসের মতে, এখন পর্যন্ত অন্তত ৭৮ জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। ডেইলি ট্রাস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি ইসলামিক স্কুলের ৫০ জন শিশুও নিখোঁজ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫ হাজার মানুষ গৃহহীন।
রাজ্যের রাজধানী আবুজা থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মোকওয়ায় এখনও চলছে উদ্ধার তৎপরতা। একজন সরকারি কর্মী মোহাম্মদ তানকো বলেন, ‘আমরা আমাদের বাড়ি থেকে ১৫ জনকে হারিয়েছি। ঘরবাড়ি, সম্পত্তি সবই চলে গেছে। আমরা কিছুই রাখতে পারিনি।’
জেলে দানজুমা শাবা জানান, তার ঘর ভেঙে যাওয়ায় তিনি গাড়ি পার্কিংয়ের এক পাশে কোনও মতে রাত কাটাচ্ছেন। ‘আমার ঘর আর নেই, থাকার কোনও জায়গা নেই, বলেন তিনি।
জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা (নেমা) এই বন্যাকে ‘নজিরবিহীন’ বলে বর্ণনা করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নাইজেরিয়ার আবহাওয়া দফতর ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে, চলতি সপ্তাহে দেশের ৩৬টি রাজ্যের মধ্যে অন্তত ১৫টিতে আকস্মিক বন্যা হতে পারে।
২০২৪ সালে ইতিমধ্যেই দেশের ৩১টি রাজ্যে ১২০০ জনের মৃত্যু ও প্রায় ১২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে নেমা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতি বছর এই ধরনের বন্যা আরও মারাত্মক হয়ে উঠছে। এই বন্যা যেন পশ্চিম আফ্রিকার দরিদ্র মানুষের জীবনে আরও দুঃস্বপ্ন ডেকে আনছে। এখন প্রশ্ন, কবে এই দুর্যোগের স্থায়ী সমাধান খুঁজে পাবে দেশটি।