ভাঙড় যেতে চেয়ে হাইকোর্টে নওশাদ সিদ্দিকী

- আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৩, সোমবার
- / 7
পারিজাত মোল্লা: পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে মনোনয়নের আগে থেকে ফলাফল প্রকাশ পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত হয়েছে এবং হচ্ছে ভাঙড়। সেই ভাঙড়ের স্থানীয় বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী ঢুকতে পারছেন না বলে অভিযোগ। নিজের নির্বাচনী এলাকা ঢুকতে চেয়ে অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হলেন তিনি।
সোমবার পুলিশের অতি সক্রিয়তার অভিযোগ কে সামনে রেখে মামলা দাখিল করেছেন বিধায়ক। নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রেই যেতে পারছেন না নওশাদ সিদ্দিকি। ভাঙড়ে যেতে বারবার তাঁকে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
এই অভিযোগে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। কেন বার বার পুলিশ তাঁকে বাধা দিচ্ছে? ১৪৪ ধারা জারি থাকার কথা বলে তাঁকে কেন আটকানো হচ্ছে? এই প্রশ্ন তুলেছেন নওশাদ সিদ্দিকী।
আইএসএফ বিধায়ককে মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। চলতি সপ্তাহেই শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে এই মামলার। পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ, বোমাবাজিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দক্ষিণ ২৪ পরগণার ভাঙড়।
মনোনয়ন পর্ব থেকে যে রক্তপাতের শুরু, তা গণনার দিন পর্যন্ত জারি ছিল। গত মঙ্গলবার কাঁঠালিয়ায় গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় তিন জনের। তাঁদের মধ্যে দু’জন আইএসএফ কর্মী। এক জন সাধারণ গ্রামবাসী বলে জানা গিয়েছে।
আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকি সেই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানান। গণনার দিনের পর গত বৃহস্পতিবারও অশান্তি আঁচে জ্বলে ওঠে ভাঙড়। বৃহস্পতিবার চালতাবেড়িয়ায় আইএসএফের ঘাঁটিতে বিস্ফোরণে জখম হন আইএসএফের চার সমর্থক। ভাঙড় থেকে উদ্ধার হয় বোমা। এর পর থেকেই সেখানে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। গত শুক্রবার ভাঙড় যাওয়ার পথে নিউটাউনে আটকানো হয় নওশাদের কনভয়। দীর্ঘক্ষণ গাড়িতেই বসে থাকার পর ফিরে যেতে বাধ্য হন তিনি।
পুলিশের আধিকারিকের সঙ্গে একপ্রস্থ বচসাও হয়। গত রবিবার তিনি ফের ভাঙড়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।
এই পরিস্থিতিতে রবিবারই নওশাদ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন। সেই মতো সোমবার হাইকোর্টে গেলেন ভাঙড়ের বিধায়ক।পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগও তুলেছেন তাঁরা। বিধায়ককে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। চলতি সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল গত শুক্রবার। নিজেরই বিধানসভা কেন্দ্রে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। রবিবারও নওশাদ পড়তে হয় পুলিশি বাধার মুখে। আটকানো হয় তাঁর গাড়ি। যুক্তি দেওয়া হয়, ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।
নওশাদ বারংবার অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আটকানো হচ্ছে তাঁকে। তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন, ”নবান্ন, হাইকোর্ট চত্বর, লালবাজার, সবজায়গাতেই ১৪৪ ধারা থাকে। সাধারণ মানুষ যেতে পারে। অথচ আমাকে আমার এলাকাতেই ঢুকতে দিচ্ছে না।”
এদিকে, আইএসএফ-এর অভিযোগ, পুলিশ নওশাদকে বাধা দিলেও ভাঙড়ে ১৪৪ ধারার মধ্যেই সভা করছে তৃণমূল। প্রায় শতাধিক কর্মী-সমর্থকদের সমাবেশ করেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। এরপরই পুলিশের দ্বিচারিতার অভিযোগ তোলেন তাঁরা(আইএসএফ)।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার সময় থেকে একাধিকবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে।
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তাঁকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। তাতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার তাঁকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে রাজারহাট ও বড়বাজার থানা এলাকায় এক মহিলা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ করেন।
সেই মামলাতেও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাসের ডিভিশন বেঞ্চ আপাতত নওশাদকে গ্রেফতার না করার নির্দেশ দিয়েছে।