হরমুজ প্রণালী নিয়ে উদ্বেগ, বিশ্ববাজারে তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী

- আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 42
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ইসরাইল ও ইরানের চলমান সংঘাতের শান্তিপূর্ণ কোনও সমাধান না মেলায় আবারও বাড়ছে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, গত সপ্তাহে তেলের দাম ৭ শতাংশ বেড়েছিল, আর তারপর রবিবার দাম আরও বাড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট জানিয়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ব্যারেল প্রতি ৭৩.৮৫ মার্কিন ডলার, যা আগের তুলনায় প্রায় ১.২ শতাংশ বেশি। বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা এবং হরমুজ প্রণালীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগই এই দাম বাড়ার অন্যতম কারণ।
ইসরাইলের সঙ্গে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে পারস্য উপসাগরের প্রবেশদ্বার হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার বিষয়টি ‘গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা’ করছে ইরান। দেশটির জাতীয় সংসদের নিরাপত্তা বিষয়ক কমিশনের সদস্য ইসমাইল কোসারির উদ্ধৃতি দিয়ে এই খবর জানিয়েছে আল জাজিরা। এরপরেই গোটা বিশ্বে ছড়িয়েছে উদ্বেগ।
ওমান ও ইরানের মাঝে অবস্থিত এই হরমুজ প্রণালী ওমান উপসাগরকে পারস্য উপসাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। হরমুজ প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন বিশ্বের মোট তেল সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ যাতায়াত করে। যদি এই সংঘাত আরও বিস্তৃত হয় এবং সউদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত বা ওমান এতে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। এবং এর প্রভাব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়িয়ে তুলতে পারে। এই পরিস্থিতি আমদানি-নির্ভর দেশগুলোর জন্যও একটি অশনি সংকেত। বিশেষ করে ভারত, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জ্বালানি খাতে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হতে পারে।
যদিও এখনও হরমুজ প্রণালী দিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল করছে, তবে সেটা হচ্ছে খুব বেশি সতর্কতার সঙ্গে। বিসিএ রিসার্চের প্রধান ভূরাজনৈতিক কৌশলবিদ ম্যাট গার্টকেন আল জাজিরাকে বলেন, ‘যদি হরমুজ প্রণালী সত্যিই বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সেটি হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তেল সংকট।’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররাও এই সংঘাতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ, তেলের দামের ওপর মার্কিন অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল। ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।