ইন্দোনেশিয়ায় বাড়ছে বিক্ষোভ, রাজধানীতে সেনা মোতায়েন

- আপডেট : ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 43
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ইন্দোনেশিয়ায় পার্লামেন্ট সদস্যদের বিলাসবহুল আবাসন ভাতা নিয়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। গত এক সপ্তাহের সহিংসতায় অন্তত সাতজন নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সোমবার রাজধানী জাকার্তায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রায় ২৮ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে ক্ষোভের সূত্রপাত এমপিদের জন্য মাসিক ৫০ মিলিয়ন রুপিয়াহ (প্রায় ৩ হাজার মার্কিন ডলার) আবাসন ভাতা থেকে, যা জাকার্তার ন্যূনতম মজুরির প্রায় ১০ গুণ। সমালোচকদের মতে, দেশের সাধারণ মানুষ যখন করের চাপ, মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বে জর্জরিত, তখন এমপিদের জন্য এই ধরনের সুযোগ-সুবিধা সম্পূর্ণ সংবেদনহীনতা ও বৈষম্যের প্রতীক।
আন্দোলনের মোড় ঘুরে যায় ২১ বছর বয়সী রাইড-শেয়ার চালক আফফান কুরনিয়াওয়ান পুলিশের গাড়িচাপায় নিহত হওয়ার পর। তিনি খাবার সরবরাহ করতে গিয়ে বিক্ষোভে আটকা পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, পুলিশের একটি সাঁজোয়া গাড়ি বিক্ষোভকারীদের ভিড়ে ঢুকে পড়ে তাঁকে চাপা দেয়। ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জনরোষ বিস্ফোরিত হয়।
জাকার্তা থেকে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে মাকাসার, ইয়োগ্যাকার্তা, সুমাত্রা ও বোর্নিও দ্বীপে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়। জাকার্তার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, সহিংসতায় ৪৬৯ জন আহত, যাদের মধ্যে ৯৭ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। রাজধানীতে প্রায় ১,২৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৫ বিলিয়ন রুপিয়াহ (৩.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো চিন সফর বাতিল করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামেন। তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেন এবং অভিযোগ করেন, তপ্রকৃত বিক্ষোভকারীরা নয়, দাঙ্গাবাজরা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে।দ সেনা-পুলিশ যৌথ টহল, স্নাইপার মোতায়েন এবং রাজধানীজুড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
বর্ধমান চাপের মুখে সরকার এমপিদের ভাতা কমানো, বিদেশ সফর স্থগিত এবং আফফানের মৃত্যুর ঘটনায় সাত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে। নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।