০৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জানা অজানা গোণাহ থেকে ক্ষমা লাভের মাস রমযান

অর্পিতা লাহিড়ী
  • আপডেট : ৪ এপ্রিল ২০২২, সোমবার
  • / 43

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ আজ পবিত্র রমযানের দ্বিতীয় দিন। রমযানের প্রথম ভাগের দশ দিন রহমতের। আর আমরা এখন এ রহমতের সময় অতিবাহিত করছি। ইবাদাত-বান্দেগী আর বিশেষ আমলের মাধ্যমে  আল্লাহর কাছ থেকে রহমত প্রাপ্তির অফুরন্ত সুযোগ এখনই। সিয়াম সাধনার মাধ্যমেই আল্লাহর রহমত লাভ করতে হবে।

মহান আল্লাহর বিশেষ রহমত প্রাপ্তি– জানা অজানা গোণাহ থেকে ক্ষমা লাভ এ্বং জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভের মাস মাহে রমযান। মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র রমযান সম্পর্কে শুভ সংবাদ দিয়েছেন– ‘রোযাদার যে কোন শ্রেণীরই অন্তর্ভুক্ত হোক না কেন– সে আল্লাহর রহমত-বরকত ও মাগফিরাত হতে কোনক্রমেই বঞ্চিত হবে না। রোযা আমারই জন্য এবং আমি এর প্রতিফল প্রদান করবো। আল্লাহর এ ঘোষণায় স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে– প্রকৃতপক্ষে পবিত্র রমযান মাস মনের আর্দ্রতা লাভ– কোমলান্তকরণ– বিনয় ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের ভাবধারায় উজ্জীবিত হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট মওসুম। এ সময়ে রোজাদারের মধ্যে আধ্যাত্মিক ও দৈহিক ভাবধারা জাগ্রত হয়। এর মাধ্যমে বান্দা  আল্লাহর নৈকট্য লাভের দিকে ধাবিত হয়। সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহ পাকের অনুগ্রহ লাভ করে মুক্তি ও নিষ্কৃতি প্রাপ্তদের মাঝে নিজেদের আসন প্রতিষ্ঠিত করা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের একান্ত কাম্য হওয়া খুবই বাঞ্ছনীয়।

আরও পড়ুন: শুধু রমযান নয়, কখনোই অনুমতি দেওয়া হবে না: ফ্যাশন শো নিয়ে আবদুল্লাহ

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন– ‘মাহে রমযানে সিয়াম সাধনার সুবর্ণ সুযোগ লাভ করা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি পেতে সক্ষম হল না সে প্রকৃতপক্ষেই দুর্ভাগা।’ এ দুর্ভাগ্যের বোঝা মাথায় নিয়ে যারা নিজেদের জীবনকে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দিতে চায় তাদেরকে আজ এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া দরকার যে– সকলেরই মহান আল্লাহ পাকের নিকটে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। এ সীমাহীন যাত্রাপথের সম্বল সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জন করে নেয়াই শ্রেয়। জ্ঞান ও বিবেক সম্পন্ন মানুষ ন্যায়– কল্যাণ এবং মঙ্গলময় জীবন যাপনেই আনন্দ  পায়– শান্তি পায়। এ শান্তিই হোক সকলের কামনার ধন।

আরও পড়ুন: রমযান: হৃদয় পরিবর্তনের বরকতময় এক মাস

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন– রমযানের প্রথম দশদিন আল্লাহর রহমত নাযিলের– দ্বিতীয় দশদিন গোনাহ মাফ তথা মাগফিরাতের এবং তৃতীয় দশদিন আল্লাহর আজাব থেকে নাজাতের জন্য নির্ধারিত। হযরত আধুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত মুসলিম শরীফের এক হাদিসে বলা হয়েছে– যারা রমযানের চাঁদের প্রথম তারিখ থেকে শেষ দিন পর্যন্ত রোযা রেখেছে তারা সে দিনের মতই নিষ্পাপ হয়ে যাবে– যেদিন তাদের মাতা তাদেরকে নিষ্পাপ জন্ম দিয়েছিলেন। অর্থাৎ মাতৃগর্ভ থেকে মানুষ যেভাবে নিষ্পাপ অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয় রমযানের ত্রিশ দিন রোযা পালন করলে সে তেমন নিষ্কলুষ হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: ইফতার আলোচনায় পড়ুয়াদের ভিড়, আলিয়ায় রেনেসাঁর ইফতার

পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ মাহে রমযানের বিশেষ বৈশিষ্ট্য বিবৃত করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন– এটা এমন এক মাস যে প্রথম দশ দিন রহমতের বারিধারায় পরিপূর্ণ। মাঝের দশ দিন ক্ষমা ও মার্জনা লাভের জন্য নির্ধারিত এবং শেষ দশদিন জাহান্নাম হতে মুক্তি লাভের উপায় নির্দিষ্ট। রোযাদারদের মাঝে এমন এক শ্রেণীর লোক আছেন যারা তাকওয়া ও পরহেজগারী সম্পন্ন এবং পাপ ও বর্জনীয় কাজকর্ম হতে বেঁচে থাকার জন্য সর্বদাই যbবান। তারা সিয়াম সাধনার মাঝে কোন ভুলত্র&টি হয়ে গেলে চেতনা হওয়ার সাথে সাথেই তওবা ও এস্তেগফার করে নিজেদেরকে সংশোধন ও ত্রুটিমুক্ত করে নেন– এ শ্রেণীর রোযাদারদের প্রতি  রমযান মাস শুরু হওয়ার সাথে সাথেই রহমতের বারীবর্ষণ হতে থাকে। তারা যখন রোযার প্রথম দশ দিন একান্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে অতিবাহিত করেন– তখন তারা আর সেই লোক থাকেন না। যেমনটি রোযা শুরু হওয়ার প্রাক্কালে ছিলেন। বরং তাদের মাঝে মুমিন সুলভ মহৎ গুণাবলী আগের তুলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে যায়।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জানা অজানা গোণাহ থেকে ক্ষমা লাভের মাস রমযান

আপডেট : ৪ এপ্রিল ২০২২, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ আজ পবিত্র রমযানের দ্বিতীয় দিন। রমযানের প্রথম ভাগের দশ দিন রহমতের। আর আমরা এখন এ রহমতের সময় অতিবাহিত করছি। ইবাদাত-বান্দেগী আর বিশেষ আমলের মাধ্যমে  আল্লাহর কাছ থেকে রহমত প্রাপ্তির অফুরন্ত সুযোগ এখনই। সিয়াম সাধনার মাধ্যমেই আল্লাহর রহমত লাভ করতে হবে।

মহান আল্লাহর বিশেষ রহমত প্রাপ্তি– জানা অজানা গোণাহ থেকে ক্ষমা লাভ এ্বং জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভের মাস মাহে রমযান। মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র রমযান সম্পর্কে শুভ সংবাদ দিয়েছেন– ‘রোযাদার যে কোন শ্রেণীরই অন্তর্ভুক্ত হোক না কেন– সে আল্লাহর রহমত-বরকত ও মাগফিরাত হতে কোনক্রমেই বঞ্চিত হবে না। রোযা আমারই জন্য এবং আমি এর প্রতিফল প্রদান করবো। আল্লাহর এ ঘোষণায় স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে– প্রকৃতপক্ষে পবিত্র রমযান মাস মনের আর্দ্রতা লাভ– কোমলান্তকরণ– বিনয় ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের ভাবধারায় উজ্জীবিত হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট মওসুম। এ সময়ে রোজাদারের মধ্যে আধ্যাত্মিক ও দৈহিক ভাবধারা জাগ্রত হয়। এর মাধ্যমে বান্দা  আল্লাহর নৈকট্য লাভের দিকে ধাবিত হয়। সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহ পাকের অনুগ্রহ লাভ করে মুক্তি ও নিষ্কৃতি প্রাপ্তদের মাঝে নিজেদের আসন প্রতিষ্ঠিত করা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের একান্ত কাম্য হওয়া খুবই বাঞ্ছনীয়।

আরও পড়ুন: শুধু রমযান নয়, কখনোই অনুমতি দেওয়া হবে না: ফ্যাশন শো নিয়ে আবদুল্লাহ

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন– ‘মাহে রমযানে সিয়াম সাধনার সুবর্ণ সুযোগ লাভ করা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি পেতে সক্ষম হল না সে প্রকৃতপক্ষেই দুর্ভাগা।’ এ দুর্ভাগ্যের বোঝা মাথায় নিয়ে যারা নিজেদের জীবনকে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দিতে চায় তাদেরকে আজ এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া দরকার যে– সকলেরই মহান আল্লাহ পাকের নিকটে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। এ সীমাহীন যাত্রাপথের সম্বল সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জন করে নেয়াই শ্রেয়। জ্ঞান ও বিবেক সম্পন্ন মানুষ ন্যায়– কল্যাণ এবং মঙ্গলময় জীবন যাপনেই আনন্দ  পায়– শান্তি পায়। এ শান্তিই হোক সকলের কামনার ধন।

আরও পড়ুন: রমযান: হৃদয় পরিবর্তনের বরকতময় এক মাস

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন– রমযানের প্রথম দশদিন আল্লাহর রহমত নাযিলের– দ্বিতীয় দশদিন গোনাহ মাফ তথা মাগফিরাতের এবং তৃতীয় দশদিন আল্লাহর আজাব থেকে নাজাতের জন্য নির্ধারিত। হযরত আধুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত মুসলিম শরীফের এক হাদিসে বলা হয়েছে– যারা রমযানের চাঁদের প্রথম তারিখ থেকে শেষ দিন পর্যন্ত রোযা রেখেছে তারা সে দিনের মতই নিষ্পাপ হয়ে যাবে– যেদিন তাদের মাতা তাদেরকে নিষ্পাপ জন্ম দিয়েছিলেন। অর্থাৎ মাতৃগর্ভ থেকে মানুষ যেভাবে নিষ্পাপ অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয় রমযানের ত্রিশ দিন রোযা পালন করলে সে তেমন নিষ্কলুষ হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: ইফতার আলোচনায় পড়ুয়াদের ভিড়, আলিয়ায় রেনেসাঁর ইফতার

পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ মাহে রমযানের বিশেষ বৈশিষ্ট্য বিবৃত করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন– এটা এমন এক মাস যে প্রথম দশ দিন রহমতের বারিধারায় পরিপূর্ণ। মাঝের দশ দিন ক্ষমা ও মার্জনা লাভের জন্য নির্ধারিত এবং শেষ দশদিন জাহান্নাম হতে মুক্তি লাভের উপায় নির্দিষ্ট। রোযাদারদের মাঝে এমন এক শ্রেণীর লোক আছেন যারা তাকওয়া ও পরহেজগারী সম্পন্ন এবং পাপ ও বর্জনীয় কাজকর্ম হতে বেঁচে থাকার জন্য সর্বদাই যbবান। তারা সিয়াম সাধনার মাঝে কোন ভুলত্র&টি হয়ে গেলে চেতনা হওয়ার সাথে সাথেই তওবা ও এস্তেগফার করে নিজেদেরকে সংশোধন ও ত্রুটিমুক্ত করে নেন– এ শ্রেণীর রোযাদারদের প্রতি  রমযান মাস শুরু হওয়ার সাথে সাথেই রহমতের বারীবর্ষণ হতে থাকে। তারা যখন রোযার প্রথম দশ দিন একান্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে অতিবাহিত করেন– তখন তারা আর সেই লোক থাকেন না। যেমনটি রোযা শুরু হওয়ার প্রাক্কালে ছিলেন। বরং তাদের মাঝে মুমিন সুলভ মহৎ গুণাবলী আগের তুলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে যায়।