০৪ নভেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চিনকে সঙ্গে নিয়ে নয়া বিশ্ব ব্যবস্থা বানাতে চাইছে রাশিয়া, আশংকিত পশ্চিমারা

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১ এপ্রিল ২০২২, শুক্রবার
  • / 116

পুবের কলম প্রতিবেদক :  লন্ডন ­ পশ্চিমারা মনে করছে ওয়াল্ড অর্ডারে একটা পরিবর্তন আসতে পারে। এখন যে ওয়ার্ল্ড অর্ডার রয়েছে তাতে মার্কিন দাপটের কথা সর্বজনবিদিত। এবার হয়ত রাশিয়া এবং চিন একজোট হয়ে নয়া বিশ্ব ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে। তবে এটি কেবল যে পশ্চিমা আশংকা তা নয়। কালের নিয়মেই নয়া একটা পাওয়ার ব্যালেন্স তৈরি হওয়াটা বাস্তবসম্মত।

 

আরও পড়ুন: চিনের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক ট্রাম্পের

বিশ্বে শক্তিসাম্যে একটা পরিবর্তন আসতে চলেছে। এতদিন একচেটিয়া সুপার পাওয়ার ছিল আমেরিকা। তার দাপট ছিল প্রশ্নাতীত। কিন্তু আমেরিকার আর সেই দাপট নেই। বিশ্বে দ্বিতীয় পাওয়ারফুল দেশ হিসাবে ক্রমশ বিশ্বে নিজের দাপট দেখাচ্ছে চিন। রাশিয়ার আর সে দাপট নেই। তবে একথা অস্বীকারের উপায় নেই যে এখনও বিশ্বের তৃতীয় সুপার পাওয়ার রাশিয়া। পুতিনের জমানায় নতুন করে রাশিয়া নিজেকে মেলে ধরতে চাইছে। রাশিয়া আন্তরিকভাবে চাইছে ,চিনকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বে ‘নয়া একটা গণতান্ত্রিক ব্যাবস্থার’ কথা ।

আরও পড়ুন: গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির আহ্বান চিনের

 

আরও পড়ুন: শুল্কযুদ্ধে টানাপোড়েনের মধ্যেই শি জিনপিঙের সঙ্গে ফোনে কথা ট্রাম্পের, যাচ্ছেন চিন 

রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বুধবার বলেছেন যে বিশ্ব আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক পর্যায়ে প্রবেশ করছে। রাশিয়া ও চিনের মধ্যে একটি নয়া ব্যবস্থা বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত করছে। এএফপির খবরে বলা হয়েছে, বেজিংয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রীমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে ল্যাভরভ বলেন, ‘আমরা, আপনার সঙ্গে এবং আমাদের সহানুভূতিশীলদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে একটি বহুমুখী, ন্যায্য, গণতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাব’। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে প্রতিবেশী ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পর এটি ছিল চিনে ল্যাভরভের প্রথম সফর।

 

আন্তর্জাতিক মানচিত্রে চিন-রাশিয়া সম্পর্ক নতুন করে বিকশিত হচ্ছে। তাদের এই নয়া সম্পর্ক উন্নয়নে গতি আনছে, এমনটাই মন্তব্য করেন ওয়াং। তিনি বলেন, চিন-রাশিয়া উভয় পক্ষই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার অগ্রগতিতে তারা গভীরভাবে আত্মবিশ্বাসী।’

 

ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা জিসিএইচকিউ-এর প্রধান জেরেমি ফ্লেমিং, চিনকে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন। রাশিয়ার নাম করে তিনি বলেন, এই দেশটি আন্তর্জাতিক কোনো নিয়মকে তোয়াক্কা করে না। যারা বিশ্বের নিয়মকে তোয়াক্কা করেনা তারা নয়া ওয়ার্ল্ড অর্ডার বানানোর চেষ্টা করলে তা বিশ্বকে নেতৃত্বদানে সঠিক পদক্ষেপ হবে না।

 

বিবিসির খবর অনুসারে অস্ট্রেলিয়ায় এক বক্তৃতার সময় ফ্লেমিং বলেছিলেন ‘রাশিয়া বুঝছে চিন পরে সামরিক এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠবে। ফ্লেমিং মনে করে কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থ সংঘাত হয়ত রাশিয়া এবং চিনকে একজোট হতে দেবে না। সেক্ষেত্রে বিশেষ সমীকরণ থেকে তারা হয়ত ছিটকে যেতে পারে।

 

 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধচলাকালীন চিনের ভূমিকা দেখে অনেকেই মনে করছেন রাশিয়ার প্রতি চিনের একটা নরম মনভাব রয়েছে। তবে রাশিয়াকে সরাসরি সমর্থন করা চিনের পক্ষে সম্ভব নয়। কারন মার্কিন মুলুক সহ গোটা ইউরোপে চিন এখন নানা গ্যাজেট সরবরাহ করে। চিন সেই বাজার হাত ছাড়া করতে চায় না। একই সঙ্গে চিন আমেরিকার এই অবাধ খবরদারির বিরোধী। ফলে খুব স্বাভাবিক কারণে চিন যে রাশিয়ার প্রতি নরম মনোভাব দেখাবে সেটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া রাশিয়ার গ্যাস ও তেল চিন ব্যবহার করে। চিন জানে যদি একটা নয়া পাওয়ার ব্যালেন্স তৈরি করতে হয় তবে রাশিয়াকে প্রয়োজন। সে আশংকাতে ভুগছে পশ্চিমারা।

 

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

চিনকে সঙ্গে নিয়ে নয়া বিশ্ব ব্যবস্থা বানাতে চাইছে রাশিয়া, আশংকিত পশ্চিমারা

আপডেট : ১ এপ্রিল ২০২২, শুক্রবার

পুবের কলম প্রতিবেদক :  লন্ডন ­ পশ্চিমারা মনে করছে ওয়াল্ড অর্ডারে একটা পরিবর্তন আসতে পারে। এখন যে ওয়ার্ল্ড অর্ডার রয়েছে তাতে মার্কিন দাপটের কথা সর্বজনবিদিত। এবার হয়ত রাশিয়া এবং চিন একজোট হয়ে নয়া বিশ্ব ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে। তবে এটি কেবল যে পশ্চিমা আশংকা তা নয়। কালের নিয়মেই নয়া একটা পাওয়ার ব্যালেন্স তৈরি হওয়াটা বাস্তবসম্মত।

 

আরও পড়ুন: চিনের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক ট্রাম্পের

বিশ্বে শক্তিসাম্যে একটা পরিবর্তন আসতে চলেছে। এতদিন একচেটিয়া সুপার পাওয়ার ছিল আমেরিকা। তার দাপট ছিল প্রশ্নাতীত। কিন্তু আমেরিকার আর সেই দাপট নেই। বিশ্বে দ্বিতীয় পাওয়ারফুল দেশ হিসাবে ক্রমশ বিশ্বে নিজের দাপট দেখাচ্ছে চিন। রাশিয়ার আর সে দাপট নেই। তবে একথা অস্বীকারের উপায় নেই যে এখনও বিশ্বের তৃতীয় সুপার পাওয়ার রাশিয়া। পুতিনের জমানায় নতুন করে রাশিয়া নিজেকে মেলে ধরতে চাইছে। রাশিয়া আন্তরিকভাবে চাইছে ,চিনকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বে ‘নয়া একটা গণতান্ত্রিক ব্যাবস্থার’ কথা ।

আরও পড়ুন: গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির আহ্বান চিনের

 

আরও পড়ুন: শুল্কযুদ্ধে টানাপোড়েনের মধ্যেই শি জিনপিঙের সঙ্গে ফোনে কথা ট্রাম্পের, যাচ্ছেন চিন 

রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বুধবার বলেছেন যে বিশ্ব আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক পর্যায়ে প্রবেশ করছে। রাশিয়া ও চিনের মধ্যে একটি নয়া ব্যবস্থা বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত করছে। এএফপির খবরে বলা হয়েছে, বেজিংয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রীমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে ল্যাভরভ বলেন, ‘আমরা, আপনার সঙ্গে এবং আমাদের সহানুভূতিশীলদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে একটি বহুমুখী, ন্যায্য, গণতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাব’। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে প্রতিবেশী ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পর এটি ছিল চিনে ল্যাভরভের প্রথম সফর।

 

আন্তর্জাতিক মানচিত্রে চিন-রাশিয়া সম্পর্ক নতুন করে বিকশিত হচ্ছে। তাদের এই নয়া সম্পর্ক উন্নয়নে গতি আনছে, এমনটাই মন্তব্য করেন ওয়াং। তিনি বলেন, চিন-রাশিয়া উভয় পক্ষই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার অগ্রগতিতে তারা গভীরভাবে আত্মবিশ্বাসী।’

 

ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা জিসিএইচকিউ-এর প্রধান জেরেমি ফ্লেমিং, চিনকে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন। রাশিয়ার নাম করে তিনি বলেন, এই দেশটি আন্তর্জাতিক কোনো নিয়মকে তোয়াক্কা করে না। যারা বিশ্বের নিয়মকে তোয়াক্কা করেনা তারা নয়া ওয়ার্ল্ড অর্ডার বানানোর চেষ্টা করলে তা বিশ্বকে নেতৃত্বদানে সঠিক পদক্ষেপ হবে না।

 

বিবিসির খবর অনুসারে অস্ট্রেলিয়ায় এক বক্তৃতার সময় ফ্লেমিং বলেছিলেন ‘রাশিয়া বুঝছে চিন পরে সামরিক এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠবে। ফ্লেমিং মনে করে কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থ সংঘাত হয়ত রাশিয়া এবং চিনকে একজোট হতে দেবে না। সেক্ষেত্রে বিশেষ সমীকরণ থেকে তারা হয়ত ছিটকে যেতে পারে।

 

 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধচলাকালীন চিনের ভূমিকা দেখে অনেকেই মনে করছেন রাশিয়ার প্রতি চিনের একটা নরম মনভাব রয়েছে। তবে রাশিয়াকে সরাসরি সমর্থন করা চিনের পক্ষে সম্ভব নয়। কারন মার্কিন মুলুক সহ গোটা ইউরোপে চিন এখন নানা গ্যাজেট সরবরাহ করে। চিন সেই বাজার হাত ছাড়া করতে চায় না। একই সঙ্গে চিন আমেরিকার এই অবাধ খবরদারির বিরোধী। ফলে খুব স্বাভাবিক কারণে চিন যে রাশিয়ার প্রতি নরম মনোভাব দেখাবে সেটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া রাশিয়ার গ্যাস ও তেল চিন ব্যবহার করে। চিন জানে যদি একটা নয়া পাওয়ার ব্যালেন্স তৈরি করতে হয় তবে রাশিয়াকে প্রয়োজন। সে আশংকাতে ভুগছে পশ্চিমারা।