পবিত্র কুরআনের আকৃতিতে নির্মিত ‘দ্য গেট অব মক্কা’

- আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২২, শুক্রবার
- / 11
বিশেষ প্রতিবেদন: পবিত্র মক্কা নগরীর প্রবেশদ্বার হল জেদ্দা। আর এই জেদ্দা থেকে মক্কা যাওয়ার পথেই দেখা যায় ‘দ্য গেট অব মক্কা’ বা বাওওয়াবাত মক্কা। কাঠের রেহালের ওপর খোলা কুরআনের মতো হওয়ায় তা ‘কুরআন গেট’ নামেও বেশ পরিচিত। সড়কপথে এই গেট দিয়েই সকলে পবিত্র মক্কা নগরীতে প্রবেশ ও প্রস্থান করে।
পবিত্র মসজিদুল হারাম থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনা পর্যটক ও হজ-উমরাহ যাত্রীদের মধ্যে তৈরি করে অন্য রকম অনুভূতি। কারণ এই ফটকটি পবিত্র মক্কা নগরীর হারাম শরিফের সীমারেখা হিসেবে বিবেচিত হয়। রাজধানী জেদ্দা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে মক্কা-জেদ্দা মহাসড়কে গেটটি অবস্থিত। ১৯৭৯ সালে এর নকশা করেন সউদি ডিজাইনার জিয়া আজিজ জাহিদ ও স্থাপত্যশিল্পী সামির আল-আবদ।
তৎকালীন সময়ে ৪,৭১২ বর্গমিটার পরিধির এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয় ৪৬ মিলিয়ন রিয়াল। মক্কার তৎকালীন মেয়র উসামা বিনি ফজল আল-বার বাওয়াবাত মক্কা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের প্রধান হিসেবে এর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ ৪৩ বছর পর মক্কার বিখ্যাত এই স্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণ ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু করেছে সউদি কর্তৃপক্ষ।
১৫২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩১ মিটার প্রস্থের দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনাটি রিইনফোর্সড কংক্রিট, প্লাস্টিক, কাচ, কাঠসহ বিভিন্ন উপাদান দিয়ে নির্মাণ করা হয়। চারলেন সড়কের দুই পাশে ৩০,৪৮ মিটার প্রস্থ ও ৩ মিটার উঁচু দুটি স্তম্ভ রয়েছে। দুই স্তম্ভের ওপর রয়েছে ৮০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৪৮,১৮ মিটার প্রস্থের দুটি ডানা, যা সড়কের ওপর ২৩ মিটার উচ্চতায় মিলিত হয়েছে।
তাতে খোলা কুরআনের ওপর ১৬.৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২৬ মিটার প্রস্থের দুটি পৃষ্ঠার আকৃতি রয়েছে। রাতের অন্ধকারে দর্শনার্থীদের মুগ্ধতা বাড়ায় গেটের দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জা। গেটের দুই পাশের দেওয়ালে রয়েছে নীল ও সবুজ কাচের জানালা। মক্কা গেট প্রকল্পের আওতায় রাস্তার দুই পাশে রয়েছে ছোট-বড় ঝোপঝাড়সহ অসংখ্য খেজুরগাছ।
৪২ বছর আগের স্মৃতিচারণা করে মক্কা গেটের ডিজাইনার জিয়া আজিজ বলেন, ‘রাজধানী কর্তৃপক্ষ যখন মক্কার প্রধান গেট তৈরির ঘোষণা দেয় তখন আমি মক্কার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ভাবতে শুরু করি। এরপর আমি নবী সা.র জন্মস্থান ও কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার বিষয়টি খুঁজে পাই। অতঃপর আমি কাঠের রেহালের নকশা করি যার ওপর রাখা হয় পবিত্র কুরআন।’