ডিভিসি জল ছাড়ার সংবাদ আগাম জানতে রাজ্য সরকারের তরফে গড়া হচ্ছে মনিটরিং কমিটি
- আপডেট : ৩১ মে ২০২৫, শনিবার
- / 230
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: প্রতি বছর দামোদর ভ্যালি করপোরেশনের ছাড়া জলে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাকে ‘ম্যানমেড’ বন্যা বলে থাকেন। গত বছর দামোদর ভ্যালি করপোরেশন দুই পর্যায়ে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ায় রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের বুকের ওপর দিয়ে ভুটানের ৭৬টি নদী বয়ে গিয়েছে। বর্ষাকালে ভুটানের এইসব নদী উপচে পড়ে গোটা উত্তরবঙ্গকে ভাসিয়ে দেয়। দু’টি প্রতিবেশীর সঙ্গে ইন্দো-বাংলাদেশ এবং ইন্দো-নেপাল রিভার কমিশন থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ইন্দো-ভুটান নদী কমিশনের দাবি কেন্দ্রের কাছে জানানো হলেও তা মঞ্জুর হয়নি।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিভিসির পক্ষ থেকেও ড্রেজিং করার জন্য কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বারবার বলা সত্ত্বেও। এর ফলে বর্ষা এলেই ভাসছে বাংলার উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গ। অথচ ঠিকমতো উদ্যোগ নিলে এই বানভাসি থেকে বাংলাকে রক্ষা করা যেত।
সম্প্রতি বাংলায় নিম্নচাপের কারণে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তার ওপর নজর রাখতে সেচ এবং জলশক্তি দফতরের মন্ত্রী, দফতরের প্রধান সচিব, ইঞ্জিনিয়াররা সজাগ ছিলেন। ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা হয়েছিল নিম্নচাপের কবলে থাকা জেলাগুলির জেলাশাসক, বিডিও, এসডিওদের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবারই ডিভিসি, দামোদর ভ্যালি রিভার রেগুলেশন কমিটি (ডিভিআরআরসি), সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সেচমন্ত্রী ও আধিকারিকরা। শুক্রবার সেচ ও জলশক্তি দফতরের মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা জানান, ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশের জল এসে বাংলার মুর্শিদাবাদ, মালদহে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। অথচ একে রোখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও মাথাব্যথা নেই।
বাংলার নদীগুলির ভাঙন রোধ করা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সু¨রবন, সাগর, উত্তরবঙ্গকে বন্যার হাত থেকে বাঁচানোর কোনও উদ্যোগই কেন্দ্রীয় সরকার নেয়নি। এবারের বাজেটে গোটা দেশের জন্য মাত্র ৪১২ কোটি বন্যা নিয়ন্ত্রণে বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। সেখান থেকে বাংলাকে একটা পয়সাও দেয়নি।
বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের দল একবারও এই রাজ্যে পা রাখেনি। মানস ভুঁইঞা বলেন, রাজ্যের বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য যতটুকু করার, তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই করেছেন। জেলা নেতৃত্ব, পঞ্চায়েত দফতরকে কাজে লাগিয়ে খাল কেটে নদীর জলোচ্ছ্বাস কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের টাকায় নদীর ড্রেজিং করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত করেও বাংলার বানভাসি আটকানো যাচ্ছে না।
এ বছর আগেই বর্ষা রাজ্যে ঢুকেছে। মন্ত্রী মানস ভূঁইঞা বলেন, বারবার আবেদন করা, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানানোর পরেও ডিভিসি ড্রেজিং করছে না। পলি পড়ে যাওয়ায় বাঁধের জলধারণ করার ক্ষমতা কমে গিয়েছে। এর ফলে একটু ভারী বৃষ্টি হলেই ডিভিসির ছাড়া জলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বাংলায়।
মানসবাবু বলেন, এখন থেকে একটি মনিটরিং কমিটি তৈরি করা হবে। যেখানে ডিভিসি, ডিভিআরআরসি-এর প্রতিনিধি, ফরাক্কার ব্যারেজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে। এই কমিটি প্রাক বর্ষার সময় থেকেই ডিভিসি কখন কীভাবে জল ছাড়ছে সেই বিষয়ে নজরদারি করবে।



































