পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আজ মাদার টেরেসার ১১২ তম জন্মশতবার্ষিকী, প্রার্থনা-শ্রদ্ধায় স্মরণ মানবজাতির সেবায় নিয়োজিত এই সমাজসেবিকাকে। নিজের কাজের মধ্যে দিয়েই তিনি সকলের কাছে মাদার রূপে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। কলকাতার মিশনারিজ অফ চ্যারিটিতে আজ তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
জাতি, ধর্ম, সাম্প্রদায়িকতার উর্ধে উঠে মানবজাতির সেবায় আমৃত্যু নিজেকে নিয়োজিত করেন মাদার। ১৯১০ সালের ২৬ অগাস্ট যুগশ্লোভিয়ার (অধুনা মেসিডোনিয়া) স্কোপিয়ে শহরে জন্মগ্রহণ করেন মাদার টেরেসা। নাম ছিল মেরি টেরেসা বোজাক্সিউ। পরে তিনি মাদার টেরেসা নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি ছিলেন তাঁর পিতা-মাতার কনিষ্ঠ সন্তান। ১৯১৯ সালে মাত্র ৮ বছর বয়সে তিনি পিতৃহারা হন। পিতার মৃত্যুর পরে তাঁর মা তাঁকে রোমান ক্যাথলিক আদর্শে লালন-পালন করেন।
ছোটবেলা থেকে তিনি ধর্ম সংক্রান্ত কাজকর্ম করতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন। মাত্র ১২ বছর বয়সেই তিনি ধর্মীয় সন্ন্যাস জীবন যাপনের সিদ্ধান্ত নেন। এর ঠিক ছয় বছর পরে ১৮ বছর বয়সে তিনি গৃহত্যাগ করেন এবং যোগ দেন সিস্টার অফ লরেটো সংস্থায়। ধর্ম প্রচারক হিসাবে কাজ শুরু করার পরে তাঁর আর কোনও মা ও দিদির সঙ্গে দেখা হয়নি। টেরেসা প্রথমে ইংরেজি ভাষার শিক্ষক হিসাবে কাজ শুরু করেন এবং এই শিক্ষকতার সূত্র ধরেই তিনি ভারতে আসেন। তবে শিক্ষকতা নয় মাদার টেরেসার ভারতে আগমনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল সমাজসেবা।
১৯৫০ সালে গঠিত হল “মিশনারিজ অফ চ্যারিটি”। মহামান্য পোপ তাঁকে দিলেন সানন্দ স্বীকৃতি।
১৯৫৪ সালে মহাতীর্থ কালীঘাটে স্থাপিত হল ‘নির্মল হৃদয়’- মুমূর্ষু সদন। মাদার টেরিজা ১৯৭১ এ শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কারে পুরস্কৃত হন যার অর্থ তিনি আর্তদের সেবায় উৎসর্গ করেছিলেন।
নোবেল ছাড়াও ১৯৬২ তে ‘পদ্মশ্রী’, ১৯৭২ এ ‘নেহেরু ‘পুরস্কার, ১৯৮০ তে ভারতরত্ন উপাধি এবং বিশ্বভারতীর ‘দেশিকোত্তম’ উপাধি পান। এছাড়া ম্যানিলা থেকে পেয়েছেন ‘ম্যাগসাইসাই’, ভ্যাটিকান সিটি থেকে ২৩-তম পোপ জন পুরস্কারে সম্মানিত হন । ৪ঠা সেপ্টেম্বর , ২০১৬ তে রোমের ভ্যাটিকান শহরে বিশ্বের বহু মানুষের উপস্থিতিতে পোপ মাদার টেরেসাকে ‘সন্ত’ হিসেবে ঘোষণা করেন।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১৯৯৭ সালের ১৩ মার্চ মিশনারিস অফ চ্যারিটির প্রধানের পদ থেকে সরে যান। ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ মৃত্যু হয় তাঁর।