০১ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউনানি চিকিৎসা জনসেবার মাধ্যম করা উচিত: মাসরুর আহমেদ খান

সুস্মিতা
  • আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, শুক্রবার
  • / 255

নয়াদিল্লি: শুধুমাত্র রোগের চিকিৎসায় নয়, শরীরকে সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখতেও ইউনানি ওষুধের ব্যবহার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতি বছর ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ইউনানি দিবস পালিত হয়। ইউনানি চিকিৎসা প্রথম প্রাচীন গ্রিসে উদ্ভূত হয়েছিল। কিন্তু আজমল খান ভারতে ইউনানি ওষুধের বিকাশ ও প্রসারের জন্য অনেক প্রচেষ্টা করেছিলেন এবং ইউনানি ওষুধের একটি পরিচয় দিয়েছিলেন । বর্তমানে এই চিকিৎসা পদ্ধতি ভারত, পাকিস্তান, পারস্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড-সহ অনেক দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে ।
ইউনানি হলো চিকিৎসা ব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর মাধ্যমে প্রতিবছর কোটি কোটি মানুষ বিভিন্ন রোগ থেকে আরগ্য লাভ করছে। আর বিশ্ব ইউনানি চিকিৎসা দিবস উপলক্ষে দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে অল ইন্ডিয়া ইউনানি কংগ্রেস কর্তৃক একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানটি সৈয়দ আহমেদ খানের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত হয়েছিল। সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিল “তিব্ব-ই-ইউনানী: সমস্যা ও সমাধান”, যেখানে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং ইউনানী চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেছিলেন।
এই অনুষ্ঠানে হাকিম আজমল খানের সেবার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয় এবং ইউনানি চিকিৎসার বর্তমান চ্যালেঞ্জ এবং তার সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয় এবং সারা দেশের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের সম্মানিতও করা হয়। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি তথা হাকিম আজমল খানের প্রপৌত্র মাসরুর আহমেদ খান বলেন যে,’ইউনানি চিকিৎসা একটি সেবার মাধ্যম; এটিকে অর্থ উপার্জনের মাধ্যম বানানো উচিত নয়।’ তিনি ইউনানি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ এবং ইউনানি ওষুধ কোম্পানির মালিকদের কাছে আবেদন করেন যে তারা এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে কেবল বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে বরং এটিকে জনসাধারণের সেবা হিসেবে গ্রহণ করুন। তিনি বলেন, ’আমাদের পূর্বপুরুষরা মানবতার সেবা করার জন্য ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেছিলেন। হাকিম আজমল খান কখনও এটিকে অর্থ উপার্জনের উপায় হিসেবে তৈরি করেননি, বরং এটিকে সমাজসেবা হিসেবে গড়ে তোলেন। আমাদেরও তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করা উচিত।’ তিনি আরও বলেন,’ ইউনানি চিকিৎসকদের উচিত আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সঙ্গে সমন্বয় করে এই পদ্ধতিকে আরও কার্যকর করা।’
এই উপলক্ষে, মোরাদাবাদের লোকসভার সাংসদ রোচি ভিরা বলেন, ’বর্তমানে ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতির প্রচারের প্রয়োজন অনেক বেশি। আমি এই চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য সম্ভাব্য সকল সহায়তা প্রদান করতে প্রস্তুত। সরকারের উচিত ইউনানি চিকিৎসার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করা যাতে এটি আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে এবং তারা এর থেকে উপকৃত হতে পারে।’
অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের লাতুরের সাংসদ ডাঃ শিবাজি বন্দপ্পা কাল্লাগে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে জানান যে, তিনি সংসদে ইউনানি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের সমস্যা উত্থাপন করতে সর্বদা প্রস্তুত এবং সংসদে ইউনানি চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়গুলি উত্থাপনের আশ্বাসও দেন তিনি। তিনি বলেন, ’যদি ইউনানি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা কোনও ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হন, তাহলে তাদের উচিত সমস্যাগুলি আমাদের জানানো। আমরা সংসদে এগুলি উত্থাপন করব।’

আরও পড়ুন: আয়ুর্বেদ ও ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতিকে কীভাবে রক্ষা করেছিলেন হাকিম আজমল খান?

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইউনানি চিকিৎসা জনসেবার মাধ্যম করা উচিত: মাসরুর আহমেদ খান

আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, শুক্রবার

নয়াদিল্লি: শুধুমাত্র রোগের চিকিৎসায় নয়, শরীরকে সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখতেও ইউনানি ওষুধের ব্যবহার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতি বছর ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ইউনানি দিবস পালিত হয়। ইউনানি চিকিৎসা প্রথম প্রাচীন গ্রিসে উদ্ভূত হয়েছিল। কিন্তু আজমল খান ভারতে ইউনানি ওষুধের বিকাশ ও প্রসারের জন্য অনেক প্রচেষ্টা করেছিলেন এবং ইউনানি ওষুধের একটি পরিচয় দিয়েছিলেন । বর্তমানে এই চিকিৎসা পদ্ধতি ভারত, পাকিস্তান, পারস্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড-সহ অনেক দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে ।
ইউনানি হলো চিকিৎসা ব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর মাধ্যমে প্রতিবছর কোটি কোটি মানুষ বিভিন্ন রোগ থেকে আরগ্য লাভ করছে। আর বিশ্ব ইউনানি চিকিৎসা দিবস উপলক্ষে দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে অল ইন্ডিয়া ইউনানি কংগ্রেস কর্তৃক একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানটি সৈয়দ আহমেদ খানের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত হয়েছিল। সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিল “তিব্ব-ই-ইউনানী: সমস্যা ও সমাধান”, যেখানে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং ইউনানী চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেছিলেন।
এই অনুষ্ঠানে হাকিম আজমল খানের সেবার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয় এবং ইউনানি চিকিৎসার বর্তমান চ্যালেঞ্জ এবং তার সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয় এবং সারা দেশের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের সম্মানিতও করা হয়। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি তথা হাকিম আজমল খানের প্রপৌত্র মাসরুর আহমেদ খান বলেন যে,’ইউনানি চিকিৎসা একটি সেবার মাধ্যম; এটিকে অর্থ উপার্জনের মাধ্যম বানানো উচিত নয়।’ তিনি ইউনানি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ এবং ইউনানি ওষুধ কোম্পানির মালিকদের কাছে আবেদন করেন যে তারা এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে কেবল বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে বরং এটিকে জনসাধারণের সেবা হিসেবে গ্রহণ করুন। তিনি বলেন, ’আমাদের পূর্বপুরুষরা মানবতার সেবা করার জন্য ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেছিলেন। হাকিম আজমল খান কখনও এটিকে অর্থ উপার্জনের উপায় হিসেবে তৈরি করেননি, বরং এটিকে সমাজসেবা হিসেবে গড়ে তোলেন। আমাদেরও তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করা উচিত।’ তিনি আরও বলেন,’ ইউনানি চিকিৎসকদের উচিত আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সঙ্গে সমন্বয় করে এই পদ্ধতিকে আরও কার্যকর করা।’
এই উপলক্ষে, মোরাদাবাদের লোকসভার সাংসদ রোচি ভিরা বলেন, ’বর্তমানে ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতির প্রচারের প্রয়োজন অনেক বেশি। আমি এই চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য সম্ভাব্য সকল সহায়তা প্রদান করতে প্রস্তুত। সরকারের উচিত ইউনানি চিকিৎসার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করা যাতে এটি আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে এবং তারা এর থেকে উপকৃত হতে পারে।’
অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের লাতুরের সাংসদ ডাঃ শিবাজি বন্দপ্পা কাল্লাগে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে জানান যে, তিনি সংসদে ইউনানি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের সমস্যা উত্থাপন করতে সর্বদা প্রস্তুত এবং সংসদে ইউনানি চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়গুলি উত্থাপনের আশ্বাসও দেন তিনি। তিনি বলেন, ’যদি ইউনানি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা কোনও ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হন, তাহলে তাদের উচিত সমস্যাগুলি আমাদের জানানো। আমরা সংসদে এগুলি উত্থাপন করব।’

আরও পড়ুন: আয়ুর্বেদ ও ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতিকে কীভাবে রক্ষা করেছিলেন হাকিম আজমল খান?