বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা হয়ে গেল রায়দীঘিতে

- আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৫, বুধবার
- / 158
উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,জয়নগর : সভ্যতা এগিয়েছে, শিক্ষা ও প্রযুক্তির গতিও অপ্রতিরোধ্য, তবু সামাজিক ব্যাধির ন্যায় বারংবার রাষ্ট্র ও সমাজকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে ‘বাল্য বিবাহ’। আঠারো বছর বয়সের পূর্বে অপরিণত ও অল্পবয়সী মেয়েদের বিবাহ রোধের অব্যর্থ নিরাময় সম্ভব নারী শিক্ষার সর্বাত্মক প্রসার ও সামাজিক ক্ষেত্রে নারীদের যথাযোগ্য প্রতিষ্ঠা লাভের মধ্য দিয়ে।
আর এই দুই ভূমিকাই দৃঢ়তার সাথে পালনে ব্রতী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সনামধন্য প্রকল্প ‘কন্যাশ্রী’ যা ইতিমধ্যেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে বহুল প্রশংসিত।মথুরাপুর ২ নং ব্লকের উদ্যোগে ও ব্লকের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুলিশ প্রশাসনের সদর্থক সহযোগিতায় বুধবার বাল্যবিবাহ রোধে কন্যাশ্রীএই সচেতনতামূলক শিবির অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মথুরাপুর পূর্ব চক্রের রায়দিঘি শ্রীফলতলা চন্দ্রকান্ত হাই স্কুলে।
এদিন এই শিবিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রায়দিঘি বিধানসভার বিধায়ক ডা: অলক জলদাতা, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মথুরাপুর ২নং ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষা, মথুরাপুর পূর্ব চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ডা: অর্পিতা দে, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক, পুলিশ প্রশাসন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন সোমা দাস, বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাগণ পরিচালন সমিতির সদস্যগণ, সকল ছাত্রীরা এবং তাদের অভিভাবক গণ।
ছাত্রী ও অভিভাবক গণের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই শিবির তার মূল উদ্দেশ্যসহ বিস্তারিত রূপ গ্রহণ করে। কন্যাশ্রীর শপথ বাক্য পাঠের মাধ্যমে অঙ্গীকারবদ্ধ হয় সকল ছাত্রীরা।এদিন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অর্পিতা দে বলেন, মথুরাপুর ২ নং ব্লকের পুলিশ ও স্বাস্থ্য প্রশাসনের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে যে, বেশ কিছু মেয়েরা যাঁরা এই ব্লকেরই শিক্ষার্থী তাঁরা অনেকেই ১৮ বছরের পূর্বে বিবাহ করে স্কুল বিমুখ হয়ে পড়েছে।
শুধু তাই নয়, ২০ বছর বয়সের পূর্বে তারা মাতৃত্বের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় চরম শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।যে সকল ঘটনাগুলি প্রশাসনের নজরে আসছে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর থেকে একমাত্র সমাধানের পথ কন্যা শিক্ষার্থীদের সঠিক সচেতনতা যা আসবে শিক্ষার আলোতে।
আগামী দিনে মথুরাপুর ২ নং ব্লকের সকল কন্যাসন্তান ও শিক্ষার্থীরা যাতে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুফল ভোগ করতে পারে এবং তার মাধ্যমে উচ্চশিক্ষাকে হাতিয়ার করে সামাজিক সকল ক্ষেত্রে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারে, এই প্রেরণাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। এছাড়াও স্কুলছুট ও দীর্ঘদিন অনুপস্থিত এমন শিক্ষার্থীদের চিহ্নিতকরণ ও যথাযথ ভাবে শিক্ষাঙ্গনে ফিরিয়ে এনে তাদের সুস্থ ভবিষ্যতের পথে চালনা করবার লক্ষ্যে আমাদের এই শিবির প্রতিনিয়ত কাজ করে চলবে।তাই প্রত্যেকটি বিদ্যালয় ও প্রশাসনের সর্বস্তরীয় সহযোগিতা আমাদের একান্ত কাম্য।