আল কায়দার যোগসূত্রে বেঙ্গালুরুর যুবতী গ্রেফতার, মোবাইলে পাকিস্তানি আধিকারিকদের নম্বর

- আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৫, বুধবার
- / 45
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের অভিযোগে বেঙ্গালুরুর যুবতী সামা পরভিন (বয়স ৩০)–কে গ্রেফতার করল গুজরাত অ্যান্টি টেরোরিস্ট স্কোয়াড (এটিএস)। অভিযুক্তের মোবাইল ফোনে মিলেছে পাকিস্তানের একাধিক পদস্থ আধিকারিকের নম্বর। তদন্তে উঠে আসছে বিস্ময়কর তথ্য। এই ঘটনায় দেশজুড়ে নড়েচড়ে বসেছে গোয়েন্দা মহল।
সামাকে গ্রেফতারের বিষয়ে গুজরাতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষ রমেশভাই সঙভি দাবি করেন, ওই মহিলা একজন মৌলবাদী, যিনি অনলাইনে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে আল কায়দা-যোগ সন্দেহে এটিএস পঞ্চম ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল।
এটিএস জানায়, তারা বেঙ্গালুরু গিয়ে সামাকে গ্রেফতার করেছে। তাঁর মোবাইলে পাকিস্তানের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নম্বর পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তিনি তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। ধৃত সামা মূলত ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। বিগত তিন বছর ধরে ভাইয়ের সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। তিনি আগে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন, যদিও বর্তমানে বেকার ছিলেন।
সামার গ্রেফতারিতে অবাক তার বেঙ্গালুরুর প্রতিবেশীরা। তাঁরা জানান, এই ছটফটে, সদালাপী যুবতীর বিরুদ্ধে এমন ভয়ানক অভিযোগ উঠবে, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি। তদন্তকারীদের দাবি, সামার যোগাযোগ ছিল একাধিক ‘বড় মাপের মৌলবাদী’র সঙ্গে। তিনি অনলাইনে সক্রিয় ভাবে চরমপন্থী কাজকর্ম চালাতেন।
সামার আগে যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন – মহম্মদ ফইক (দিল্লি), মহম্মদ ফরদিন (অহমদাবাদ), সইফুল্লা কুরেশি (মোদাসা), এবং জ়েশান আলি (নয়ডা)।
গুজরাত এটিএসের দাবি, এই পাঁচ জন মিলে আল কায়দার ভারতীয় নেটওয়ার্ক বিস্তারের কাজ করছিলেন। তাঁরা ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর ও চরমপন্থী ভিডিও পোস্ট করতেন, যাতে যুবসমাজকে প্রভাবিত করা যায়। এ জন্য ব্যবহার করা হত একাধিক ফেক বা বেনামি অ্যাকাউন্ট।
ধৃত ফরদিনের কাছ থেকে আল কায়দা ও নিষিদ্ধ মৌলবাদী সংগঠনের বইপত্র মিলেছে বলে দাবি করেছে এটিএস। এমনকি তাঁর কাছে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর বিরুদ্ধে আল কায়দার মতামত সংক্রান্ত গোপন নথিও পাওয়া গিয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, এই অভিযুক্তেরা সকলে সরকারবিরোধী কাজকর্মে লিপ্ত ছিলেন।
ধৃতদের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন (UAPA)-এর ১৩, ১৮, ৩৮ এবং ৩৯ ধারায় মামলা। পাশাপাশি, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর ১১৩, ১৫২, ১৯৬ ও ৬১ ধারাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আজ, বুধবার সামাকে আদালতে পেশ করা হচ্ছে। গোটা ঘটনায় জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। তদন্তে নজর রাখছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও।