০৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজনৈতিক স্বার্থ দেশের নিরাপত্তার চেয়ে বড় নয়, মালয়েশিয়ায় মন্তব্য অভিষেকের

সুস্মিতা
  • আপডেট : ১ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 65

উঠল পিওকে-এর প্রসঙ্গও

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভারতে জঙ্গি হামলা নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্য অভিষেক ব¨্যােপাধ্যায়-সহ ভারতীয় সংসদীয় প্রতিনিধিদলের পূর্ব এশিয়া সফর প্রায় শেষ হতে চলল। বিশ্বের দরবারে পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিতে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া হয়ে শেষ গন্তব্য মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালা লামপুরে রবিবার পৌঁছলেন অভিষেকরা।

বিদেশ সফরে প্রত্যেক দেশে গিয়ে অভিষেক যেভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এ দিনও তার ব্যতিক্রম হল না। অথচ ইতিমধ্যেই বাংলায় এসে মোদি-শাহ দু’জনেই শাসক দল তৃণমূলকেই নিশানা করছে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক যখন পূর্ব এশিয়ার পাঁচ দেশে গিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অভিযানের কথা তুলে ধরছেন, তখন বাংলায় এসে বিজেপি রটাচ্ছে অপারেশন সিঁদুর-এর বদনাম করছে তৃণমূল।

আরও পড়ুন: গুড ফ্রাইডেতে বার্তা মমতা-অভিষেকের

এই পরিস্থিতিতে রবিবার কুয়ালা লামপুরে বিজেপির নাম না করে জাতীয়তাবাদে তাদের নিরপেক্ষতার পাঠ দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, আমার রাজনৈতিক স্বার্থ কখনও দেশের জাতীয় নিরাপত্তার চেয়ে বড় হতে পারে না। ভারতের বিদেশনীতির ক্ষেত্রে বাংলা সবসময়ই কেন্দ্রীয় সরকারকেই সমর্থন করে। এ কথা বারবারই বলে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: সব ক্ষেত্রেই বিজেপির ষড়যন্ত্র: Abhishek Banerjee

এ দিন অভিষেকের কথাতেও সেই তত্ত্বই প্রতিষ্ঠিত হল। বিরোধী দলের সাংসদ হলেও রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠেই অভিষেক কেন্দ্রীয় সরকারেরই প্রশংসা করলেন বিদেশ সফরের প্রতিনিদিলের সদস্য হিসেবে। বিদেশের মাটিতে বত্তৃ«তায় বারবার ভারতের একতার চিত্র ফুটিয়ে তুললেন।

আরও পড়ুন: ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে উত্তাপের মাঝে শান্তির বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

এ দিন কুয়ালা লামপুরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রবাসীদের অনুরোধ করলেন, ভারত সফরে এলে বেশি সময় হাতে নিয়ে আসবেন। কাশ্মীরে অতিরিক্ত তিন-চারদিন সময় কাটিয়ে যাবেন। এতে কাশ্মীরের মানুষের আর্থিক উন্নতির পাশাপাশি দেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হবে বলেন অভিষেক। এভাবে ভারতীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য কুয়ালা লামপুরে আহ্বান জানান তিনি। অভিষেক বলেন, পাকিস্তান ভারতের অর্থনীতির ওপর আঘাত আনতে চেয়েছে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে। সন্ত্রাসবাদের মদতকারী দেশকে যে ভারত রেয়াত করবে না সেকথা জানিয়ে দেন।

রবিবার কুয়ালা লামপুরে সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে একাধিকবার কথা হয়েছে। গত পঞ্চাশ বছর ধরে শুধু কথাই হয়েছে। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ যে প্রশ্রয় দেয়, তার প্রমাণ পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিদের শেষকৃত্যে পাকিস্তানের সামরিক অফিসারদের অংশগ্রহণ। তবে এবার পহেলগাঁওতে যেভাবে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ধর্ম আর লিঙ্গভেদে নিরীহ পর্যটকদের খুন করা হয়েছে, এরপর যদি কোনও কথা বলতেই হয়, তাহলে সেটা শুধুমাত্র পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফেরানো নিয়েই হবে, অন্য কিছু নিয়ে নয়। অভিষেকের এই মন্তব্যের পরে গোটা প্রেক্ষাগৃহ হাততালিতে ফেটে পড়ে।

অভিষেক এ দিন কুয়ালা লামপুরবাসীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আপনাদের সন্তানদের ভারতীয় সংস্কৃতির পাঠ দিয়ে থাকেন, আপনাদের মাতৃভাষার সঙ্গেও ভারতের ভাষার অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। অভিষেকের এ দিন সন্ত্রাস দমনে ভারতের সঙ্গে মালয়েশিয়ার সহযোগিতার জন্য আবেদন রাখেন। অভিষেক ভারতের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরলেও বাংলায় এসে তৃণমূলকে বদনাম করতে ছাড়েননি মোদি-শাহ।

যার প্রত্যুত্তরে রবিবার কুয়ালা লামপুরে বৈঠকের পরে অভিষেক সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, বর্তমান শাসকদলের সঙ্গে আমার মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু এখানে আমি ভারতের প্রতিনিধি। আমার রাজনৈতিক স্বার্থ কখনও দেশের নিরাপত্তার চেয়ে বড় হতে পারে না। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে আমি আমার দেশের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াই।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাজনৈতিক স্বার্থ দেশের নিরাপত্তার চেয়ে বড় নয়, মালয়েশিয়ায় মন্তব্য অভিষেকের

আপডেট : ১ জুন ২০২৫, রবিবার

উঠল পিওকে-এর প্রসঙ্গও

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভারতে জঙ্গি হামলা নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্য অভিষেক ব¨্যােপাধ্যায়-সহ ভারতীয় সংসদীয় প্রতিনিধিদলের পূর্ব এশিয়া সফর প্রায় শেষ হতে চলল। বিশ্বের দরবারে পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিতে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া হয়ে শেষ গন্তব্য মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালা লামপুরে রবিবার পৌঁছলেন অভিষেকরা।

বিদেশ সফরে প্রত্যেক দেশে গিয়ে অভিষেক যেভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এ দিনও তার ব্যতিক্রম হল না। অথচ ইতিমধ্যেই বাংলায় এসে মোদি-শাহ দু’জনেই শাসক দল তৃণমূলকেই নিশানা করছে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক যখন পূর্ব এশিয়ার পাঁচ দেশে গিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অভিযানের কথা তুলে ধরছেন, তখন বাংলায় এসে বিজেপি রটাচ্ছে অপারেশন সিঁদুর-এর বদনাম করছে তৃণমূল।

আরও পড়ুন: গুড ফ্রাইডেতে বার্তা মমতা-অভিষেকের

এই পরিস্থিতিতে রবিবার কুয়ালা লামপুরে বিজেপির নাম না করে জাতীয়তাবাদে তাদের নিরপেক্ষতার পাঠ দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, আমার রাজনৈতিক স্বার্থ কখনও দেশের জাতীয় নিরাপত্তার চেয়ে বড় হতে পারে না। ভারতের বিদেশনীতির ক্ষেত্রে বাংলা সবসময়ই কেন্দ্রীয় সরকারকেই সমর্থন করে। এ কথা বারবারই বলে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: সব ক্ষেত্রেই বিজেপির ষড়যন্ত্র: Abhishek Banerjee

এ দিন অভিষেকের কথাতেও সেই তত্ত্বই প্রতিষ্ঠিত হল। বিরোধী দলের সাংসদ হলেও রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠেই অভিষেক কেন্দ্রীয় সরকারেরই প্রশংসা করলেন বিদেশ সফরের প্রতিনিদিলের সদস্য হিসেবে। বিদেশের মাটিতে বত্তৃ«তায় বারবার ভারতের একতার চিত্র ফুটিয়ে তুললেন।

আরও পড়ুন: ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে উত্তাপের মাঝে শান্তির বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

এ দিন কুয়ালা লামপুরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রবাসীদের অনুরোধ করলেন, ভারত সফরে এলে বেশি সময় হাতে নিয়ে আসবেন। কাশ্মীরে অতিরিক্ত তিন-চারদিন সময় কাটিয়ে যাবেন। এতে কাশ্মীরের মানুষের আর্থিক উন্নতির পাশাপাশি দেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হবে বলেন অভিষেক। এভাবে ভারতীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য কুয়ালা লামপুরে আহ্বান জানান তিনি। অভিষেক বলেন, পাকিস্তান ভারতের অর্থনীতির ওপর আঘাত আনতে চেয়েছে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে। সন্ত্রাসবাদের মদতকারী দেশকে যে ভারত রেয়াত করবে না সেকথা জানিয়ে দেন।

রবিবার কুয়ালা লামপুরে সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে একাধিকবার কথা হয়েছে। গত পঞ্চাশ বছর ধরে শুধু কথাই হয়েছে। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ যে প্রশ্রয় দেয়, তার প্রমাণ পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিদের শেষকৃত্যে পাকিস্তানের সামরিক অফিসারদের অংশগ্রহণ। তবে এবার পহেলগাঁওতে যেভাবে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ধর্ম আর লিঙ্গভেদে নিরীহ পর্যটকদের খুন করা হয়েছে, এরপর যদি কোনও কথা বলতেই হয়, তাহলে সেটা শুধুমাত্র পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফেরানো নিয়েই হবে, অন্য কিছু নিয়ে নয়। অভিষেকের এই মন্তব্যের পরে গোটা প্রেক্ষাগৃহ হাততালিতে ফেটে পড়ে।

অভিষেক এ দিন কুয়ালা লামপুরবাসীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আপনাদের সন্তানদের ভারতীয় সংস্কৃতির পাঠ দিয়ে থাকেন, আপনাদের মাতৃভাষার সঙ্গেও ভারতের ভাষার অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। অভিষেকের এ দিন সন্ত্রাস দমনে ভারতের সঙ্গে মালয়েশিয়ার সহযোগিতার জন্য আবেদন রাখেন। অভিষেক ভারতের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরলেও বাংলায় এসে তৃণমূলকে বদনাম করতে ছাড়েননি মোদি-শাহ।

যার প্রত্যুত্তরে রবিবার কুয়ালা লামপুরে বৈঠকের পরে অভিষেক সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, বর্তমান শাসকদলের সঙ্গে আমার মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু এখানে আমি ভারতের প্রতিনিধি। আমার রাজনৈতিক স্বার্থ কখনও দেশের নিরাপত্তার চেয়ে বড় হতে পারে না। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে আমি আমার দেশের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াই।