৩০ জুন ২০২৫, সোমবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিন্দুত্ববাদীদের আপত্তি, যোগী রাজ্যে ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা করে গ্রেফতার ৯

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ৯ মার্চ ২০২৫, রবিবার
  • / 114

লক্ষণই, ৯ মার্চ: মসজিদে স্পিকার ব্যবহার করায় ইমামসহ ৯ মুসলিমকে গ্রেফতার করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। রবিবার ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা করার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের রামপুরের একটি মসজিদের। প্রসঙ্গত, লাউডস্পিকার ব্যবহারের অভিযোগে লাগাতার অভিযান ও গ্রেফতারি জারি রেখেছে যোগী প্রশাসন। যদিও যোগী সরকারের এই পদক্ষেপকে ধর্মীয় স্বাধীনতা আঘাত বলেই মনে করছে মানবাধিকার কর্মীরা। অ্যাডভোকেট শারিক আনোয়ার বলেন, পুলিশের এই বিভেদমূলক পদক্ষেপ সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ এটি ধর্মীয় স্বাধীনতা হস্তক্ষেপ। আইনের চোখে সবাই সমান নীতি হুমকির মুখে পড়বে।

সূত্রের খবর, রবিবার মসজিদের মাইক থেকে ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা করা হচ্ছিল। সেই সময় স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা করাকে ঘৃণার প্রচার বলে অভিযোগ তোলে। এমনকি এলাকায় ‘নতুন ইসলামী আইন লাগু’ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে। এনিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিন্দুত্ববাদী সদস্যরা ইফতারের ঘোষণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে বহু মানুষকে জড়ো করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এসে মসজিদের মাইক খুলে ফেলে এবং ন’জন মুসলিম ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও রুজু করেছে যোগী পুলিশ। এবিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার অতুল কুমার শ্রীবাস্তব বলেন, “মসজিদে লাউডস্পিকারের মাধ্যমে ইফতারের ঘোষণা করার পর উত্তেজনা শুরু হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ওই ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”

আরও পড়ুন: কানওয়ার যাত্রা: দোকানদের কেউ মুসলিম কিনা জানতে পথে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি

জানা গিয়েছে, প্রায় ২০ বছর আগে রামপুরে মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। সেখানে প্রতিদিন ২০টি পরিবারের সদস্যরা নামায আদায় করেন। কোনওদিনই এমন উত্তেজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়। তাদের কথায়, ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা কোনও ধর্মীয় ঘোষণা নয়। এটি ইফতার করার একটি সাধারণ আহ্বান। এদিকে পুলিশি অভিযান ও গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় ইমাম মাওলানা রশিদ আহমেদ। তিনি বলেছেন, “নিদিষ্ট এক সম্প্রদায়কে টার্গেট করার স্পষ্ট উদাহরণ এটি। পবিত্র রমযান মাসে ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা বরাবরই হয়ে আসছে। কেনো আজকে এটিকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে?”

আরও পড়ুন: নাথুরাম গডসের ফাঁসির দিন ‘বলিদান দিবস’ হিসেবে পালন করল হিন্দুত্ববাদী সংঘটনগুলি, নিন্দায় সরব কংগ্রেস

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হিন্দুত্ববাদীদের আপত্তি, যোগী রাজ্যে ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা করে গ্রেফতার ৯

আপডেট : ৯ মার্চ ২০২৫, রবিবার

লক্ষণই, ৯ মার্চ: মসজিদে স্পিকার ব্যবহার করায় ইমামসহ ৯ মুসলিমকে গ্রেফতার করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। রবিবার ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা করার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের রামপুরের একটি মসজিদের। প্রসঙ্গত, লাউডস্পিকার ব্যবহারের অভিযোগে লাগাতার অভিযান ও গ্রেফতারি জারি রেখেছে যোগী প্রশাসন। যদিও যোগী সরকারের এই পদক্ষেপকে ধর্মীয় স্বাধীনতা আঘাত বলেই মনে করছে মানবাধিকার কর্মীরা। অ্যাডভোকেট শারিক আনোয়ার বলেন, পুলিশের এই বিভেদমূলক পদক্ষেপ সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ এটি ধর্মীয় স্বাধীনতা হস্তক্ষেপ। আইনের চোখে সবাই সমান নীতি হুমকির মুখে পড়বে।

সূত্রের খবর, রবিবার মসজিদের মাইক থেকে ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা করা হচ্ছিল। সেই সময় স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা করাকে ঘৃণার প্রচার বলে অভিযোগ তোলে। এমনকি এলাকায় ‘নতুন ইসলামী আইন লাগু’ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে। এনিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিন্দুত্ববাদী সদস্যরা ইফতারের ঘোষণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে বহু মানুষকে জড়ো করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এসে মসজিদের মাইক খুলে ফেলে এবং ন’জন মুসলিম ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও রুজু করেছে যোগী পুলিশ। এবিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার অতুল কুমার শ্রীবাস্তব বলেন, “মসজিদে লাউডস্পিকারের মাধ্যমে ইফতারের ঘোষণা করার পর উত্তেজনা শুরু হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ওই ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”

আরও পড়ুন: কানওয়ার যাত্রা: দোকানদের কেউ মুসলিম কিনা জানতে পথে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি

জানা গিয়েছে, প্রায় ২০ বছর আগে রামপুরে মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। সেখানে প্রতিদিন ২০টি পরিবারের সদস্যরা নামায আদায় করেন। কোনওদিনই এমন উত্তেজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়। তাদের কথায়, ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা কোনও ধর্মীয় ঘোষণা নয়। এটি ইফতার করার একটি সাধারণ আহ্বান। এদিকে পুলিশি অভিযান ও গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় ইমাম মাওলানা রশিদ আহমেদ। তিনি বলেছেন, “নিদিষ্ট এক সম্প্রদায়কে টার্গেট করার স্পষ্ট উদাহরণ এটি। পবিত্র রমযান মাসে ইফতারের সময়সূচি ঘোষণা বরাবরই হয়ে আসছে। কেনো আজকে এটিকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে?”

আরও পড়ুন: নাথুরাম গডসের ফাঁসির দিন ‘বলিদান দিবস’ হিসেবে পালন করল হিন্দুত্ববাদী সংঘটনগুলি, নিন্দায় সরব কংগ্রেস