সিডিএস-র স্বীকারোক্তির পর সংসদের বিশেষ অধিবেশনের দাবি

- আপডেট : ৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 99
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে ভারতের চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফস(সিডিএস) অনিল চৌহানের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠেছে। যেখানে ভারত সরকারের মন্ত্রীরা এবং সেনাপ্রধান পর্যন্ত অপারেশন সিঁদুর অভিযানে ভারতের কোনও ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করে আসছিলেন সেখানে সিডিএস স্বীকার করেছেন যে, ওই অভিযান চালানোর সময়ে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়ে ধ্বংস হয়েছে। অবশ্য ক’টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে বা কেউ মারা গিয়েছে কিনা তা স্পষ্ট করে বলেননি তিনি। বিরোধী দলগুলির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যে কোনও যুদ্ধে বা সেনা অভিযানে দু’ পক্ষেরই কিছু ক্ষতি হওয়া স্বাভাবিক। কারও বেশি হতে পারে, কোনও পক্ষের কম ক্ষতি হতে পারে। মনে রাখতে হবে, সমস্ত বিরোধী দল একবাক্যে এই অভিযানকে সমর্থন করেছিল। সেই অর্থে এই সেনা অভিযান ছিল পাকিস্তান বনাম গোটা ভারতের তরফে সেনা অভিযান। তাই অভিযানের খুঁটিনাটি জানার অধিকার রয়েছে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সব দলেরই। জেনারেল চৌহান বলেছেন, ট্যাক্টিক্যাল এরর( কৌশলগত ভুল) হয়েছিল এবং তা তৎক্ষনাৎ শুধরে নেওয়া হয়। এর আগে ভারতীয় বিমানবাহিনীর এয়ার অপারেশন এর অধিকর্তা এ কে ভার্তি স্বীকার করেছিলেন যে, কোনও সংঘাতে ক্ষতি হতেই পারে। তবে বিমানবাহিনীর সব পাইলট নিরাপদে দেশে ফিরে এসেছেন। তাঁর ব্যাখ্যার সঙ্গে মিলল না সিডিএস এর বিবৃতি। অপারেশন সিঁদুর এর তিন সপ্তাহ পর সিডিএস এর বিবৃতি স্পষ্ট করে দিল যে, কেন্দ্র এই অভিযানের মহত্ব প্রচার করা ছাড়া এই নিয়ে বিশদে কিছু বলতে নারাজ। সিডিএস এর বিলম্বিত স্বীকৃতির পর এখন সমাজমাধ্যমেও নানারকম বিরূপ মন্তব্য উঠে আসছে। এসব বাঞ্ছনীয় নয়। এই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে বিষয়টি খোলসা করার। যে কোনও যুদ্ধে র প্রকৃতি যেমনই হোক না কেন তা জাতীয় বিষয় হিসেবেই দেখা দরকার। অপারেশন সিঁদুর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে এই বিষয়ে টিভি-ভাষণ দিয়েছেন। সংসদ হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ গণতান্ত্রিক মঞ্চ। সেখানে এই বিষয়ে আলোচনা হলে সরকারের দায়বদ্ধতার প্রশ্নও উঠে আসবে। বিভিন্ন সূত্র মারফত যে সব টুকরো টুকরো খবর মিলছে, যা নিয়ে নানা জল্পনা ছড়াচ্ছে, তারও অবসান হবে সংসদ ডাকা হলে। কারণ গোটা দেশ এই অভিযানকে সমর্থন করেছে। সব দলের প্রতিনিধিরা বিদেশে গিয়ে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে ইন্ধনের বিপক্ষে সরব হয়ে প্রতিবাদ করেছেন। এমন তো নয়, এই নিয়ে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হলে তা বেনজির কাণ্ড হবে। আগেও এমন অধিবেশন হয়েছে। তাই অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।