ওড়িশায় কলেজ ছাত্রীর গায়ে আগুন দেওয়ার পর গুরুতর অবস্থা, ভুবনেশ্বর এমসে ৯৫% দগ্ধ নির্যাতিতা লাইফ সাপোর্টে

- আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, সোমবার
- / 208
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ওড়িশার বালেশ্বর জেলার ফকির মোহন কলেজে যৌন হেনস্থার শিকার এক ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করার পরে এখন ভুবনেশ্বর এমসে চিকিৎসাধীন, এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। এমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নির্যাতিতার শরীরের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে, এবং তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, তাঁর কিডনি ও শ্বাসযন্ত্র মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং ডায়ালিসিস চলছে।
ভুবনেশ্বর এমস সূত্রে জানা গেছে, নির্যাতিতার চিকিৎসায় দিল্লি এমসের বিশেষজ্ঞরা ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হচ্ছেন। একটি ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠিত হয়েছে, যেখানে কার্ডিয়োলজি, প্লাস্টিক সার্জারি, মেডিসিন সহ একাধিক বিভাগের চিকিৎসক রয়েছেন।
তাঁদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, তরুণীর শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা কম, এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও নজরে রাখা হচ্ছে। এক চিকিৎসক জানান, “তন্ত্রগুলি ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা সমস্তরকম চেষ্টা করছি।”
এই কলেজ ছাত্রী নিজের বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে। শনিবার কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবিও জানান তিনি। তবে অভিযোগের পরপরই কলেজ ক্যাম্পাসে নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই ছাত্রী।
ঘটনাস্থলে থাকা এক ছাত্র ছাত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন এবং তিনিও দগ্ধ হন। পরে দু’জনকেই জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, কিন্তু নির্যাতিতার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভুবনেশ্বর এমসে স্থানান্তর করা হয়।
এই ঘটনায় ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী ভুবন চরণ মাঝি রবিবার দিল্লি সফর সেরে ফিরে ভুবনেশ্বর এমসে নির্যাতিতাকে দেখতে যান। তিনি বলেন, ছাত্রীকে সমস্তরকম উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হবে এবং উচ্চশিক্ষা দফতরের রিপোর্টের ভিত্তিতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে বিরোধী দলনেতা নবীন পট্টনায়ক এই ঘটনায় রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। একইসঙ্গে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সোমবার ওড়িশা সফরকে কেন্দ্র করে BJD ও কংগ্রেস নেতারা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছেন।
এই যৌন নিগ্রহ ও আত্মহননের চেষ্টার ঘটনা রাজ্যজুড়ে শোক ও ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি করেছে। ভিকটিমের শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটজনক এবং চিকিৎসকদের মতে পরবর্তী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহলের কড়া নজর এখন এই ঘটনার উপরে।