ইউক্রেন দখলে বহুমুখী হামলার নির্দেশ পুতিনের

- আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২, রবিবার
- / 10
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও যুদ্ধ সক্ষমতা ইউক্রেনের চেয়ে ঢের বেশি। তাও এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এর কারণ অবশ্যই ইউক্রেনের কঠোর প্রতিরোধ। দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করছে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা। রাশিয়ার সঙ্গে রকম আপোসে যেতে নারাজ জেলেনস্কি সরকার। ক্রেমলিনের দাবি বেলারুশে আলোচনার টেবিলে বসার জন্য যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তা কিয়েভ নাকচ করে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, বেলারুশ বাদ দিয়ে ওয়ারশ্য, ব্রাতিস্লাভা, বুদাপেস্ট বা বাকুতে আলোচনা হতে পারে। তবে এখনও দুই পক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠকটি নিশ্চিত নয়। কূটনীতির মাধ্যমে এই সংকট সমাধান হবে কিনা তাও যথেষ্ট সন্দেহের বিষয়।
এদিকে কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে বহুমুখী হামলার নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন। এক বিবৃতিতে রাশিয়ার সেনার মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকোভ বলেন ‘বেলারুশে ইউক্রেন আলোচনার প্রস্তাব খারিজ দেওয়ায় পরিকল্পনা অনুযায়ী বাহিনীর সব বিভাগকে সব দিক থেকে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ তবে যুদ্ধের তৃতীয় ও চতুর্থ দিনে রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। রাজধানীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। কিন্ত এতে তারা ব্যর্থ হচ্ছে। এর আগে রাশিয়া দাবি করেছিল আতঙ্কে দেশ ত্যাগ করে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। কিন্তু আসলে এখনও ইউক্রেনেই রয়েছেন তিনি।
কিয়েভের পথে পথে ঘুরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলছেন। জানিয়েছেন কেউ পাশে থাকুক বা না থাকুন ইউক্রেন একাই এই যুদ্ধ করে যাবে। আত্মসমর্প করার তো প্রশ্নই নেই। মাটি কামড়ে পড়ে থেকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার এই কৌশলের প্রশংসা করছেন অনেকে। কারণ আকাশ স্থল ও জলপথে রাশিয়ার হামলা ঠেকিয়ে রাখা মুখের কথা নয়। যুদ্ধ থেকে ন্যাটো ও আমেরিকা পাশ কাটিয়ে গেলেও ইউক্রেনকে পরোক্ষভাবে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করার ঘোষণা করেছে ২৬টি পশ্চিমা দেশ। এদিকে যুদ্ধের চতুর্থ দিনে খারকিভ এবং রাজধানী কিয়েভে এলাকা দখলের যুদ্ধ অব্যাহত। দুই জায়গাতেই চলছে তীব্র লড়াই। রকেট হামলা চালিয়ে খারকিভে প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইন উড়িয়ে দিয়েছে রুশ সেনা।
অন্যদিকে কিয়েভের তেল ভান্ডারেও বিস্ফোরণ ঘটেছে। দক্ষিণপশ্চিমের মেলিতোপল শহর দখলে করার দাবি করেছে রুশ বাহিনী। কিয়েভ থেকে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণের একটি তেলের ডিপোতেও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া। এতে ডিপোটিতে আগুন ধরে যায়। উল্লেখ্য দুই পক্ষের যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২৪০ অসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে। এর মধ্যে নিহতের সংখ্যা ৬৪। রাষ্টÉসংঘের মানবিক কার্যক্রম সমন্বয়কারী সংস্থা এ তথ্য দিয়েছে। ইউক্রেনের দাবি উভয়পক্ষের মিলিয়ে কমপক্ষে ৩৭০০ সেনা নিহত হয়েছে। ইউক্রেন দাবি করেছে এর মধ্যে রাশিয়ার ৩৫০০ সেনা নিহত হয়েছে। রাশিয়ার নিহত সেনাদের লাশ উদ্ধার করে মস্কোয় ফেরত পাঠাতে রেডক্রসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন। রাষ্ট্রসংঘ বলছে এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ১.৫ লক্ষ নাগরিক ইউক্রেন ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছে।