০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডাক্তার হয়ে সেবা করতে চায় রাফাত

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 16

আলিয়া রাফাতকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন জেলাশাসক. রয়েছেন আসানসোলের এজি চার্চ স্কুলের প্রিন্সিপাল

পুবের কলম প্রতিবেদকঃ আইসিএসই বোর্ডের ২০২২-এর দশম শ্রেণির ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে রবিবার। এই পরীক্ষায় সর্বমোট ৫০০ নম্বরের মধ্যে ৪৯৮ অর্থাৎ ৯৯.৬০ শতাংশ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে প্রথম এবং সর্বভারতীয়র্ যাঙ্কে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে আসানসোলের অ্যাসেমব্লি অব গড চার্চ (এজি) স্কুলের ছাত্রী আলিয়া রাফাত। এমন সাফল্যে খুশির হাওয়া বইছে এলাকায়। খুশি রাফাতের পরিবারও।

 

মেধাবী রাফাত ভবিষ্যতে ভালো চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। পুবের কলম-কে রাফাত জানাচ্ছে, এ রাজ্যের গ্রামেগঞ্জে এখনও ভালো চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। ডাক্তারের সঙ্কট মেটানোর চেষ্টা অবশ্য রাজ্য সরকার করছে। সেই অভাব যাতে সামান্য হলেও দূর করা যায়, সেজন্য চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে রাফাতের। তাঁর কথায়, শহরে পড়াশোনা করব। তারপর গ্রামের সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে চাই। অনেকেই যখন ডাক্তার হয়ে শহরে থেকে আরামআয়েসে জীবনযাপন করতে চায়, তখন রাফাতের গ্রামে থাকার ইচ্ছে এক নজির।

রাফাত প্রথম থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি সার্জারি থেকে শুরু করে চিকিৎসাসংক্রান্ত বিভিন্ন ভিডিয়ো দেখত ইউটিউবে। এভাবেহ চিকিৎসক হওয়ার প্রবল উৎসাহ জন্মেছে তার। রাফাতের বাবা মুহাম্মদ আফসার আলম কুলটির প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। মা রিজওয়ানা খাতুন গৃহকর্ত্রী।

 

রাফাতের একটি ছোট ভাইও রয়েছে। এই সাফল্যে বাবা, মা এবং দাদি ফাতিমা খাতুনের সহযোগিতাও রয়েছে। বরাবরই সে ওই স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করত। মুহাম্মদ আফসার আলমের কথায়, প্রথম থেকেই রাফাত পড়াশোনায় ভালো। সেই সঙ্গে স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতা তাকে সাফল্য এনে দিয়েছে। আমরা একেবারেই মধ্যবিত্ত পরিবার। সে জায়গা থেকে আমার মেয়ের কখনই খুব বেশি চাহিদা ছিল না।

 

লকডাউনের সময়েই সে গৃহশিক্ষক নিয়েছিল। বিরাট কিছু করতে পারিনি মেয়ের জন্য। তাতেও এমন ফল করেছে। আল্লাহর মেহেরবানিতে ও আনন্দময় এক বার্তা বয়ে এনেছে আমাদের পরিবারে।

আসানসোলের ষষ্ঠনগরের ইসমাইলপুরের বাসিন্দা রাফাত জানিয়েছে, পড়াশোনায় ভালো ফল করতে হবে। সেই চেষ্টা বরাবরই ছিল। সব সময় নিজের উপর ভরসা রেখেছি। সেই সঙ্গে আল্লাহর উপর ভরসা রেখেছি। নিয়মিত পড়াশোনা ও হার্ডওয়ার্ক করে গিয়েছি। পড়াশোনার পাশাপাশি গল্পের বই পড়তে, ছবি আঁকতে ভালো লাগে তার।

 

তার কথায়, ‘আমি ইংরেজি মাধ্যমে পড়েছি, বাংলা বা অন্য মাধ্যমের ছেলেমেয়েরাও ভালো ফল করছে। তাই সাফল্যে কোনও মিডিয়াম বাধা হতে পারে না।’ রাফাত আরও জানিয়েছে, সিলেবাসের পড়া খুব ভালো করে পড়লে ভালো ফল করা যায়। স্কুলের সহযোগিতা পেয়েছি। গৃহশিক্ষকদেরও সহযোগিতা পেয়েছি।

 

পড়ার কোনও নির্দিষ্ট সময় ছিল না, যখন ইচ্ছে পড়তাম।তার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনা আসানসোলের অ্যাসেমব্লি অফ গড চার্চ স্কুল থেকে। ইতিমধ্যে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা দেওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করেছে রাফাত। এখন বার্ণপুরের রিভারসাইড স্কুলে ভর্তি হয়েছে সে। পাশাপাশি নিটের প্রস্তুতির জন্য দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা শুরু করেছে রাফাত। চিকিৎসক হওয়াই তার একমাত্র লক্ষ্য।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ডাক্তার হয়ে সেবা করতে চায় রাফাত

আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম প্রতিবেদকঃ আইসিএসই বোর্ডের ২০২২-এর দশম শ্রেণির ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে রবিবার। এই পরীক্ষায় সর্বমোট ৫০০ নম্বরের মধ্যে ৪৯৮ অর্থাৎ ৯৯.৬০ শতাংশ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে প্রথম এবং সর্বভারতীয়র্ যাঙ্কে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে আসানসোলের অ্যাসেমব্লি অব গড চার্চ (এজি) স্কুলের ছাত্রী আলিয়া রাফাত। এমন সাফল্যে খুশির হাওয়া বইছে এলাকায়। খুশি রাফাতের পরিবারও।

 

মেধাবী রাফাত ভবিষ্যতে ভালো চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। পুবের কলম-কে রাফাত জানাচ্ছে, এ রাজ্যের গ্রামেগঞ্জে এখনও ভালো চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। ডাক্তারের সঙ্কট মেটানোর চেষ্টা অবশ্য রাজ্য সরকার করছে। সেই অভাব যাতে সামান্য হলেও দূর করা যায়, সেজন্য চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে রাফাতের। তাঁর কথায়, শহরে পড়াশোনা করব। তারপর গ্রামের সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে চাই। অনেকেই যখন ডাক্তার হয়ে শহরে থেকে আরামআয়েসে জীবনযাপন করতে চায়, তখন রাফাতের গ্রামে থাকার ইচ্ছে এক নজির।

রাফাত প্রথম থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি সার্জারি থেকে শুরু করে চিকিৎসাসংক্রান্ত বিভিন্ন ভিডিয়ো দেখত ইউটিউবে। এভাবেহ চিকিৎসক হওয়ার প্রবল উৎসাহ জন্মেছে তার। রাফাতের বাবা মুহাম্মদ আফসার আলম কুলটির প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। মা রিজওয়ানা খাতুন গৃহকর্ত্রী।

 

রাফাতের একটি ছোট ভাইও রয়েছে। এই সাফল্যে বাবা, মা এবং দাদি ফাতিমা খাতুনের সহযোগিতাও রয়েছে। বরাবরই সে ওই স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করত। মুহাম্মদ আফসার আলমের কথায়, প্রথম থেকেই রাফাত পড়াশোনায় ভালো। সেই সঙ্গে স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতা তাকে সাফল্য এনে দিয়েছে। আমরা একেবারেই মধ্যবিত্ত পরিবার। সে জায়গা থেকে আমার মেয়ের কখনই খুব বেশি চাহিদা ছিল না।

 

লকডাউনের সময়েই সে গৃহশিক্ষক নিয়েছিল। বিরাট কিছু করতে পারিনি মেয়ের জন্য। তাতেও এমন ফল করেছে। আল্লাহর মেহেরবানিতে ও আনন্দময় এক বার্তা বয়ে এনেছে আমাদের পরিবারে।

আসানসোলের ষষ্ঠনগরের ইসমাইলপুরের বাসিন্দা রাফাত জানিয়েছে, পড়াশোনায় ভালো ফল করতে হবে। সেই চেষ্টা বরাবরই ছিল। সব সময় নিজের উপর ভরসা রেখেছি। সেই সঙ্গে আল্লাহর উপর ভরসা রেখেছি। নিয়মিত পড়াশোনা ও হার্ডওয়ার্ক করে গিয়েছি। পড়াশোনার পাশাপাশি গল্পের বই পড়তে, ছবি আঁকতে ভালো লাগে তার।

 

তার কথায়, ‘আমি ইংরেজি মাধ্যমে পড়েছি, বাংলা বা অন্য মাধ্যমের ছেলেমেয়েরাও ভালো ফল করছে। তাই সাফল্যে কোনও মিডিয়াম বাধা হতে পারে না।’ রাফাত আরও জানিয়েছে, সিলেবাসের পড়া খুব ভালো করে পড়লে ভালো ফল করা যায়। স্কুলের সহযোগিতা পেয়েছি। গৃহশিক্ষকদেরও সহযোগিতা পেয়েছি।

 

পড়ার কোনও নির্দিষ্ট সময় ছিল না, যখন ইচ্ছে পড়তাম।তার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনা আসানসোলের অ্যাসেমব্লি অফ গড চার্চ স্কুল থেকে। ইতিমধ্যে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা দেওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করেছে রাফাত। এখন বার্ণপুরের রিভারসাইড স্কুলে ভর্তি হয়েছে সে। পাশাপাশি নিটের প্রস্তুতির জন্য দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা শুরু করেছে রাফাত। চিকিৎসক হওয়াই তার একমাত্র লক্ষ্য।