০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নর্মদা নদীর তীরে বড় হওয়া সুশীল এখন নিজের পিৎজা স্টল চালাচ্ছেন

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার
  • / 17

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  ভোপালের বাসিন্দা সুশীল রাইকওয়াড এর  বয়স যখন ৫ বছর তখন তার মা মারা যান। দেড় বছর পর আমার বাবাও মারা যান। তিনি এতই ছোট ছিলেন যে বুঝতেই পারছিলেন না কী হচ্ছে। বাড়ির লোকজন জানায়, কোনো কঠিন রোগে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের নর্মদা নদীর ঘাটে খেলতে খেলতে বড় হয়েছে সুশীল । ৬ ভাইবোনের মধ্যে  ৫  নম্বর সুশীল । বলতে গেলে ৪ বোন ও এক বড় ভাই থাকলেও বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে অনাথের জীবন যাপন করেন তিনি।বর্তমানে সুশীল এর বয়স ২০-২২ বছর।

গত কয়েক মাস ধরে তার বন্ধু পুনম পালের সঙ্গে  ‘টম অ্যান্ড জেরি’ নামে একটি পিজা স্টল চালাচ্ছেন সুশীল। যা রীতিমতো সাড়া ফেলেছে। তবে তার এই পথ চলা সহজ ছিল না। তিনি বলেন যে, তার মা ও বাবা মারা গেলে তিনি তার বোনদের সঙ্গে থাকতে শুরু করে। শুরুতে মনে হয়েছিল এরাই আমার জন্য ঈশ্বর। দুই বোন চাকরি এবং স্পোর্টস অ্যাকাডেমিতে আছেন। কিন্তু তারপরেও ধীরধীরে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে তার জীবন।

প্রতিদিনই কটূক্তি শুনতে হতো। খাওয়ার কিছু ছিল না। অনেক রাত ক্ষুধার্ত পেটে ঘুমাতে হয়েছে। বোনেরা বাড়ির বাইরে থাকতেন, বছরে একবারই যেতেন। সুশীল বলেন,” আমি বলতে পারি যে আমি নর্মদা ঘাটের তীরেই বড় হয়েছি। স্কুলে যেতাম শুধুমাত্র খাবার খেতে। রাতে হোশাঙ্গাবাদের নর্মদা মন্দিরে লোকে যে প্রসাদ দিতেন আমি তা খেতাম। শুধু তাই নয়, তিনি ভগবানকে নিবেদন করা নারকেলও বিক্রি করতেন, যা থেকে ১০-১৫ টাকা জোগাড় হত।ঠাণ্ডার সময়ে তিনি বস্তা ঢেকে ঘুমাতেন, যাতে তার ঠান্ডা না লাগে। অতীতের স্মৃতিচারণ করতে করতেই সুশীল বলেন, ভোপালের একটি মোড়ে সুশীল প্রতিদিন একটি পিৎজা ভ্যান সেট করে। তার সঙ্গে যোগ দেয় তার বন্ধু পুনম পাল। তারা দুজনেই কেএফসিতে এবং স্টারবাকসে কাজ করত। কিন্তু খুব সামান্য টাকা পেত। আর সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের মতো করে কিছু করার কথা ভাবেন তারা।আর তারপরেই শুরু হয় নিজস্ব পিৎজা স্টল ।

এখন প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার টাকার বিক্রি হয় একগাল হেসে জানায় তরুণ সুশীল।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নর্মদা নদীর তীরে বড় হওয়া সুশীল এখন নিজের পিৎজা স্টল চালাচ্ছেন

আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  ভোপালের বাসিন্দা সুশীল রাইকওয়াড এর  বয়স যখন ৫ বছর তখন তার মা মারা যান। দেড় বছর পর আমার বাবাও মারা যান। তিনি এতই ছোট ছিলেন যে বুঝতেই পারছিলেন না কী হচ্ছে। বাড়ির লোকজন জানায়, কোনো কঠিন রোগে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের নর্মদা নদীর ঘাটে খেলতে খেলতে বড় হয়েছে সুশীল । ৬ ভাইবোনের মধ্যে  ৫  নম্বর সুশীল । বলতে গেলে ৪ বোন ও এক বড় ভাই থাকলেও বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে অনাথের জীবন যাপন করেন তিনি।বর্তমানে সুশীল এর বয়স ২০-২২ বছর।

গত কয়েক মাস ধরে তার বন্ধু পুনম পালের সঙ্গে  ‘টম অ্যান্ড জেরি’ নামে একটি পিজা স্টল চালাচ্ছেন সুশীল। যা রীতিমতো সাড়া ফেলেছে। তবে তার এই পথ চলা সহজ ছিল না। তিনি বলেন যে, তার মা ও বাবা মারা গেলে তিনি তার বোনদের সঙ্গে থাকতে শুরু করে। শুরুতে মনে হয়েছিল এরাই আমার জন্য ঈশ্বর। দুই বোন চাকরি এবং স্পোর্টস অ্যাকাডেমিতে আছেন। কিন্তু তারপরেও ধীরধীরে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে তার জীবন।

প্রতিদিনই কটূক্তি শুনতে হতো। খাওয়ার কিছু ছিল না। অনেক রাত ক্ষুধার্ত পেটে ঘুমাতে হয়েছে। বোনেরা বাড়ির বাইরে থাকতেন, বছরে একবারই যেতেন। সুশীল বলেন,” আমি বলতে পারি যে আমি নর্মদা ঘাটের তীরেই বড় হয়েছি। স্কুলে যেতাম শুধুমাত্র খাবার খেতে। রাতে হোশাঙ্গাবাদের নর্মদা মন্দিরে লোকে যে প্রসাদ দিতেন আমি তা খেতাম। শুধু তাই নয়, তিনি ভগবানকে নিবেদন করা নারকেলও বিক্রি করতেন, যা থেকে ১০-১৫ টাকা জোগাড় হত।ঠাণ্ডার সময়ে তিনি বস্তা ঢেকে ঘুমাতেন, যাতে তার ঠান্ডা না লাগে। অতীতের স্মৃতিচারণ করতে করতেই সুশীল বলেন, ভোপালের একটি মোড়ে সুশীল প্রতিদিন একটি পিৎজা ভ্যান সেট করে। তার সঙ্গে যোগ দেয় তার বন্ধু পুনম পাল। তারা দুজনেই কেএফসিতে এবং স্টারবাকসে কাজ করত। কিন্তু খুব সামান্য টাকা পেত। আর সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের মতো করে কিছু করার কথা ভাবেন তারা।আর তারপরেই শুরু হয় নিজস্ব পিৎজা স্টল ।

এখন প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার টাকার বিক্রি হয় একগাল হেসে জানায় তরুণ সুশীল।