০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পড়ুয়াদের উত্তরণের সোপান আল আমীন: বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, সোমবার
  • / 7

সূর্যপুরের আল-আমীন মিশনে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন মিশনের সাধারণ সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম। রয়েছেন আহমদ ইমরান, মহিউদ্দিন সরকার। ছবি-খালিদুর রহিম

আসাদুল ইসলাম:  তোমরা যারা আল-আমীন মিশনে পড়ছো তারা জীবনের উত্তরণের সোপানে পা রেখেছো। আল-আমীন মিশন নিষ্ঠার সঙ্গে তোমাদের প্রতিষ্ঠার পথ দেখাচ্ছে। তোমরা প্রতিষ্ঠিত হয়ে সমজকে কী দিলে ভাবতে হবে। আল-আমীন মিশনের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সূর্যপুর শাখায় অনুষ্ঠিত কৃতি সংবর্ধনা ও পুনর্মিলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কথাগুলি বলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ছাত্রদের উদ্দেশে আরও বলেন, আমাদের রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোমাদের মতো মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের ভিন রাজ্য ও বিদেশ থেকে ফিরে এসে রাজ্যে কাজ করার কথা বারবার বলছেন।

তাঁর উদ্দেশ্য, তোমরা রাজ্যে কাজ কর, রাজ্যকে সমৃদ্ধ কর। তিনি স্পিকার হিসেবে নিজের ও আইনসভার কাজের বিবরণ দেওয়ার সময় মবলিঞ্চিং ঠেকাতে রাজ্যের আনা বিলের কথা স্মরণ করিয়ে উল্লেখ করেন, প্রাক্তন রাজ্যপাল সেই বিল ফেলে রাখায় তা আইনে রূপ দেওয়া যায়নি। অন্য রাজ্য থেকে এ রাজ্যে সরকারি কলেজে ডাক্তারি পড়া ছাত্রছাত্রীরা যাতে কম করে তিন বছর পশ্চিমবাংলায় কাজ করে, সেই উদ্যোগ আদালতে গিয়ে আটকে যাওয়াকে দুঃখজনক বলে অভিহিত করেন। সমাজের কল্যাণের কথা ভেবেই ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজ-কল্যাণমুখী ভাবনা নিয়েই কন্যাশ্রী, লক্ষীভাণ্ডার সহ অনেক প্রকল্প এনেছেন, যাতে সমাজের সব অংশের উন্নয়ন হয়। তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি সমাজের মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে উন্নয়নের কাজে। আল-আমীন মিশন সেই কাজ করছে। সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশে শিক্ষা বিস্তারে মিশন যেভাবে কাজ করছে, তা দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ ও পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান। তিনি ছাত্রদের বলেন,অধ্যয়ন, প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি এই সমাজ ও দেশের কথা জানতে হবে তবেই এগিয়ে যেতে পারবে।

আমাদের এগিয়ে যেতে হবে মহানবী সা.র দেখানো পথে। ধনী দেশগুলিতে মানুষ প্রাচুর্য সত্ত্বেও অবসাদের শিকার, মানসিক রোগের শিকার, এইডস-এর মতো যৌন রোগের শিকার। আমেরিকায় আমরা প্রায় দেখি স্কুলে বা শপিংমলে ঢুকে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে কোনও কারণ ছাড়াই। অসুস্থ সমাজ তৈরি হয়েছে। ইসলাম সুস্থ সমাজ গড়ার দিশা দিয়েছে। মুসলমানরা কুরআনের প্রেরণায় অতীতে জ্ঞানবিজ্ঞানে সমস্ত শাখায় যুগান্তকারী কাজ করেছে। ইসলাম অনুসারীরা যেখানে গেছে সেখানেই মানুষকে সমৃদ্ধ করেছে। মুসলিমরা দুনিয়াকে দিতে এসেছে। আর দিয়েওছে।

তিনি উপস্থিত ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদেরকেও মানুষকে দিতে হবে। আমরা সাহায্যের চাওয়ার মধ্যে সীমিত থাকব না। মনে রেখ, যে হাতটা উপরে থাকে, সেটাই উত্তম। ইমরান সূর্যপুর মুহাম্মদ আলি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি গড়ে ওঠার পিছনে যাদের অবদান ছিল, মহিউদ্দীন সরকার-সহ তাঁদের কথা স্মরণ করেন।

আল-আমীন মিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম স্বাগত ভাষণ দিতে গিয়ে সূর্যপুর ক্যাম্পাস গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সূর্যপুর এম এ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক সাবেক  পুলিশ অফিসার মহিউদ্দিন সরকার ও পৃষ্ঠপোষক নাসিরুদ্দিন মণ্ডলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।  ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, পৃথিবীতে বহু মানুষ খেতে পায় না, থাকার জায়গা নেই। তোমরা ভালোভাবে পড়াশোনা করছ। ভালো থাকাটাকে স্থায়ীত্ব দিতে হলে দেশের জন্য, দুনিয়ার জন্য কাজ করতে হবে। তবেই আমরা দুনিয়া ও আখেরাতে ভালো থাকব।

ওই অনুষ্ঠানে অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডায়মন্ডহারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অধ্যাপক সাইয়েদুর রহমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ জয়ন্ত কুমার ভদ্র, বারুইপুর পুরসভার  ভাইস চেয়ারম্যান গৌতম কুমার দাস, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফারুক রহমান, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ মেহেদী কালাম সহ অনেকে। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাবন্ধিক ও সমাজসেবী মহিউদ্দিন সরকার।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পড়ুয়াদের উত্তরণের সোপান আল আমীন: বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়

আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, সোমবার

আসাদুল ইসলাম:  তোমরা যারা আল-আমীন মিশনে পড়ছো তারা জীবনের উত্তরণের সোপানে পা রেখেছো। আল-আমীন মিশন নিষ্ঠার সঙ্গে তোমাদের প্রতিষ্ঠার পথ দেখাচ্ছে। তোমরা প্রতিষ্ঠিত হয়ে সমজকে কী দিলে ভাবতে হবে। আল-আমীন মিশনের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সূর্যপুর শাখায় অনুষ্ঠিত কৃতি সংবর্ধনা ও পুনর্মিলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কথাগুলি বলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ছাত্রদের উদ্দেশে আরও বলেন, আমাদের রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোমাদের মতো মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের ভিন রাজ্য ও বিদেশ থেকে ফিরে এসে রাজ্যে কাজ করার কথা বারবার বলছেন।

তাঁর উদ্দেশ্য, তোমরা রাজ্যে কাজ কর, রাজ্যকে সমৃদ্ধ কর। তিনি স্পিকার হিসেবে নিজের ও আইনসভার কাজের বিবরণ দেওয়ার সময় মবলিঞ্চিং ঠেকাতে রাজ্যের আনা বিলের কথা স্মরণ করিয়ে উল্লেখ করেন, প্রাক্তন রাজ্যপাল সেই বিল ফেলে রাখায় তা আইনে রূপ দেওয়া যায়নি। অন্য রাজ্য থেকে এ রাজ্যে সরকারি কলেজে ডাক্তারি পড়া ছাত্রছাত্রীরা যাতে কম করে তিন বছর পশ্চিমবাংলায় কাজ করে, সেই উদ্যোগ আদালতে গিয়ে আটকে যাওয়াকে দুঃখজনক বলে অভিহিত করেন। সমাজের কল্যাণের কথা ভেবেই ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজ-কল্যাণমুখী ভাবনা নিয়েই কন্যাশ্রী, লক্ষীভাণ্ডার সহ অনেক প্রকল্প এনেছেন, যাতে সমাজের সব অংশের উন্নয়ন হয়। তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি সমাজের মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে উন্নয়নের কাজে। আল-আমীন মিশন সেই কাজ করছে। সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশে শিক্ষা বিস্তারে মিশন যেভাবে কাজ করছে, তা দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ ও পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান। তিনি ছাত্রদের বলেন,অধ্যয়ন, প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি এই সমাজ ও দেশের কথা জানতে হবে তবেই এগিয়ে যেতে পারবে।

আমাদের এগিয়ে যেতে হবে মহানবী সা.র দেখানো পথে। ধনী দেশগুলিতে মানুষ প্রাচুর্য সত্ত্বেও অবসাদের শিকার, মানসিক রোগের শিকার, এইডস-এর মতো যৌন রোগের শিকার। আমেরিকায় আমরা প্রায় দেখি স্কুলে বা শপিংমলে ঢুকে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে কোনও কারণ ছাড়াই। অসুস্থ সমাজ তৈরি হয়েছে। ইসলাম সুস্থ সমাজ গড়ার দিশা দিয়েছে। মুসলমানরা কুরআনের প্রেরণায় অতীতে জ্ঞানবিজ্ঞানে সমস্ত শাখায় যুগান্তকারী কাজ করেছে। ইসলাম অনুসারীরা যেখানে গেছে সেখানেই মানুষকে সমৃদ্ধ করেছে। মুসলিমরা দুনিয়াকে দিতে এসেছে। আর দিয়েওছে।

তিনি উপস্থিত ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদেরকেও মানুষকে দিতে হবে। আমরা সাহায্যের চাওয়ার মধ্যে সীমিত থাকব না। মনে রেখ, যে হাতটা উপরে থাকে, সেটাই উত্তম। ইমরান সূর্যপুর মুহাম্মদ আলি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি গড়ে ওঠার পিছনে যাদের অবদান ছিল, মহিউদ্দীন সরকার-সহ তাঁদের কথা স্মরণ করেন।

আল-আমীন মিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম স্বাগত ভাষণ দিতে গিয়ে সূর্যপুর ক্যাম্পাস গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সূর্যপুর এম এ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক সাবেক  পুলিশ অফিসার মহিউদ্দিন সরকার ও পৃষ্ঠপোষক নাসিরুদ্দিন মণ্ডলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।  ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, পৃথিবীতে বহু মানুষ খেতে পায় না, থাকার জায়গা নেই। তোমরা ভালোভাবে পড়াশোনা করছ। ভালো থাকাটাকে স্থায়ীত্ব দিতে হলে দেশের জন্য, দুনিয়ার জন্য কাজ করতে হবে। তবেই আমরা দুনিয়া ও আখেরাতে ভালো থাকব।

ওই অনুষ্ঠানে অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডায়মন্ডহারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অধ্যাপক সাইয়েদুর রহমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ জয়ন্ত কুমার ভদ্র, বারুইপুর পুরসভার  ভাইস চেয়ারম্যান গৌতম কুমার দাস, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফারুক রহমান, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ মেহেদী কালাম সহ অনেকে। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাবন্ধিক ও সমাজসেবী মহিউদ্দিন সরকার।