১০ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিলছে না ইউনিফর্মের টাকা, শীতে কাঁপতে কাঁপতে স্কুলে  আসছে যোগীরাজ্যের পড়ুয়ারা  

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার
  • / 104

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ উত্তরপ্রদেশে এখন চলছে বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকার। দোর্দণ্ডপ্রতাপ যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে সেখানে বিজেপির ‘সুশাসন’ চলছে। কখনও তারা বলেন, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও। কখনও বলেন, সবকা সাথ সবকা বিকাশ। কিন্তু বাস্তবের ছবি অন্যরকম। সম্প্রতি সেখানকার প্রাথমিক স্তরের স্কুলপড়ুয়াদের এক ভয়াবহ চিত্র  সামনে এসেছে। প্রচণ্ড হাড়কাঁপানো শীতেও শীতবস্ত্র পাচ্ছে না তারা। সরকারচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে পড়াশোনা করে দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা।

 

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা তকমা দিয়ে কারমাইকেল হস্টেলের আবাসিকদের উপর আক্রমণের অভিযোগ

তাদেরকে শীতবস্ত্র কিনে  দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন না অভিভাবকরা। এই পরিস্থিতিতে তারা শুধু সাধারণ শার্ট ও চপ্পল পরেই স্কুলে আসতে বাধ্য হচ্ছে  প্রচণ্ড শীতেও। যোগী সরকার জানিয়েছিল, ১১০০ টাকা করে সমস্ত পড়ুয়াদের অভিভাবকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে ইউনিফর্ম কেনার জন্য। এই টাকাতে কিনতে হবে শার্ট,  ট্রাউজার, সোয়েটার, জুতো, মোজা ও স্কুল ব্যাগ। এই ঘোষণায়  আশায় বুক বেঁধেছিলেন অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা।  কিন্তু মধ্য ডিসেম্বরেও টাকা আসেনি লক্ষ লক্ষ অ্যাকাউন্টে। শিক্ষা দফতরের রেকর্ড অনুযায়ী, ১ কোটি ৯১ লক্ষ ছাত্রছাত্রী  রাজ্যটির ১ লক্ষ ৩৫ হাজার প্রাইমারি স্কুলে (প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি) পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে মাত্র ৯০ হাজার পড়ুয়া এই টাকা পেয়েছেন।

আরও পড়ুন: অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য নিয়ে পাঠ দিতে হবে পড়ুয়াদের, নির্দেশ কেন্দ্রের

 

আরও পড়ুন: কন্ট্রাক্ট কিলার দিয়ে স্বামীকে খুন নববিবাহিত স্ত্রীর, ফের যোগী রাজ্যে নৃশংসতা

প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকদের জাতীয় সংগঠন রাষ্ট্রীয় শিক্ষক  মহাসংঘের জাতীয় মুখপাত্র বীরেন্দ্র মিশ্র এ ব্যাপারে  জানিয়েছেন, তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গিয়েছে। বহু পড়ুয়া শীতে কাঁপতে কাঁপতে স্কুলে আসছে। এদের বাবামায়েরা অধিকাংশই দিনমজুর। তাই তাদেরকে সোয়েটার কিনে দেবার সামর্থ্য নেই। এখন সরকার থেকে টাকাটা পেলে তারা এই শীতে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে পারত।

 

প্রশ্ন উঠছে, যোগী সরকার ঠিক কোন কারণে টাকা দেওয়ার ব্যাপারে গড়িমসি করছে? মিশ্র জানাচ্ছেন, এর মূল কারণ আধার কার্ড। অনেক ছাত্রেরই আধার কার্ড নেই। নয়তো  আধার তৈরির কাজ চলছে। এমন লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়েরা আধার কার্ড না থাকায় তারা বঞ্চিত হচ্ছে। তবে তিনি আরও জানাচ্ছেন, স্কুলের কাছে আধার নম্বর না থাকায় তারা ছাত্রছাত্রীদের টাকা দিচ্ছে না, এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ বেআইনি।

 

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের লঙ্ঘন। ২০১৮ সালে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছিল,স্কুলে ভর্তির সময় আধার আবশ্যিক নয়। এমনকি  কোনও শিশু এর জন্য কোনও স্কিমের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে  না। এই নির্দেশের পরেও ঠুনকো অজুহাত দিয়ে শিশুদের টাকা মেরে দিচ্ছে রাজ্য সরকার, উঠছে এমন অভিযোগ। এমনকি অনেকের আধার কার্ড থাকা সত্ত্বেও টাকা পাচ্ছে না। শিশুরা ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে। এদিকে বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে যোগী সরকার।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মিলছে না ইউনিফর্মের টাকা, শীতে কাঁপতে কাঁপতে স্কুলে  আসছে যোগীরাজ্যের পড়ুয়ারা  

আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ উত্তরপ্রদেশে এখন চলছে বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকার। দোর্দণ্ডপ্রতাপ যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে সেখানে বিজেপির ‘সুশাসন’ চলছে। কখনও তারা বলেন, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও। কখনও বলেন, সবকা সাথ সবকা বিকাশ। কিন্তু বাস্তবের ছবি অন্যরকম। সম্প্রতি সেখানকার প্রাথমিক স্তরের স্কুলপড়ুয়াদের এক ভয়াবহ চিত্র  সামনে এসেছে। প্রচণ্ড হাড়কাঁপানো শীতেও শীতবস্ত্র পাচ্ছে না তারা। সরকারচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে পড়াশোনা করে দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা।

 

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা তকমা দিয়ে কারমাইকেল হস্টেলের আবাসিকদের উপর আক্রমণের অভিযোগ

তাদেরকে শীতবস্ত্র কিনে  দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন না অভিভাবকরা। এই পরিস্থিতিতে তারা শুধু সাধারণ শার্ট ও চপ্পল পরেই স্কুলে আসতে বাধ্য হচ্ছে  প্রচণ্ড শীতেও। যোগী সরকার জানিয়েছিল, ১১০০ টাকা করে সমস্ত পড়ুয়াদের অভিভাবকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে ইউনিফর্ম কেনার জন্য। এই টাকাতে কিনতে হবে শার্ট,  ট্রাউজার, সোয়েটার, জুতো, মোজা ও স্কুল ব্যাগ। এই ঘোষণায়  আশায় বুক বেঁধেছিলেন অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা।  কিন্তু মধ্য ডিসেম্বরেও টাকা আসেনি লক্ষ লক্ষ অ্যাকাউন্টে। শিক্ষা দফতরের রেকর্ড অনুযায়ী, ১ কোটি ৯১ লক্ষ ছাত্রছাত্রী  রাজ্যটির ১ লক্ষ ৩৫ হাজার প্রাইমারি স্কুলে (প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি) পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে মাত্র ৯০ হাজার পড়ুয়া এই টাকা পেয়েছেন।

আরও পড়ুন: অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য নিয়ে পাঠ দিতে হবে পড়ুয়াদের, নির্দেশ কেন্দ্রের

 

আরও পড়ুন: কন্ট্রাক্ট কিলার দিয়ে স্বামীকে খুন নববিবাহিত স্ত্রীর, ফের যোগী রাজ্যে নৃশংসতা

প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকদের জাতীয় সংগঠন রাষ্ট্রীয় শিক্ষক  মহাসংঘের জাতীয় মুখপাত্র বীরেন্দ্র মিশ্র এ ব্যাপারে  জানিয়েছেন, তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গিয়েছে। বহু পড়ুয়া শীতে কাঁপতে কাঁপতে স্কুলে আসছে। এদের বাবামায়েরা অধিকাংশই দিনমজুর। তাই তাদেরকে সোয়েটার কিনে দেবার সামর্থ্য নেই। এখন সরকার থেকে টাকাটা পেলে তারা এই শীতে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে পারত।

 

প্রশ্ন উঠছে, যোগী সরকার ঠিক কোন কারণে টাকা দেওয়ার ব্যাপারে গড়িমসি করছে? মিশ্র জানাচ্ছেন, এর মূল কারণ আধার কার্ড। অনেক ছাত্রেরই আধার কার্ড নেই। নয়তো  আধার তৈরির কাজ চলছে। এমন লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়েরা আধার কার্ড না থাকায় তারা বঞ্চিত হচ্ছে। তবে তিনি আরও জানাচ্ছেন, স্কুলের কাছে আধার নম্বর না থাকায় তারা ছাত্রছাত্রীদের টাকা দিচ্ছে না, এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ বেআইনি।

 

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের লঙ্ঘন। ২০১৮ সালে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছিল,স্কুলে ভর্তির সময় আধার আবশ্যিক নয়। এমনকি  কোনও শিশু এর জন্য কোনও স্কিমের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে  না। এই নির্দেশের পরেও ঠুনকো অজুহাত দিয়ে শিশুদের টাকা মেরে দিচ্ছে রাজ্য সরকার, উঠছে এমন অভিযোগ। এমনকি অনেকের আধার কার্ড থাকা সত্ত্বেও টাকা পাচ্ছে না। শিশুরা ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে। এদিকে বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে যোগী সরকার।