বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য সুন্দরবনের নদীবাঁধ ভাঙছে, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ

- আপডেট : ২৮ মে ২০২৫, বুধবার
- / 249
কুতুব উদ্দিন মোল্লা, ক্যানিং: দেশের অন্যতম বড় সম্পদ বৃহত্তম ব-দ্বীপ সুন্দরবন।সুন্দরবনে অসংখ্য বন্যপ্রাণীর বসবাস, তেমনই এই বিশাল অরণ্য পরিবেশের ভারসাম্য অনেকটাই রক্ষা করে। সুন্দরবনের পরিবেশ দূষণে হতে পারে বড় বিপদ! পরিবেশবিদদের সেই আশঙ্কাকে এক প্রকার উড়িয়ে দিয়েই বৃহত্তম এই বাদাবনের বুক চিরে প্রতিদিন চলছে অসংখ্য আন্তর্জাতিক পণ্যবাহী জাহাজ।
যার ফলে ক্রমেই দূষিত হচ্ছে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশ। শুধু তাই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সুন্দরবনের অসংখ্য ছোট ও বড় নদীবাঁধও। এমনই অভিযোগে এবার সরব হয়েছেন সুন্দরবনবাসী। তাঁদের দাবি, সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হলে আন্তর্জাতিক এই জলপথের পরিবর্তন এবং নিয়ন্ত্রণ জরুরী। এই জলপথের উপর নজরদারি বাড়াতে হবে। সুন্দরবনবাসীদের দাবির সাথে সুর মিলিয়েছেন সুন্দরবনের জনপ্রতিনিধিরাও। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ অনিমেষ মণ্ডল এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।তিনি জানিয়েছেন, সুন্দরবনের বুক চিরে ভারত-বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক জলপথ দিয়ে দিনে শতাধিক বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ যাতায়াত করে। সুন্দরবনের নদীপথ পার হতে ওই জাহাজগুলোর দীর্ঘক্ষণ সময় লাগে। ফলে জাহাজের জ্বালানির ধোঁয়ায় সুন্দরবনের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এছাড়াও ওই সময় নদীতে জাহাজের বড় বড় ঢেউয়ের ধাক্কায় নদীবাঁধগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।
বহু জায়গায় নদীবাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। রাজ্য সরকারের তরফে বার বার সেই বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে। কিন্তু স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা না করলে আগামী দিনে সুন্দরবনকে রক্ষা করা কঠিন হবে। জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষের মতোই সুন্দরবন এলাকার দুই সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল এবং বাপি হালদার এই বিষয় নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁরা দিল্লির দরবারে লোকসভা অধিবেশনে এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
পণ্যবাহী বাংলাদেশি জাহাজ চলাচলের ফলেই সুন্দরবনের পরিবেশ ও নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি করা হয়েছে। অভিযোগ, একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন আয়লা, ফণী,বুলবুল ও আমফানের মতো ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেন্দ্র কোনও সাহায্য করছে না। ফলে সুন্দরবনের উপকূল এলাকার বাসিন্দারা বিপদের মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন।কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাঁরা দাবি করেন, দ্রুত বাঁধ মেরামতির পরিকল্পনা করে সুন্দরনের উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের রক্ষার ব্যবস্থা করুক সরকার। পাশাপাশি জাহাজ চলাচলের নিয়ন্ত্রণ করে সুন্দরবনের পরিবেশকেও রক্ষা করুক সরকার