০৫ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিলকিসের সেই ‘সংস্কারী ব্রাহ্মণ’ ধর্ষককে প্রার্থী করল বিজেপি

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২২, শনিবার
  • / 71

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: গুজরাতে প্রথম দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন হবে ৫ ডিসেম্বর। ভোট গণনা ৮ ডিসেম্বর।

বিলকিস বানুর ধর্ষকদের ‘সংস্কারী ব্রাহ্মণ’ বলেছিলেন গোধরার বিদায়ী বিধায়ক চন্দ্রসিংহ রাউলজি। বিধানসভা নির্বাচনে গোধরা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সেই চন্দ্রসিংহকেই ফের প্রার্থী করল বিজেপি।

আরও পড়ুন: Trinamool protest stage: গান্ধিমূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের মঞ্চ খুলছিল সেনা, খবর পেয়েই পৌঁছলেন মমতা

 

আরও পড়ুন: মোদির বিরুদ্ধে অপশব্দ ব্যবহারে বিতর্ক কংগ্রেস ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে

পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসের একরত্তি মেয়ে-সহ পরিবারের সাতজনকে তাঁর চোখের সামনেই খুন করা হয়। জামিনের পর জেলের বাইরে এই খুনি ও দর্শকদের মালা পরিয়ে বরণ করা হয়েছিল। গেরুয়া শিবিরের এই নির্লজ্জপনা নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল গোটা দেশে। বিলকিসের গণধর্ষকদের জামিন দেওয়া নিয়ে গুজরাত সরকার যে কমিটি গঠন করেছিল, তার সদস্য ছিলেন ধর্ষককে ‘সংস্কারী ব্রাহ্মণ’ ঠাহর করা বিজেপি বিধায়ক চন্দ্রসিংহ।

আরও পড়ুন: বাংলা ভাগের দাবিদারদের সঙ্গে শমীকের বৈঠক

 

যখন দেশজুড়ে বিলকিসের ধর্ষকদের বীরের মর্যাদা প্রদানের সমালোচনা করা হয়, তখনই এই খুনি ধর্ষকদের ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দিয়েছেন বিজেপি নেতা। চন্দ্রসিংহ ধর্ষকদের হয়ে বলেছিলেন, ‘ওরা সবাই ব্রাহ্মণ। আর ব্রাহ্মণদের ভালো সংস্কারবোধ থাকে। আমার মনে হয়, কেউ কোনও খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে ওই ১১ জনকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে।’

 

যিনি এমন মন্তব্য অবলীলায় করতে পারেন, নোংরা রাজনীতির জন্য বিবেকবোধ পর্যন্ত বিকিয়ে দিতে পারেন, তাঁকে গুজরাতে টিকিট দিতে বিজেপি বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি। তাঁকে এই টিকিট দিয়ে বিজেপি আসলে ভোটারদের কাছে দলের রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছে। বুঝিয়ে দিয়েছে গোটা দুনিয়া তাদের সমালোচনা করলেও দলের কিছু যায় আসে না।

 

বিজেপি গুজরাতে আগেও যে নীতি নিয়েছিল আজও সেই নীতিতেই অটল। নৈতিকতা কিংবা মানবিকতা নয়, এখনও হিন্দুত্ব, বিশেষ করে ব্রাহ্মণ্যবাদ তাদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।

চন্দ্রসিংহ এক সময় অবশ্য কংগ্রেস করতেন। ২০১৭ সালে গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপিতে যোগ দিয়েই টিকিট পেয়ে যান ছ’বারের এই বিধায়ক। ২০০২ সালে গুজরাতে গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার সময় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করে এই ১১ জন।

দোষীরা ছাড়া পাওয়ার পর বিলকিস গুজরাত সরকারের কাছে ‘ভয়মুক্ত হয়ে শান্তিতে বাঁচার’ আর্জি জানিয়েছিলেন। স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে দেওয়া ভাষণে মেয়েদের সম্মান ও তাদের ক্ষমতায়নের কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তারপরেই মুক্তি পায় বিলকিসের ধর্ষকরা।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বিলকিসের সেই ‘সংস্কারী ব্রাহ্মণ’ ধর্ষককে প্রার্থী করল বিজেপি

আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২২, শনিবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: গুজরাতে প্রথম দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন হবে ৫ ডিসেম্বর। ভোট গণনা ৮ ডিসেম্বর।

বিলকিস বানুর ধর্ষকদের ‘সংস্কারী ব্রাহ্মণ’ বলেছিলেন গোধরার বিদায়ী বিধায়ক চন্দ্রসিংহ রাউলজি। বিধানসভা নির্বাচনে গোধরা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সেই চন্দ্রসিংহকেই ফের প্রার্থী করল বিজেপি।

আরও পড়ুন: Trinamool protest stage: গান্ধিমূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের মঞ্চ খুলছিল সেনা, খবর পেয়েই পৌঁছলেন মমতা

 

আরও পড়ুন: মোদির বিরুদ্ধে অপশব্দ ব্যবহারে বিতর্ক কংগ্রেস ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে

পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসের একরত্তি মেয়ে-সহ পরিবারের সাতজনকে তাঁর চোখের সামনেই খুন করা হয়। জামিনের পর জেলের বাইরে এই খুনি ও দর্শকদের মালা পরিয়ে বরণ করা হয়েছিল। গেরুয়া শিবিরের এই নির্লজ্জপনা নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল গোটা দেশে। বিলকিসের গণধর্ষকদের জামিন দেওয়া নিয়ে গুজরাত সরকার যে কমিটি গঠন করেছিল, তার সদস্য ছিলেন ধর্ষককে ‘সংস্কারী ব্রাহ্মণ’ ঠাহর করা বিজেপি বিধায়ক চন্দ্রসিংহ।

আরও পড়ুন: বাংলা ভাগের দাবিদারদের সঙ্গে শমীকের বৈঠক

 

যখন দেশজুড়ে বিলকিসের ধর্ষকদের বীরের মর্যাদা প্রদানের সমালোচনা করা হয়, তখনই এই খুনি ধর্ষকদের ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দিয়েছেন বিজেপি নেতা। চন্দ্রসিংহ ধর্ষকদের হয়ে বলেছিলেন, ‘ওরা সবাই ব্রাহ্মণ। আর ব্রাহ্মণদের ভালো সংস্কারবোধ থাকে। আমার মনে হয়, কেউ কোনও খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে ওই ১১ জনকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে।’

 

যিনি এমন মন্তব্য অবলীলায় করতে পারেন, নোংরা রাজনীতির জন্য বিবেকবোধ পর্যন্ত বিকিয়ে দিতে পারেন, তাঁকে গুজরাতে টিকিট দিতে বিজেপি বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি। তাঁকে এই টিকিট দিয়ে বিজেপি আসলে ভোটারদের কাছে দলের রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছে। বুঝিয়ে দিয়েছে গোটা দুনিয়া তাদের সমালোচনা করলেও দলের কিছু যায় আসে না।

 

বিজেপি গুজরাতে আগেও যে নীতি নিয়েছিল আজও সেই নীতিতেই অটল। নৈতিকতা কিংবা মানবিকতা নয়, এখনও হিন্দুত্ব, বিশেষ করে ব্রাহ্মণ্যবাদ তাদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।

চন্দ্রসিংহ এক সময় অবশ্য কংগ্রেস করতেন। ২০১৭ সালে গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপিতে যোগ দিয়েই টিকিট পেয়ে যান ছ’বারের এই বিধায়ক। ২০০২ সালে গুজরাতে গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার সময় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করে এই ১১ জন।

দোষীরা ছাড়া পাওয়ার পর বিলকিস গুজরাত সরকারের কাছে ‘ভয়মুক্ত হয়ে শান্তিতে বাঁচার’ আর্জি জানিয়েছিলেন। স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে দেওয়া ভাষণে মেয়েদের সম্মান ও তাদের ক্ষমতায়নের কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তারপরেই মুক্তি পায় বিলকিসের ধর্ষকরা।